The Solar System : কীভাবে হবে সূর্যের মৃত্যু? বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

জগৎ সংসারের সকল প্রাণের উৎস আমাদের সূর্য। দিবাকরের কিরণে সমৃদ্ধ হয় গোটা জীবজগত( The Solar System )। কিন্তু হঠাৎ একদিন যদি উবে যায় আদিত্য? তখন আদৌ প্রাণরক্ষা হবে পৃথিবীর? সম্প্রতি সূর্যের মৃত্যুর দিনক্ষণ সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য হাতে এসেছে বিজ্ঞানীদের।
সূর্যের ধ্বংস হওয়ার ধরণ সম্বন্ধে আন্দাজ পেলেও সে মহাজাগতিক ঘটনা সচক্ষে দেখার জন্য অবশিষ্ট থাকবে না মানবসমাজ, সাফ বার্তা মহাকাশ গবেষকদের।
এতদিন মহাকাশ গবেষকদের তত্ত্ব অনুযায়ী এটা ধারণা ছিল যে, সূর্যের ধ্বংসের পর বিশালকায় নেবুলাতে রূপান্তরিত হবে সৌরজগৎ।
আজকের সকল গ্রহ-গ্রহাণু ভেঙে গিয়ে গ্যাসীয় কঠিন আকারে অবস্থান করবে অথবা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুরতে থাকবে। যদিও ২০১৮ সালে এক দল সৌরবিজ্ঞানীর গবেষণায় উঠে আসে অন্য তথ্য। নেবুলা নয়, নীহারিকায় পরিণত হবে সৌরজগৎ, মত গবেষকদলের।
সাম্প্রতিক গবেষণা মোতাবেক, আগামী ১০০০ কোটি বছর টিকে থাকবে সূর্য। ভাস্করের ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হবে অন্যান্য মহাজাগতিক ঘটনা। জানা যাচ্ছে, পরবর্তী ৫০০ কোটি বছরে ধীরে ধীরে লাল দৈত্যকৃতি নক্ষত্রে বদলে যাওয়ার পর ক্রমশ শক্তি হারিয়ে তা সাদা বামন নক্ষত্রে পরিণত হবে।
মহাকাশবিজ্ঞানীদের মতে, কেন্দ্র সঙ্কুচিত হয়ে সকল তাপ বিকরিত করে সকল ক্ষমতা হারাবে সূর্য। সূর্যের বহিঃস্তরগুলি শীতল হয়ে খন্ডবিখন্ড হয়ে পৌঁছাবে মঙ্গলের কক্ষপথে। আমাদের জন্মস্থল পৃথিবীও সূর্যের স্তরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে।
যদিও তার আগেই সূর্য দুর্বল হয়ে যাওয়ার ফলস্বরূপ বিলীন হয়ে যাবে চৌম্বক ক্ষেত্র, লোপ পাবে মাধ্যাকর্ষণ, ফলে মহাশূন্যে হারিয়ে যাবে জাগতিক সবকিছুই।
গবেষণাপত্রে এটা অন্তত স্পষ্ট যে, এ ধরিত্রীর বুকে মানুষের আয়ু আর মেরেকেটে ১০০০ কোটি বছর! প্রতি ১০০০ কোটি বছরে উত্তাপ প্রায় ১০% পাওয়াই যে সূর্যের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে, তা জানিয়েছেন গবেষকরা। সূর্য লুপ্ত হওয়ার আগেই নক্ষত্রের মারাত্মক তাপে জীবনশূন্য হয়ে পড়বে পৃথিবী! জলশূন্য মহাসাগর এবং উত্তপ্ত ভূমি প্রাণের প্রতিকূল হয়ে দাঁড়াবে।
কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করে ২০১৮ সালে সূর্যের জীবনসিম নির্ধারণ করেন গবেষকরা। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট জিলস্ট্রার মতে, “শেষ হওয়ার আগে এবং পরে, নক্ষত্র মহাকাশের সকল অঙ্গেই বড় প্রভাব রেখে যায়।” পাশাপাশি অ্যালবার্ট আরও জানান, “নক্ষত্র ধ্বংসের জেরে উৎপন্ন বিপুল ধুলোরাশি, পাথর এবং গ্যাস মহাকাশের সর্বত্র দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যা একটি গ্রহকে বিনাশ করতে যথেষ্ট।”
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত মহাকাশবিদদের মতে, সূর্য থেকে নির্গত ধুলো, গ্যাস এবং পাথরগুলি প্রায় ১০ হাজার বছর মহাকাশে ভাসমান অবস্থায় থেকে গঠিত করবে নীহারিকা। প্রায় হাজার বছর ধরে দৃশ্যমান হবে এই মহাজাগতিক ঘটনা। যদিও এহেন কল্পনাতীত ঘটনা প্রত্যক্ষ করার জন্য যে কেউই প্রায় অবশিষ্ট থাকবে না, তা সহজেই অনুমেয়।
মহাকাশে মূলত হেলিক্স নেবুলা, ক্যাটস আই নেবুলা, রিং নেবুলা এবং বুদ্বুদ নেবুলা এখনও পর্যন্ত প্রত্যক্ষ করতে পেরেছেন গবেষকরা। যদিও সূর্য সহ গোটা সৌরজগতের ভগ্নাংশে গঠিত নীহারিকা যে খুব একটা উজ্জ্বল হবে না, সে সম্বন্ধে তথ্যপ্রমাণ দিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।