Serial killer News : সিরিয়াল কিলারের ভূমিকায় নারী! কী কারণে করেছেন প্রচুর খুন! তা আজও অজানা!

নৃশংসতার দিক থেকে জ্যাক দ্য রিপারকেও হার মানিয়ে দিয়েছে এক রহস্যময়ী নারী। যার নাম কাউন্টেস এলিজাবেথ ব্যাথোরি ডি এক্সেড ওরফে এলিজাবেথ ব্যাথোরি। যিনি রক্তাক্ত পৈশাচিক নিষ্ঠুরতার অধ্যায়ের জন্য জায়গা করে নিয়েছেন ইতিহাসে। সিরিয়াল কিলিং এমন একটি বিষয়, যার সম্পর্কে জানতে মানুষের আগ্রহ প্রচুর। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরী হয়েছে প্রচুর সিনেমা। দেখা গেছে, সব সিরিয়াল কিলিং এর পিছনে থাকে অদ্ভুত মোটিভ। কিন্তু, এলিজাবেথ ব্যাথোরি খুন কেন করতেন, তা অজানা থেকে গেছে( Serial killer News )।
এলিজাবেথ ব্যাথোরির খুনের ধরন
এলিজাবেথ ব্যাথোরির খুনের ধরন যে কোন থ্রিলার সিনেমাকেও হার মানাতে পারে। নৃশংস ভাবে মারধোর করা, আগুনে পুড়িয়ে মারা, হাত-পা মুখ থেকে মাংস খুবলে নেওয়া, প্রচন্ড ঠান্ডায় রেখে বা অনাহারে রেখে হত্যা করা। জীবিত থাকাকালীন চলত নৃশংস অদ্যচার, যার মধ্যে মেয়েদের শরীরে ক্ষত করে তা সেলাই করে দেওয়া, গরম চাবুক মেরে পুড়িয়ে দিয়ে বরফ জলে ফেলে দেওয়া বা নোংহ করে করে গায়ে মধু ঢেলে দিয়ে তাতে পিঁপড়ে ছেড়ে দেওয়া। এমন অমানবিক অত্যাচারের জন্য অনেকেই ব্যাথেরীকে নরখাদকও বলে মনে করতেন। যেমনটা জানা যায় ১৫৯০ থেকে ১৬১০ এই দুই দশকের মধ্যেই ৬১০ জন মহিলাদের নৃশংসভাবে খুন করে ব্যাথোরি। কিন্তু বেছে বেছে কেন মেয়েদেরই খুন করতেন তিনি? এই রহস্য আজ উদ্ঘাটন করা যায়নি। তার খুনের তালিকায় থাকা বেশিভাগ মেয়েরাই ছিল গরিব পরিবারের কুমারী ও যুবতী মেয়েরা। ব্যাথেরীর প্রথম যে মহিলাকে খুন করেছিল তার বয়স ছিল মাত্র ১০-১৪ বছরের মধ্যে। বিশাল সংখ্যক খুনের কারণে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম উঠেছে ব্যাথেরীর। সর্বাধিক নারী খুনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এলিজাবেথ ব্যাথোরি।
এলিজাবেথ ব্যাথোরির জন্ম
মধ্যযুগে, হাঙ্গেরির এক অভিজাত পরিবারে এলিজাবেথ ব্যাথোরির জন্ম হয়। মাত্র ১০ বছর বয়সে ব্যাথোরির নাদাসি পরিবারের সদস্য কাউন্ট ফেরেঙ্ক নেদাসদির সাথে বাগদান হয়ে যায়। এরপর ১৫৭৫ সালে বিয়ে হয় দুজনের, বিয়ের সময় ব্যাথোরির বয়স ছিল ১৫ আর নেদাসির ১৯। ব্যাথোরিকে নেদাসি বিয়ের উপহার হিসাবে দিয়েছিল পারিবারিক সূত্রে পাওয়া ক্যাসেল অফ কাস্তে দুর্গটি। যার সাথে মিলেছিল ১৭ টি গ্রাম যা পরে ব্যাথোরির অধিকারে চলে আসে।বিয়ের পর ১৫৭৮ সালে হাঙ্গেরির সেনা প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন নেদাসদি। তিনি যুদ্ধে ব্যস্ত থাকায় ব্যাবসা থেকে বিষয় ও সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত্ব আসে ব্যথোরির উপরেই। ১৬০৪ সালে দীর্ঘদিনের অসুস্থতায় নেদাসদি মারা যান। এরপর শুধু ব্যাবসায়ীক বা সম্পত্তি নয় হাঙ্গেরিয়ান ও স্লোভাক মানুষদের দায়বদ্ধতা ও চিকিৎসার দায়িত্বও এসে পড়ে ব্যাথোরির উপর। আর এর পরেই চলতে থাকে তার পাশবিক ক্রিয়াকলাপ
ব্যাথোরির ক্রিয়াকলাপ ফাঁস
ব্যাথোরির ক্রিয়াকলাপ সামনে আসার পর লুথেরান মন্ত্রি ইস্তাভান ম্যাগ্যারি তার বিরুদ্ধে ভিয়েনার আদালতে অভিযোগ করেন। শেষ পর্যন্ত ১৬১০ সালে তদন্ত শুরু হয়। ওই বছর অক্টোবরের মধ্যে ৫২ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয় যা ১৬১১ তে যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০০ জন। ১৬১০ সালের ৩০ শে ডিসেম্বর ব্যাথোরি ও তার চার সহযোগীকে দুর্গ থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে আরও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রভাবশালী পরিবার ও ট্রান্সেলভেনিয়ার শাসক হওয়ার দরুন ব্যাথোরির মৃত্যুদন্ড মুকুব করা হয় এবং বদলে হয় তার আজীবন কারাবাস। সারাজীবন কারাবন্দি থাকার পর ৪৪ বছর বয়সে সে মারা যায়। ১৬১৪ সালের ২৫ নভেম্বর তাকে সিজেতে গির্জায় সমাধিস্থ করা হয়। তবে সেখানে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের ফলে তাকে এক্সেডে তার জন্মস্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। এইভাবেই ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন এই রহস্যময়ী নারী।
আরও পড়ুন : কেন বন্ধ হতে বসেছিল Visva-Bharati? গান্ধীজির সাহায্যে কিভাবে সঙ্কট দূর করেছিলেন কবিগুরু?