ভীড় ঠাঁসা গরম, অসুস্থতা নিয়েও শেষবারের মতো মঞ্চ মাতিয়েছিলেন কেকে! গেয়েছিলেন এই ২০টি গান

শিল্পীর সার্থকতা তার কাজেই। একজন শিল্পীর মৃত্যু হলেও সৃষ্টি কখনও হারিয়ে যায়না। আর গত কালকের পর, আমাদের প্লে লিস্ট, আর গুনগুনিয়ে করা গানেই বেঁচে থাকবেন এক প্রবাদপ্রতিম গায়ক৷ ছোট করে সারা বিশ্ব তাঁকে কে কে নামেই চেনে। গত মঙ্গলবার তলত্তমার নজরুল মঞ্চেই শেষবার ‘প্যাঁর কে পাল’ গেয়েছিলেন তিনি। আসলে তাঁর গানের কথাগুলিই যেন সত্যি হয়ে গেল, ‘রহেঁ ইয়া না রহেঁ কাল’। ঠিক যেন আজই তিনি নেই। কিন্তু ‘ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পাল’ অর্থাৎ তিনি থেকে যাবেন। গোটা ভারতবাসী, গোটা বিশ্ব তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে তাঁর গানের মধ্যে দিয়ে।

রাতে নজরুল মঞ্চে গাইতে গাইতে চলে গেলেন বলিউডের মনের মণিকোঠার এক অমূল্য রতন কে কে। মঙ্গলবার রাত থেকে তার ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে ‘প্যাঁর কে পাল’ গাইতে গাইতে বিদায় নিচ্ছেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে।

আরও পড়ুন- “অভিশাপের জেরেই মৃত্যু”, রূপঙ্করের মন্তব্য ঘিরে রাগে ফুঁসছে নেটদুনিয়া

একজন গায়কের গাওয়া গান যখন বিশ্ববিখ্যাত হয়, যখন তাঁর সামনের শ্রোতারা তাঁর সাথে সাথে গানের প্রত্যেক লাইন গেয়ে ওঠেন তখন শিল্পীর দায়িত্ব বাড়ে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই হয়ত সেদিন যতই শরীর খারাপ লাগুক না কেন, তিনি মঞ্চ কাঁপিয়েছেন।  লাইভ শো শেষে হোটেলে ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সূত্রের খবর, হোটেলে পড়ে গিয়ে চোটও পান। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় একবালপুরের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে কেকে-র।

কিন্তু এসবের মাঝেও যেটা পড়ে আছে তা হল তাঁর শেষ অনুষ্ঠানের গানের সূচী। সূচীর মধ্যে রয়েছে তাঁর জীবনের সেরা ২০। আর শরীর সাথ না দিলেও গলায় সুর চেপে গেয়ে গেছেন কেকে। কিন্তু এতসবের মাঝেও যা পরে রইল তা তাঁর অপার গানের ভাণ্ডার। যে গানগুলি গেয়ে তিনি চিরনিদ্রার পথে হেঁটেছিলেন রইল সেই প্লেলিস্ট।

১. তু আসিকি হ্যায় ( Tu Aashiqui Hai )- ‘ঝংকার বিটস’ নির্মিত বিশাল-শেখরের পরিচালিত এই গান ২০১৬ সালে প্রথম রিলিজ হয়েছিল। তারপর যতবারই ইয়ং জেনারেশন প্রেমে পড়েছে বেজে উঠেছে এই গান।

২. ক্যায় মুঝে ( Kya Mujhe Pyar ) – ‘ও লামহে’ ছবির গান। সংগীত পরিচালক প্রিতম পরিচালিত এই গান আজও মনে বেজে ওঠে।

৩. দিল ইবাদত ( Dil Ibaadat ) – ‘তুম মিলে’ সিনেমার এই গান একেবারে অমর। মন খারাপ থেকে ভাল সব আবেগই পরিষ্কার করে দেয় এই গান। এই গানেরও পরিচালনা করেছিলেন প্রীতম।

৪. মেরে বিনা ( Mere Bina ) –  ক্রুক সিনেমার এই গান চির অমর। প্রেমে পরে জগত ঘরতে থাকলেই মনে মনে বেজে ওঠে ‘মেরে বিনা ম্যা রাহনে লাগা হু’। এই গানেরও পরিচালক প্রীতম। 

৫. লাবো কো ( Labon Ko )- ভয় ভয় সিনেমায় রোমান্টিক গান। ‘ভুল্ভুলাইয়া’ সিনেমার এই রোমান্টিক গান যুগলদের আজো গলিয়ে দিতে পারে। আর তাঁর এই গানেরও পরিচালনায় ছিলেন প্রীতম।  

৬. তুহি মেরা সাব হাইন ( Tuhi Meri Shab Hai ) – মনে আছে সেই ‘গ্যাংস্টার’ ছবির কথা? কংগনা রানাউত, ইমরান হাসমি অভিনীত এই সিনেমায় ইমরানের মুখ-ভঙ্গিমায় ধরা পড়েছিল এই গান। এরও সংগীত পরিচালক প্রীতম। 

৭. আজাব সি ( Ajab Si) – ১১ বছর আগেকার একটি সুপারহিট সিনেমার সুপারহিট গান। কেকে র গলা আর শাহরুখের অভিনয়, সেই দৃশ্য কি আর ভোলায় যায়। এই গানের সংগীত পরিচালক ছিলেন বিশাল-শেখর।

৮. আভি আভি ( Abhi Abhi Toh Mile Ho ) – প্রেম ভেঙে গেলে যে গানগুলি মনের মধ্যে বাজতেই থাকে কখনই বন্ধ হয় না সেটি হল ‘ জিসম টু ’ সিনেমার আভি আভি। অর্কপ্রভ মুখার্জি পরিচালিত এই গান আজও একই ভাবে তাঁর মায়া বিস্তার করে চলেছে।

৯. এম পি ৩ ( Mera Pehla Pehla Pyar ) – প্রেমে পড়লেই যে গান মনে টিংটং বাজায়, তা হল এম পি ৩. প্যাহলা প্যাঁর না হলে যে প্রেমটাই শুরু হয় না।

 

১০. তুজো মিলা ( Tu Jo Mila )- বজরঙ্গি ভাইজানের এই গান নিশ্চয়ই আপনার চোখেও জল এনেছে। প্রীতম পরিচালিত এই গানের স্ক্রিনিংএ যখন সালমান মুন্নিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে তখন সামনে বসে থাকা দর্শকও গানের স্রোতেই ভেসে গেছিলেন।

১১. ইয়ারো – বন্ধুত্বের অমোঘ আকর্ষণে পরিসীল এই গান। কলেজে স্কুলে যখনই বন্ধুত্বের কথা উঠেছে মুখে মুখে ভেসে গেছে এই গানের সুর।  

১২. খুদা জানে ( Khuda Jaane )- বাচনা এ হাসিনো সিনেমার এই গান দিশহীনকে দিশা দেখায়। এই গানের পরিচালনা করেছেন বিশাল- শেখর। 

১৩. যারা সা ( Zara Sa ) – আপনি প্রেমে পড়েছেন আর এই গান শোনেননি এটা হতেই পারে না। এই গান আজও হাজার হাজার প্রেমের গল্প একাই শোনাতে পারে। এই গানের পরিচালনা করেছেন কে কে এঁর সবচেয়ে পছন্দের মিউজিক ডিরেক্টর প্রীতম।

 

১৪. আশায়ে ( Aashayein )- জীবনের পথ যখন অস্বচ্ছ হয়ে যায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে ভেসে আসে এই গান।, মনে জাগায় আশা, দেখায় ফিরে চলার রাস্তা।  এই গানের সংগীত পরিচালনা করেছিলেন ‘সেলিম-সুলেমান’।

১৫. ডন ( Don )-  এক ছিল অমিতাভের ডন, তারপর শাহরুখের। আর মডার্ন ডনের টাইটেল ট্রাকে গলা দিয়েছিলেন কেকে। এঁর সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব ছিল ‘শঙ্কর-এহসান-লয়’। 

১৬. তুনে মারি এন্ট্রি (Tune Maari Entriyaan )- নাম শুনেই মনটা নেচে উঠল, তাই কিনা? বাপি লাহিড়ীর নির্দেশনায় গুন্ডে  সিনেমার এই গান একেবারে পা স্থির রাখতে দেয় না। 

১৭. দেশি বয়েজ ( Make Some Noise For Desi Boyz ) – আওয়াজ কি হল! দেশি বয়েজ সিনেমার টাইটেল ট্রাক, যা আপনাকে নাচতে মাতিয়ে দিতে একমুহুর্তও দেরী করে না। এই গানেরও সংগীত পরিচালক প্রীতম।  

১৮. ডিস্কো ( It’s the Time to Disco )- কাল হো না হো সিনেমার এই গান আজও মনকে নাচিয়ে দিয়ে যায়। শাহরুক, সেইফ আর প্রীতির মত নেচে উঠি আমরাও।

 

১৯. কোই ক্যাহে (Koi Kahe Kehta Rahe )-  দিল যাহতা হে সিনেমার এই গানও সমাজের এই বাধনকে ছিন্ন করে নেচে হেসে খেলে বেড়ানোর কথা বলে। কেকের এই গানে সব বাধন ছেড়ে শ্রোতা উড়তে যায়। এই গানের সংগীত পরিচালক ‘শঙ্কর-এহসান-লয়’। 

২০. পাল (Pyaar Ke Pal )-  সম্পর্কের বিদায়, ভালবাসার বিদায়, বিদায় মুহূর্তের। আর তখনই চোখে একবিন্দু বিন্দু জল নিয়ে মন থেকে বেড়িয়ে পড়ে ‘ইয়েহ হে প্যায়ার কা পল’। চোখের জলেই কলকাতায় পল গেয়েছিলেন কেকে। তিনি বলেছিলেন, ‘ আ মেরে সাঙ্গ চাল’। আজ না জানার দেশে তাঁর সাথে যাওয়া হল না কিন্তু তাঁর গানে তাঁর সাথে হেটে বেড়াই আমরা, তাঁর ভক্তরা। কেকে অমর!

আরও পড়ুন- হুলুস্থুল পড়ল গাঁটছড়ার সেটে! ঋদ্ধি-খড়ির হাতেই থাপ্পড় খেল রাহুল, ভাইরাল ভিডিও




Leave a Reply

Back to top button