খাওয়া থেকে চিকিৎসা নিজেই করান, প্রাণ বাঁচিয়ে বানরকে বনদপ্তরের হাতে তুলে নজির গড়ল মোহাম্মদ

জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর! লোকে বলে কলিযুগের সঙ্গে মানুষ হারিয়েছে মানবিকতা, হয়েছে পাশবিক। কিন্তু গোটা সমাজে এখনও অল্প কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা আজও অন্যের কথা ভাবে। ভাবে কিছু অবলা প্রাণের কথা। আর তাঁদের মধ্যে দিয়েই এই সমাজে বেঁচে আছে মানবিকতা, বেঁচে আছে আন্তরিকতা। সেই কারণেই হয় তো রাস্তায় আহত একটি বাঁদর কে উদ্ধার করে নিজের ঘরে নিয়ে এসে, সেবা শুশ্রূষা করে, চিকিৎসা করে, বনদপ্তর কে ডেকে তাদের হাতে তুলে দিলেন শিলিগুড়ি মহকুমা নকশালবাড়ির মোহাম্মদ আইবুল। তাঁর এই কর্মকাণ্ডে খুশি বন বিভাগ।
মোহাম্মদ আইবুল জানান, কিছুদিন আগে জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বেরিয়ে আসে এই বানরটি । রাস্তায় চলাচল করার সময় এশিয়ান হাইওয়েতে দুর্ঘটনায় আহত হয়। খবর পেয়ে ছুটে যান মোহাম্মদ। স্থানীয়দের সহযোগিতায় বানরটিকে উদ্ধার করেন তিনি। বেশ কয়েকদিন নিজের কাছেই বানরটিকে রেখেছিলেন তিনি। খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসা সম্পূর্ণ হলে বন্য প্রাণীটিকে ছেড়ে আসেন বনে। কিন্তু আবার জঙ্গল থেকে এসে বিভিন্ন এলাকায় দোকানে ও বাড়িতে দাপিয়ে বেড়াতে শুর করে বানরটি। এরপর বানরটিকে আবার নিজের কাছে এনে কিছুদিন রাখেন তিনি। খবর দেন বনদপ্তর কর্মীদের। খবর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বনদপ্তর এসে বানরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেঙ্গল সাফারি পার্কে ছেড়ে দেওয়া হবে বানরটিকে। আপাতত তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। যাকে নিয়ে এত আলোচনা সেই মহন্মদ আইবুল জানিয়েছেন, “ওই বানরটিকে দেখে আমার প্রচণ্ড মায়া হয়েছিল, তাই কোন দিক না ভেবে ওই বানরটির চিকিৎসা করতে নেমে পড়েছিলাম।শত হলেও ওরা জীব ওদেরও শরীরে প্রাণ আছে,এবং ওদেরও কষ্ট হয়।” একজন মুসলমান যুবকের একটি বাদরের উপরে দয়া দেখে গর্বিত ওই এলাকার মানুষ,তারা জানিয়েছেন, ও আমাদের গর্ব।