বাংলায় টাকা কামিয়ে বাংলা ভাষাকেই অসম্মান! এ কোন পথে যাচ্ছে বাংলা টেলিভিশন, দায় কার

মন্টি শীল, কলকাতা : ধারাবাহিক, অর্থাৎ টেলিভিশন দর্শকদের কাছে বিনোদনের এক অন্যতম দুনিয়া। সাধারণত সমগ্র বাংলা টেলিভিশনের দর্শক মহলের কাছে এক অন্যতম পছন্দসই বিনোদনের জগৎ হিসেবে পরিচিত এই বাংলা ধারাবাহিক (Bengali serial)। সাধারণত এই ধারাবাহিক বিভিন্ন টেলিভিশনের পর্দায়, বিভিন্ন রকমের গল্পের ঝুলি নিয়ে সম্প্রচারিত হয়। যার মধ্যে এমন কিছু কিছু ধারাবাহিক রয়েছে যেগুলো রীতিমতো দর্শক মহলের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে, আবার এমনও কিছু কিছু ধারাবাহিক রয়েছে যেগুলো দর্শকদের কাছে রীতিমতো অপছন্দের। যার অন্যতম কারণ হল, গল্পের একঘেয়েমি।
তবে এই গল্পের একঘেয়েমির সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি জিনিস ইদানিং কালে ভীষণ ভাবে লক্ষ্য করা গিয়েছে, আর সেটা হল বাংলা ভাষার প্রতি অসম্মান। যে ধারাবাহিকের উপর নির্ভর করে আপামোর টেলিভিশন দর্শক মহল মনোরঞ্জন করছেন, তার মধ্যেই বাংলা ভাষার প্রতি যত্নের অভাব আশঙ্কাজনক জনক ভাবে স্পষ্ট। আর এই অবহেলা লক্ষ্য করা গিয়েছে জি বাংলা (Zee bangla) স্টার জলসা (Star Jalsha) সহ একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলে। কিন্তু সমস্যা থাকা সত্তেও এতদিন এই বিষয় নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেননি। এমনকি কেউই মূল সমস্যার কারণ জানতে চাননি।
তবে কি বিনোদনের নেশায় মগ্ন হয়ে ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা ক্রমশ হারিয়ে ফেলতে চলেছি আমরা? সাধারণত টেলিভিশনের পর্দায় এই বাংলা ধারাবাহিক খুললেই কানে ভেসে আসে এমন সমস্ত শদ্ব, যা শোনার পর মনে হয় ঠিক যেন এক অদৃশ্য যাদু বলে হিন্দি ভাষার বাংলা সংস্করণ হয়ে উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যখন কোনও চরিত্র অপর কোনও চরিত্রের দিকে কাজের কোন কারণ জিজ্ঞেস করে তখন তারকাদের বলতে শোনা যায় ‘কেন কি’ যার হিন্দি ভাষার সংস্করণ হচ্ছে ‘কিঁউ কি’?
আবার কখনও কখনও কোন ধারাবাহিকের চরিত্রকে টেলিভিশনের পর্দায় বলতে শোনা যায় ‘আমাকে বলতে পারতি!’ এই ‘পারতি’ শদ্বটির মূল উচ্চারণ হল ‘পারতিস’। অর্থাৎ এই শদ্বটি থেকে ‘স’ লুপ্ত হয়ে গিয়েছে। বিশিষ্ট মহলে যা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তাদের প্রশ্ন, ভাষার প্রতি হওয়া এই অসম্মানের দায়ভার কে গ্রহণ করবেন? কারণ বিনোদন জগতের একাধিক বড় মাপের শিল্পীরা এই ভুল করে চলেছেন। এমনকি ধারাবাহিকের সংলাপের সঙ্গে সঙ্গে টেলিভিশনের পর্দায় সাবটাইটেল রূপে যে সংলাপ ভেসে ওঠে তার মধ্যেও এই ধরনের একাধিক ভাষাগত ভূল লক্ষ্য করা যায়। আর এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চ্যানেল কর্তৃপক্ষের তরফে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। কারণ এই ধারাবাহিকই দর্শক মহলের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম, আর এর দ্বারা দর্শক মহলের কাছে ভুল বার্তা পৌছে যাক তা একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়।