Biplab Chatterjee: “ন্যাকামিতে ভরা নায়ক-নায়িকা!” কাজ না পেয়ে কি মাথা গেছে বিপ্লব চ্যাটার্জীর? প্রশ্ন নেটিজেনদের

অহেলিকা দও, কলকাতা : দেখতে দেখতে চলে এলো জন্মদিন, আরও একবছর পার করে ফেললেন বিপ্লব চ্যাটার্জী ( Biplab Chatterjee )। টলিপাড়ার বিখ্যাত ভিলেন হিসেবে এখনও পরিচিত তিনি। হাসিমুখে জন্মদিন পালন করছেন। কিন্তু বাংলা ধারাবাহিকের নাম শুনলে মুখ ভার তার। সমাজের অবক্ষয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মিঠাই ধূলকণার মত কিছু সিরিয়াল নাম না নিয়েই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিপ্লব চ্যাটার্জী ( Tollywood )।
বিপ্লব চ্যাটার্জী বাংলা সিনেমা জগতের এক অন্যতম নাম। তিনি ২০০৫ সালে পরিনীতা সিনেমার মধ্য দিয়ে সিনেমা জগতে পা দেন। তিনি চার দশক ধরে প্রায় ৩০০টি সিনেমা করেছিলেন। তার অভিনয় অত্যন্ত প্রসংশিত। সত্যজিৎ রায় থেকে শুরু করে তরুণ মজুমদার, মৃণাল সেন, সন্দীপ রায় সহ প্রায় সকল পরিচালকদের সাথে কাজ করেছেন তিনি। ছবির ভিলেন হিসেবে যার নাম উঠে আসে তিনি বিপ্লব চ্যাটার্জী। ভিলেনের চরিত্রগুলোকে তিনি এমনভাবে ফুটিয়ে তুলতেন দর্শক তাকে জুতো দিয়ে মারতে পর্যন্ত চাইতেন।
বিপ্লব চ্যাটার্জী রাজনীতিতেও প্রবলভাবে সক্রিয়। তিনি ১৯৯৯ সালে রাসবিহারী নির্বাচনী এলাকা এছাড়াও ২০০৯ সালে আলীপুর আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন পরিচালক। তিনি অনেক সিনেমা পরিচালনা করেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অভিমন্যু। তবে বর্তমানে তাকে আর কোনো সিনেমায় দেখতে পাওয়া যায় না।
তার সিনেমায় হারিয়ে যাওয়ার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। তখনকার সিনেমায় সাংসারিক ঘটনা নিয়ে সিনেমা করা হত। আর এখনকার গল্পগুলোর বিষয়বস্তু হল প্রেম পরিণয় অর্থাৎ তখনকার দিনের থেকে এখনকার দিনের গল্প পুরোপুরি আলাদা। তার অনেকটাই বয়স হয়েছে তাই ইন্ডাস্ট্রির লোকেরা তাকে আর পছন্দ করেন না। তিনি সিনেমায় অভিনয় না করতে পারলেও তার রক্তে মিশে আছে অভিনয়। তাই ছোট খাটো সিরিয়ালে অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে।
সব বিষয়ে স্পষ্টভাষী অভিনেতা বিপ্লব। তিনি জানিয়েছেন, “আমি অনেক সিনেমায় ভদ্রলোকের চরিত্রেও অভিনয় করেছি। এই ধরনের ছবির কথা কেউ মনে রাখে না। আমি মন থেকে চাই এই ধরনের চরিত্র আমায় দেওয়া হোক।” তিনি কিছুটা আক্ষেপের সুরে বলেছেন, “আমায় ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারো না টলিউড। আমায় কেবল খলনায়ক হিসেবেই পছন্দ ফলে ওই এক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে করতে আমিও ক্লান্ত। অপেক্ষায় থকি ভদ্রলোকের চরিত্রে আমায় ডাকা হবে। আমি সেখানে অভিনয়ের সুযোগ পাব।”
ধারাবাহিক সম্পর্কে অভিনেতা জানিয়েছেন, বর্তমানে ধারাবাহিকের মান খুবই পড়ে গিয়েছে। টাকা দিয়ে টিআরপি কেনা যায় একথা আমরা সকলেই জানি। সাম্প্রতি, তিনি এক নাটকের চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। সেটা এক চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা জানিয়ে দেয় শিক্ষামূলক কিছু দেখানো হবে না। তাই প্রযোজক না পেলে কাজও করতে পারবেন না অভিনেতা। অথচ ধারাবাহিকগুলিতে মা মেয়েকে বিচ্ছেদের পরামর্শ দিচ্ছে। সেটা চুপচাপ তিনি দেখেন আর ভাবেন আর কত উচ্ছন্নে যাবে সমাজ?
এছাড়াও তিনি আক্ষেপের সুরে বললেন, “সোনালী দিনগুলোর মানুষগুলো একে একে হারিয়ে যাচ্ছেন। সদ্য চিরকালের জন্যে চলে গেলেন তরুণ মজুমদার। এক এক সময় বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের মনে হয় তাঁরই বা বেঁচে থেকে লাভ কী? কারণ বেঁচে থাকলেই বসে বসে অবক্ষয় দেখতে হবে।”