Jnaneswari Express Haunted: শোনা যায় কাদের আর্তনাদ! ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার স্মৃতি নিয়ে জ্ঞানেশ্বরীর ভিতরে আজও অপেক্ষায় যাত্রীরা

রাখী পোদ্দার, কলকাতা : দীর্ঘ ১২টা বছর পেরিয়ে গেলেও জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস ( Jnaneswari Express) যেন আজও নিজের সেই মর্মান্তিক কাহিনী শোনাতে চায় মানুষকে। সালটা ছিল ২০১০, ২৮শে মে রাত প্রায় ১টা নাগাদ হঠাৎই এক ভয়ংকর ঘটনার সাক্ষী হল গোটা ভারত। ভারতের অন্যতম ব্যস্ত রেল স্টেশন খড়গপুর থেকে ঝাড়গ্ৰামের দিকে যেতে এক ছোট্টো রেলওয়ে স্টেশন খেমাশুলি। এই ছোট্টো স্টেশনটিতে হাতে গোনা কয়েকটা ট্রেন দাঁড়ালেও বেশিরভাগ ট্রেনই দাঁড়ায় না এখানে। আর এই স্টেশন থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে যেতেই লাইনচ্যুত এক মালবাহী ট্রেন এসে ধাক্কা মারে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসকে। মূহুর্তের মধ্যেই যেন সব কিছু শেষ হয়ে যায় ওই ট্রেনে যাত্রা করা যাত্রীদের। নিজেদের আপন মানুষগুলিকে হারিয়ে কত মানুষই না হয়েছে নিঃস্ব। কত শিশুকে প্রাণ হারাতে হয়েছে এই ভয়ংকর দুর্ঘটনায়। হিসেবে অনুযায়ী প্রায় ১৫০ এর উপর মানুষ নিহত হয় এই ঘটনায়। আর প্রায় ২০০ এর ওপর মানুষ হন আহত।
তবে এখানেই শেষ নয়। আজ প্রায় ১২টা বছর কেটে গিয়েছে এই দুর্ঘটনার। স্টেশন থেকে কিছুটা এগালেই আজও দেখা মিলবে সেই দুমড়ে মুচড়ে থাকা ট্রেনের ( Jnaneswari Express) কামরাগুলোর। আজও নাকি কান পাতলে শোনা যায় মৃত্যু পথযাত্রীদের ভয়ংকর সেই আর্তনাদ। যেই আর্তনাদ শুনলে ভয়ে শিউরে উঠবে আপনার সারা শরীর। রাত বাড়লেই নাকি সেখানে শুরু হয় অশরীরীদের তান্ডব। ভেসে আসে বুক ফাঁটা কান্নার শব্দ। রাতের বেলা দূর দিনের বেলাতেও এই স্থানে এড়িয়ে চলে গ্ৰামবাসীরা। গ্ৰামের পরিচিত চিত্র ধরা পরে না এখানে। স্থানীয়দের মতে, বহু ট্রেন চালকরা নাকি এই অংশ পেরোনোর সময়তেই বহু লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন লাইনের পাশে।

স্থানীয়দের মতে, এই দুর্ঘটনায় ( Jnaneswari Express Accident) বহু মানুষ প্রাণ হারালেও তাঁদের সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এমনকি উদ্ধার কার্য চলাকালীন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কামরাটিকে তো কেটেই ফেলতে হয়েছিল। অকালে এরকম ভয়ংকর মৃত্যু বরণের জন্যই নাকি অভিশপ্ত এই স্থান। সেখানকার বাসিন্দারা রাত বাড়লেই শুনতে পান ছোটো বাচ্চাদের কান্নার আওয়াজ। আবার অনেকের দাবি, সেই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় কেউ নাকি পিছন থেকে তাঁদের নাম ধরে ডাকছে। এরকম বহু ঘটনারই নাকি প্রায় দিনই সম্মুখীন হয়ে চলেছে এখানকার বাসিন্দারা।

যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো ব্যাপারটাই স্থানীয় বাসিন্দাদের মনের ভুল। এত ভয়ংকর একটি দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে এই গ্ৰামবাসীরা। কত মানুষেরই মৃত্যু দেখছে নিজ চোখে। আর তাই এইসব থেকেই এক অজানা ভয় গ্ৰাস করছে এদের। আর ফলস্বরূপ লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভৌতিক কাহিনী। এই ঘটনা কতটা সত্যি কিংবা কতটা মিথ্যে সেই উত্তর এখনও অধরা। যদিও আজও সেই পরে থাকা অতিকায় ট্রেনের ধ্বংসাবশেষ দেখলে আপনারও রক্ত জল হয়ে যাবে নিমেষেই।