Murshidaabad: রাতে ভেসে আসে মহিলার কান্নার আর্তনাদ! কোন রহস্য লুকিয়ে আছে বাংলার শেষ নবাবের এই সমাধিতে?

রাখী পোদ্দার, কলকাতা : গভীর রাতে কার কান্নার শব্দ শুনতে পাওয়া? কেই বা আতুরের গন্ধ ছড়িয়ে দিয়ে যায় সিরাজের সমাধি ক্ষেত্রে? বাংলার এক অন্যতম ঐতিহাসিক শহর মুর্শিদাবাদ ( Murshidaabad)। গঙ্গার তীরে অবস্থিত এই প্রাচীন শহরটি ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য এক আদর্শনীয় স্থান। হাজারদুয়ারী থেকে কাতরা মসজিদ, নিজামত মাকবরা থেকে কাঠগোলা প্যালেস কতই না নজর কাড়া স্থাপত্য রয়েছে এখানে। ইতিহাসে ঘেরা বিভিন্ন স্থাপত্যের সঙ্গে সঙ্গে কতই না ইতিহাসের রহস্য ঘুমিয়ে রয়েছে এই শহরে।
হাজারদুয়ারী থেকে ভাগীরথী নদী পার হয়ে আপনাকে যেতে হবে খোশবাগে ( Khosbag)। খোশবাগ, যেখানে চির শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। নবাব সিরাজৌদ্দল্লা ( Sirajuddaula)। যেমন বর্ণময় জীবন, তেমনই মর্মান্তিক তাঁর অন্তিম পরিণতি। আপাত দৃষ্টিতে দেখে যেই স্থানকে মনে হয় শান্ত ধীর বলে আদেও কী সেই স্থান এতটাই শান্ত থাকে রাতের বেলায়ও? নাকি রাত নামতেই এখানেও নেমে রহস্যময় অন্ধকার?

পলাশীর যুদ্ধে পরাজয়ের পর যখন আত্মগোপন থেকে স্বপরিবারে ধরা পড়ছিলেন সিরাজ তখন তাঁকে এই মুর্শিদাবাদে ( Murshidaabad) এনেই করা হয়েছিল হত্যা। এরপর তাঁর দেহটিকে এনে সমাধিস্থ করা হল এই খোশবাগে। সিরাজের প্রিয় নানা আলিবর্দি খাঁয়ের সমাধির পাশেই। যদিও ইংরেজ শাসকদের ইচ্ছে ছিল তাঁর মৃতদেহ ভাগীরথীর জলে ভাসিয়ে দেওয়ার তবুও সিরাজের ( Sirajuddaula) বেগম লুৎফান্নেসা বুক দিয়ে আগলে রেখেছিল তাঁর পরিবারের এই সমাধি ক্ষেত্রকে ( Graveyard)। নিজের জীবন ধারণের জন্য ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে যেটুকু অর্থ তিনি পেতেন তার সমস্তটাই তিনি খরচ করতেন এই সমাধি ক্ষেত্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।

সুন্দর ফুলের বাগান, প্রতি সন্ধ্যায় সিরাজের সমাধির পাশে কোরান পাঠ, আতুরের গন্ধ ছড়িয়ে দিতেন সিরাজের ( Sirajuddaula) স্ত্রী। লুৎফান্নেসার মৃত্যুর পর তাঁরও সমাধি দেওয়া হয় এখানে। আর তারপর থেকেই লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে এক প্রচলিত কাহিনী। শোনা যায়, মাঝে মাঝে সন্ধ্যে হতেই আতুরের গন্ধ পাওয়া যায় সিরাজের সমাধি ক্ষেত্র ( Graveyard) থেকে। কখনও আবার রাত বাড়তেই শুনতে পাওয়া যায়, এক মহিলা কন্ঠের কান্নার আওয়াজ। আদেও কী সত্যি এই স্থানে রয়েছে কোনও অশরীরীদের বাস? নাকি সিরাজের প্রতি লুৎফান্নেসার গভীর অনুরাগ ও ভালোবাসা থেকে লোকমুখে ছড়িয়ে এই কাহিনী? সেই উত্তর আজও অধরা।