Kolkata Yellow Taxi: অ্যাপক্যাব ঢেকেছে কলকাতা! আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়েছে তিলোত্তমার কালো-হলুদ রূপকথা

‘ট্যাক্সি!’ ফুটপাত ধরে হাঁটতে গিয়ে মাঝে মধ্যে ভেসে আসা ডাক আজ যেন হারিয়ে গিয়েছে। সে এক সময় ছিল, বাঙালি ভেসে ছিল রবীন্দ্রনাথ, ট্রাম, বাস, মাঝে মধ্যে সিনেমা ইত্যাদি নিয়ে। বাঙালি আজও এই সবেই ভেসে। কিন্তু তার মাঝেই কোথাও যেন মুছে গিয়েছে শহরের সেই কালো-হলুদ রূপকথার গল্পরা। ভাড়া বাঁচাতে কখনও চাপাচাপি করে বসা, কখনও বা ভর্তি পকেটে একাই রাজার মতো বসে পড়া।
হলুদ ট্যাক্সির কাহিনীতে আজও মন মজে বাঙালির। শুধুই কাহিনীই যে রয়েছে। বাঙালির প্রিয় শহর থেকে সময়ের সঙ্গে যেন হারিয়ে গিয়েছে এই হলুদ ট্যাক্সি। সময়ের সঙ্গে যেন তাল মেলাতে পারেনি তাঁরা। এখন মানুষ আর রাস্তার মাঝে চিৎকার ট্যাক্সি ডাকতে স্বচ্ছন্দবোধ করেন না। পকেট থেকে ছোট্ট পাঁচ ইঞ্চির স্মার্ট ফোনটা ঘোরাতেই দোরগোড়ায় চলে আসে অ্যাপ ক্যাব। সময়ের সঙ্গে যেন বদলে গিয়েছে সব কিছুই।
উল্লেখ্য, হিন্দ মোটরস অ্যাম্বাসেডরের হাত ধরেই তিলোত্তমার বুকে হলুদ ট্যাক্সির আগমন। কিন্তু ২০১৪ সালে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই এক প্রকার সংকটে পড়ে যায় হলুদ ট্যাক্সির ভবিষ্যৎ। সেই সময়ও সড়কে বেশ ভাল পরিমাণ ট্যাক্সিরই প্রতিদিন আনাগোনা থাকত। এরপর ২০১৭ সালে হিন্দুস্তান মোটরস ফরাসি গাড়ি কোম্পানি পিজ্যোঁর কাছে বিক্রি করে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। আর তারপর থেকেই আকাল যেন আরও বেড়ে যায়। মহামারির মৃত্যুর মতো শহরের বুক থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করে হলুদ ট্যাক্সি।
প্রসঙ্গত, এই মহামারিকে বৃদ্ধি করার পিছনে আরও ইন্ধন দেয় অ্যাপক্যাব। সাধারণ ভাবেই মানুষের দৈনিক যাতায়াতকে অনেকটা নিশ্চিন্তের করতে, ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের পরিবর্তে ঘরের দোরগোড়ায় ট্যাক্সিকে এনে দিতে, মানুষকে আধুনিকতার এক নতুন রূপের সঙ্গে পরিচিতি ঘটাতে বাজারে চলে আসা অ্যাপক্যাব। একটা বোতাম টিপতেই ট্যাক্সির ঘরের সামনে হাজির। কিন্তু তাতে নেই সেই ঐতিহ্যবাহী স্বাদ। হেরিটেজ নয় তিলোত্তমার নতুন আধুনিক রূপ এই অ্যাপক্যাব।
তবে আধুনিকতার এই ছোঁয়া যেন চরম সংকট টেনে আনে শহরের হলুদ ট্যাক্সি চালকদের জীবনে। পেট চালানো একেবারে দায় হয়ে ওঠে তাঁদের। ১৯০৯ সালে তিলোত্তমায় প্রথম ট্যাক্সি আসে। বর্তমানে যেখানে এখন ফ্র্যাঙ্ক রস কোম্পানির ওষুধের দোকান রয়েছে, সেখানেই এক ফরাসি কোম্পানির উদ্দ্যোগে তৈরি হয়েছিল কলকাতার প্রথম ট্যাক্সি।