Shiva Temple: সেন রাজার আমলের জাগ্রত রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির, হাজার বছরের ইতিহাস লুকিয়ে এই স্থানে

বাঙালিদের সাধনার অন্যতম ক্ষেত্র হল বাংলা। এখানে তেত্রিশ কোটি দেব দেবীর ভক্তের কোনও অভাব নেই। শিব, শক্তি, বিষ্ণু, কালী থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক দেবদেবী পূজিত হন এই বাংলায়। যেখানে এত দেব-দেবীর পূজা হয়, সেখানে কোনও মন্দির থাকবে না তা রীতিমতো অসম্ভব। বাংলার বুকে রয়েছে বহু প্রাচীন মন্দির। কিন্তু আমরা কেমন বাঙালি দেখুন! সেসব মন্দিরের অধিকাংশের খোঁজ আমরা রাখিনা। তবে খোঁজ নিলে জানা যাবে যে সে সব মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘদিনের ইতিহাস। এরকমই একটি মন্দির হল রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির ( Rarheswar Shiv Mandir ) ।
মন্দিরটি প্রায় ৮০০ বছরের পুরনো। দুর্গাপুরের কাঁকসা থানার আড়ড়া গ্রামেই রয়েছে এই শিব মন্দির। লোকমুখে জানা গিয়েছে যে, অতীতে ৬ টি এলাকা মিলে গড়ে উঠেছিল একটি নগরী। নগরীটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল। আড়ড়া, বামুনাড়া, গোপালপুর, রূপগঞ্জ, কালীগঞ্জ, গড়জঙ্গল মিলে গড়ে ওঠা এই নগরীর মূল কেন্দ্র ছিল এই শিব মন্দিরটি। সে সময়ের সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন এই মন্দিরটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাজার মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে এক অলৌকিক ঘটনা লোকের মুখে মুখে শোনা যায়। অনেকের কথায়, কোনও এক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে বল্লাল সেন এই মন্দির তৈরি করান এবং এরপরই ঘটে চমৎকার। সেই জটিল রোগ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেন রাজা। আর তখন থেকেই নাকি নিত্যপুজো হয়ে আসছে এই মন্দিরে।
তবে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক মতবিরোধ রয়েছে। ইতিহাসে রয়েছে যে বল্লাল সেন ১১৬০ থেকে ১১৭৯ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তাই অনেকের মতে তখনই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই মন্দির। আবার একদল গবেষকরা অন্য সুর গাইছেন। তাঁদের মতে মন্দিরটি হাজার বছরের পুরোনো। কিন্তু এসবের মধ্যে সঠিক কোনটি, তা এখনও পর্যন্ত জেনে ওঠা সম্ভব হয় নি।
এই মন্দির নিয়ে ভক্তদের মধ্যেও অনেক বিশ্বাস রয়েছে। অনেকে মন্দিরটিকে জাগ্রত বলেই মানেন। জানা গিয়েছে, এই মন্দিরের উত্তর দিকে একটি পুকুর আছে, নাম কালদিঘি। ভক্তদের মুখে শোনা যায় যে, মহাদেব স্বয়ং নাকি ওই পুকুরে স্নান করেছিলেন। এছাড়াও মন্দির নিয়ে আরও অনেক অলৌকিক ঘটনা শোনা যায় ভক্তদের মুখে। তবে এই মন্দিরটির বাহ্যিক সৌন্দর্য এতটাই মনোরম যে চোখ ফেরানো যায় না।