The Death of Queen Elizabeth II: রূপকথার রানি এলিজাবেথ, ঘুম ভেঙে চোখের পাতা খুলতেই হয়েছিলেন ব্রিটেনের মহারানি

জয়িতা চৌধুরি,কলকাতাঃ ছোটবেলার রুপকথার গল্পের রানীদের কথা মনে পরে? দুপুরে খাওয়ার পর বা সন্ধ্যেবেলায় মা –ঠাকুমার মুখে শোনা যেত ক্রুশে বোনা সোয়েটারের মতো তাঁদের মনগড়া রাজা-রানি, রাক্ষসের গল্প। সম্ভব-অসম্ভব কত ঘটনাই না থাকত তাতে… আর অন্যদিকে শিশু মনে চলত কল্পনার বুনন। চোখের সামনে ভাসত গল্পের প্রেক্ষাপট। তারপর বয়স বেড়েছে। হারিয়ে গেছে রুপকথার মতোই সুন্দর সেই দুপুরগুলো। কংক্রিট বাস্তবের সঙ্গে যখন ধীরে ধীরে পরিচয় হচ্ছে, তখন জানলাম সাত সমুদ্র আর তেরো নদীর পাড়ে অস্তিত্ব আছে সত্যিই এক রুপকথার রাজা-রানির দেশ! আসলে রুপকথা নয়, বাস্তবেই ইংল্যান্ডে ছিলেন এক সুন্দরী রানী। কুইন এলিজাবেথ ২ ( Queen Elizabeth II )।
আজ প্রায় সত্তর বছরের বেশি সময় ধরে তিনি রাজত্ব করেছেন ইংল্যান্ডের সিংহাসনে। তিনিই বিশ্বের কোনও রাজপরিবারের সদস্য, যিনি দীর্ঘ ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজত্ব করেছেন। দীর্ঘ জীবনে সাক্ষী থেকেছেন ইংল্যান্ডের বেশ কিছু নজির বিহীন ঘটনার। চার্লস ডায়নার বিচ্ছেদ, ডায়নার অস্বাভাবিক মৃত্যু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যা, বার্লিনের প্রাচীর ভাঙ্গা, চাঁদে মানুষের পা, অতিমারী আরও কতো কি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি স্থল সেনাবাহিনীর নারী বিভাগে অক্সিলিয়ারি টেরিটোরিয়াল সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন। ১৯৩৬ সালে তাঁর পিতা ষষ্ঠ জর্জ সিংহাসনে আহোরন করার পর থেকেই তিনি উত্তরাধিকারী হন। এরই মধ্যে তিনি বিবাহ করেন ডেনমার্কের রাজপুত্র ফিলিপের সঙ্গে ( Prince Philips )।
রাজ পরিবারের সদস্যদের পছন্দের ছুটি কাটানোর জায়গা হল সুদূর আফ্রিকার কেনিয়া। বিয়ের পরপরই স্বামী প্রিন্স ফিলিপ্সের সঙ্গে কেনিয়ার একটি জঙ্গলে বন্যপ্রেণী দেখতে গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের যুবরানী। হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে শুনলেন মারা গিয়েছেন তাঁর বাবা ষষ্ঠ জর্জ। সেই থেকেই ইংল্যান্ডের রাজকীয় ইতিহাসের ধারায় যুক্ত হয়েছিল নতুন এক অধ্যায়।
তবে কথায় আছে, ‘যার আদি আছে, তার অন্তও নিশ্চিত ।‘ শেষ হয়েছে সেই অধ্যায়। ইতি ঘটেছে এক সত্যিকারের রানির রুপকথার গল্পের। ৯৬ বছর বয়েসে প্রয়াত হয়েছেন রানি এলিজাবেথ ২। দীর্ঘ অসুস্থতার পর বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ডের বালমোরল প্রাসাদে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন দীর্ঘ সত্তর বছর ইংল্যান্ডের মসনদে থাকা রানি।