Biswanath Basu: তর্পণ সেরে উঠতেই ‛আমার দুর্গার’ দেখা পেলাম! হটাৎ কোন প্রসঙ্গে মূর্ছা গেলেন অভিনেতা বিশ্বনাথ?

প্রত্যুষা সরকার, কলকাতা: টলিউডের জনপ্রিয় হাস্যরসিক অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু ( Biswanath Basu )। রিল লাইফ হোক বা রিয়েল লাইফ মুখে তাঁর সব সময় হাসি। মানুষকে হাসাতে ভাল বাসেন তিনি। তবে এই হাসির মোড়কে কোথাও একটা যেন সযত্নে লুকিয়ে রেখেছেন তাঁর সংবেদনশীল মনটাকে। কখনও উৎসব উপলক্ষে মা দুর্গার মুখে তুলে দেন অন্ন, আবার কখনও চুপিচুপি হাতে গুঁজে দেন দিন চালানোর উপকরণ। তবে কে এই দূর্গা জানেন?
প্রতি বছর বিশ্বনাথ বসুর গ্রামের বাড়িতে বেশ বড়ো করেই উৎযাপন করা হয় বনেদি বাড়ির দূর্গা পুজো। হাজারও ব্যস্ততা থাকলেও ওই কয়েকটা দিন পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের বাড়িতেই পুজো কাটান অভিনেতা ( Biswanath Basu )। তবে এবার মহালয়ায় তাঁর সঙ্গে ঘটলও এক অন্যরকম ঘটনা। সেই কথায় এবার ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমকে জানালেন অভিনেতা নিজেই। বললেন ‘আমার দুর্গা’-দের কথা।
তিনি ( Biswanath Basu ) বললেন, ‘মহালয়ার ভোরেই আমার দুর্গার দেখা পেলাম। হাওড়ায় আমার শ্বশুরবাড়ি। সেখানকার গঙ্গার ঘাটে তর্পণ করি। পুজোপাঠ সেরে ঘাটে উঠতেই দেখে গুটিসুটি এক ‘মা’ বসে রয়েছেন। জরাজীর্ণ শরীরে শতছিন্ন শাড়ি। নিজেকে বয়ে নিয়ে চলার শক্তি নেই। ঘোলাটে চোখে যেন শেষ পাড়ানির কড়ি খুঁজছে। অনেকটা থানার এক পাশে পড়ে থাকা ভাঙাচোরা সাইকেলের মতো। হয়ত তার থেকেও খারাপ অবস্থা। কে জানি অবহেলায় ফেলে রেখে গিয়েছে তাঁকে। এ ভাবে মহালয়ার ভোরে দেবীর দেখা পাব, ভাবতেও পারিনি।’
তিনি ( Biswanath Basu ) আরও বলেন,’দর্শন যখন দিলেনই তখন তো তাঁর নৈবেদ্যও প্রাপ্য। সাধারণত, কাউকে কিছু দিয়ে সেটা নিয়ে বড়াই করি না। এতে যিনি দিচ্ছেন এবং যিনি নিচ্ছেন— উভয়েই খাটো হয়ে যান। আজ জানাচ্ছি। কারণ, আমার দুর্গাকে আমার মতো করে আরাধনা করে আমি তৃপ্ত। পকেটে সামান্য যা ছিল তাঁর হাতে গুঁজে দিলাম সবার অলক্ষ্যে। অস্ফুটে বললাম, ‘মা বাকি দিনগুলোও তো চলতে হবে। তোমার ছেলে তাই তোমায় সামান্য কিছু দিয়ে গেল। ঝটপট আঁচলে বাঁধো। সামলে রেখো।’ আমার কথা তাঁর কান পর্যন্ত পৌঁছেছে কিনা সন্দেহ। আমি বাড়ির পথ ধরলাম।
কথা বলতে বলতে একটু যেন ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেতা ( Biswanath Basu )। তিনি জানান, বাংলার ঘরে ঘরে ‘আমার দুর্গা’রা ছড়ানো। আমাদের চোখ নেই। তাই দেখেও দেখি না। আমিও তাই কোনও এক জনের কথা বলব না। আমার তালিকাটাও বেশ বড়। ‘আমার দুর্গা’রা পথে পথে কাটান। সবাই তাঁদের ফুটপাথবাসিনী বলেন। পথেই সংসার, পথেই দশভূজা তাঁরা। গাড়িতে বসে দেখি, দুই হাতে রান্নার পাশাপাশি সন্তান আগলাচ্ছেন। পরিপাটি করে স্বামীকে হয়ত ভাত বেড়ে দিচ্ছেন। রাতে পথের এক ধারে আরামের শয্যা পাতছেন। কী ভাবে চলে এঁদের? কেউ খোঁজ নেয় না। এছাড়াও বেশ কিছু কথা ওই সংবাদমাধ্যমকে জানান অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু।