শমন এসেছে, মৃত্যুর এক ঘণ্টা আগেই বুঝতে পারে শয্যাশায়ী ব্যক্তি, কেমন সেই অনুভূতি? জানুন
‘জন্মিলে মরিতে হবে/ অমর কে কোথা রবে’।

মহাভারতে পাণ্ডবদের বনবাসের আগের মুহূর্ত। ধর্ম ও যুধিষ্ঠিরের কথোপকথন চলছে। ধর্ম জিজ্ঞেস করলেন, ‘আশ্চর্য কী’? যুধিষ্ঠির উত্তর দিলেন, ‘মানুষ জানে তাকে মরতে হবে, কিন্তু এই সত্য সে বিশ্বাস করতে চায় না, এটাই আশ্চর্য’।
‘জন্মিলে মরিতে হবে/ অমর কে কোথা রবে’। জীবনের ধ্রুব সত্য। যার জন্ম হয়েছে, তার মৃত্যুও অবধারিত। অনেকে বলেন, জন্মের সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুও দিনক্ষণও লেখা হয়ে যায়। বাকিটা সময়ের খেলা।
মৃত্যু নিয়ে তাই মানুষের কৌতূহলও চিরন্তন। মৃত্যু কেমন? কীভাবে হয়? মৃত্যুর অনুভূতি কীরকম? যুগ যুগ ধরে মানুষ এই নিয়ে চর্চা করছে। আসলে এর পিছনে কাজ করছে মৃত্যুভয়। আসন্ন বিপদকে আগাম জানার মনস্কাম। কিন্তু তাই কী হয়!
হিন্দুদের ১৮টি পুরাণ। এর মধ্যে গরুড় পুরাণকে বলা হয় মহাপুরাণ। এই গরুড় পুরাণে মৃত্যু নিয়ে কিছু ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে কয়েকটি পূর্বাভাস। মৃত্যু যখন আসে, অতর্কিতে আসে না। আগে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। তা থেকেই বঝা যায়, মৃত্যু আসন্ন।
কী সেই লক্ষণ? গরুড় পুরাণ বলছে, মৃতপ্রায় ব্যক্তির শয্যার পাশে মৃত আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত হতে শুরু করেন। তাঁরাই পথ দেখিয়ে অমৃতলোকে নিয়ে যান। কিন্তু আত্মীয় স্বজনদের চেনা যায় না। ছায়া ছায়া উপস্থিতি অনুভব করা যায় শুধু। এটাই ইঙ্গিত।
মৃত্যুর কিছুক্ষণ আছে থেকে ব্যক্তির কন্ঠস্বর ক্ষীন হতে শুরু করে। হৃদয় দুর্বল হয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও তখন গলা দিয়ে স্বর বেরোয় না। কথা প্রায় বন্ধ। এটা দ্বিতীয় ইঙ্গিত।
মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে চোখে অন্ধকার দেখে মানুষ। চারপাশে আলো। কিন্তু কিছুই ঠাহর হয় না। এক ধরণের কালো আঁধার সত্ত্বাকে গ্রাস করে নেয়।
মৃত্যুর আগে মানুষকে ছেড়ে যায় তার ছায়া। ব্যক্তির প্রতিফলন পড়ে না। আয়না বা জল – নিজেকে দেখা প্রায় দুঃসাধ্য।
মৃত্যুর আগে গোটা জিবন সিনেমার মতো তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত সে কী করেছে, সবকিছু। কৃত পাপ এবং তার প্রায়শ্চিত্তের কথা মনে হয়।