‘জীবনে মাকে কখনও ভেঙে পড়তে দেখেনি’, আবেগি স্মৃতিচারণ হাসিনার

‘বাবাকে টানা দুবছর জেলের বাইরে দেখিনি। কিন্তু মা কখনও হতাশ হননি। জীবনে মাকে ভেঙে পড়তে দেখিনি’।

ছোটবেলায় ফিরে গেলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোনালেন মায়ের কথা। স্মৃতিচারণ করলেন পুরনো দিনের। বললেন, ‘বাবাকে টানা দুবছর জেলের বাইরে দেখিনি। কিন্তু মা কখনও হতাশ হননি। জীবনে মাকে ভেঙে পড়তে দেখিনি’।

মঙ্গলবার ছিল মুজিবের স্ত্রী তথা হাসিনার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী। সেই উপলক্ষ্যে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ছিল পদক প্রদান অনুষ্ঠান। সেখানেই তাঁর বক্তৃতাতে উঠে এল মায়ের কথা। কীভাবে একা হাতে তিনি সংসার সামলেছেন, বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেই আখ্যান শোনান প্রধানমন্ত্রী।

প্রথমেই মুজিব-স্মরণ করেন হাসিনা। বাবার লক্ষ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৯০ ভাগই দরিদ্র মানুষ। ৮০ ভাগ মানুষের দরিদ্রসীমার নীচে বাস। পেটে ভাত জুটত না। মাথার উপর ছাদ ছিল না। ছিল না পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা। এই বঞ্চিত মানুষগুলোর ভাগ্য গড়ে তোলাই ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য এবং সাধনা’।

Seikh Hasina,Bangladesh

এরপর আসেন মায়ের কথায়। হাসিনা বলেন, ‘দলের ভিতর সমস্যা দেখা দেয়। মওলানা ভাসানি দল ছেড়ে চলে যান। তখন মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন বাবা। মা এই নিয়ে কোনওদিন অভাব অভিযোগ করেননি। সব কিছু হাসি মুখে মেনে নিয়েছেন। সব সময় বাবার পাশে থেকেছেন। তাঁর শক্তি হয়ে থেকেছেন। মাকে কখনও ভেঙে পড়তে দেখিনি’।

এদিন মায়ের কথা বলতে বলতে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন হাসিনা। বলেন, ‘৬০ সালে বের হলেন, আবার ’৬২ সালে গ্রেফতার হন, ’৬৪ সালে আবার গ্রেফতার হন, আবার ৬৬ সালে। জেলখানায় বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে কোনও অনুযোগ নয়, বরং সাহস যোগাতেন মা। বলতেন, তোমাকে ঘর-সংসার নিয়ে ইন্তা করতে হবে না, ওসব আমি সামলাচ্ছি’।

পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার অত্যাচার নিয়েও মুখ খোলেন হাসিনা। কীভাবে তাঁর মাকে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা হয়েছিল, বলেন সে কথাও। সঙ্গে জানান মায়ের অদ্ভুত স্মৃতিশক্তির কথা। হাসিনার কথায়, ‘মায়ের অদ্ভুত স্মরণশক্তি ছিল। জেলখানায় বাবা যে নির্দেশ দিতেন, বাইরে এসে পার্টি কর্মীদের কাছে তা পৌঁছে দিতেন মা’।




Leave a Reply

Back to top button