শুনেছেন শিবের ১০৮টা নাম আছে, জানেন কী? রইল তালিকা

শিব নামের অর্থ কল্যাণ স্বরূপ। শম্ভু বাবার আরেক নাম। এই নামের অর্থ আনন্দ স্বরূপকে বোঝায়। মহেশ্বর অর্থাৎ মায়ার অধীশ্বর যিনি। বামদেব অর্থাৎ অত্যন্ত সুন্দর স্বরূপ যার। পিনাকী অর্থাৎ ধনুক ধারণ করে আছেন যিনি। মস্তকের চাঁদকে ধারণ করে থাকেন বলেই তাকে বলা হয় শশীশেখর। শিব ত্রিনয়নের অধিকারী তাই তাকে বলা হয় বিরূপাক্ষ।

শুভঙ্কর, কলকাতা: বেশ কিছুদিন হল শ্রাবণ মাস শেষ হয়েছে। এই শ্রাবণ মাসেই ‘বাবা’র বিশেষ পুজো করে থাকেন সকলে। মহেশ্বরকে আমরা প্রত্যেকেই প্রতি সোমবার করে পুজো করে থাকি। আর শ্রাবণ মাস আসলেই ধরা হয় এটা ‘বাবর মাস’। তাই সেই মাসে বেশ জাকজমক ভাবে সোমবার করে বাবার পুজো করা হয়। তবে সকলেই যে ভোলা মহেশ্বর এর পুজো করি তার ১০৮ টা নাম রয়েছে। আমরা সকলেই হয়তো সেই কথা শুনেছি কিন্তু জানেন কি তার ১০৮ টা নাম কি কি, বা ১০৮ টা নামের অর্থ কি। এবার জেনে নিন ভোলা মহেশ্বরের ১০৮ টা নাম ও তার অর্থ।

শিব নামের অর্থ কল্যাণ স্বরূপ। শম্ভু বাবার আরেক নাম। এই নামের অর্থ আনন্দ স্বরূপকে বোঝায়। মহেশ্বর অর্থাৎ মায়ার অধীশ্বর যিনি। বামদেব অর্থাৎ অত্যন্ত সুন্দর স্বরূপ যার। পিনাকী অর্থাৎ ধনুক ধারণ করে আছেন যিনি। মস্তকের চাঁদকে ধারণ করে থাকেন বলেই তাকে বলা হয় শশীশেখর। শিব ত্রিনয়নের অধিকারী তাই তাকে বলা হয় বিরূপাক্ষ। এমন কি তিনি মস্তকের জটা ধারণ করে থাকেন। তাই তার নাম কপর্দী। শিবকে বলা হয় নীললোহিত। যার অর্থ নীল ও লাল বর্ণ যে ধারণ করে থাকে। শিবকে আমরা শংকর ও বলে থাকি কিন্তু জানেন কি এর অর্থ কি। এর অর্থ যিনি সবার কল্যাণ করেন। শিবের হাতে থাকে ত্রিশূল। তাই তাকে বলা হয় শূলপাণি। শিবকে খটবাঙ্গিও বলে। এর অর্থ খাটিয়ায় একটি পা রাখেন যিনি। তিনি বিষ্ণুর অতি প্রিয় তাই তাকে বলা হয় বিষ্ণুবল্লভ। শিপিবিষ্ট যার অর্থ যিনি সিতুহায়ে প্রবেশ করেন। দেবীর দুর্গার স্বামী তিনি। তাই তার নাম অম্বিকানাথ।

ভোলা বাবাকে শ্রীকন্ঠও বলা হয়। এই নামের অর্থ যার সুন্দর কন্ঠ আছে। ইনি ভক্তদের অত্যন্ত স্নেহ করেন। তাই তার নাম ভক্তবৎসল। শর্ব যিনি সকলের কষ্ট নষ্ট করে দেন। যিনি সংসার রূপে প্রকট হন তিনিই ভব। মহেশ্বর ত্রিলোকের অধীশ্বর তাই তাকে বলা হয় ত্রিলোকেশ্বর। তার সাদা কন্ঠ রয়েছে, তাই তাকে বলা হয় শিতিকণ্ঠ। তিনি পার্বতীর প্রিয় তাই তার নাম শিবাপ্রিয়। তিনি অত্যন্ত উগ্ররূপী তাই তাকে বলা হয় উগ্র। যিনি কপালে ধারণ করে আছেন তাকে বলা হয় কপালী। তিনি কামদেবের শত্রু এবং অন্ধকারকে পরাজয় করেন তাই তাকে বলা হয় কামারী। দৈত্য অন্ধককে তিনি বধ করেন সুরসুদন। তিনি মাথায় গঙ্গাকে ধারণ করে আছেন তাই তাকে বলা হয় গঙ্গাধর। তার কপালে একটি নয়ন আছে তাই তাকে বলা হয় লালাটাক্ষ। কালেরও কাল তাই তিনি মহাকাল। তিনি উগ্ৰ রুপী হলেও করুণা সাগর। তাই তার নাম কৃপানিধি।

108 names of shiva,shrabon mash,shrabon mash sombar,lord Shiva

উপরোক্ত নাম ছাড়াও তার আরো বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে সেই তালিকাগুলি দেওয়া হল নিচে-

ভীম- ভয়ঙ্কর রূপ যাঁর। পরশুহস্ত- হাতে পরশু ধারণ করেছেন যিনি। মৃগপাণি- হাতে যিনি হরিণ ধারণ করেছেন। জটাধর- জটা রেখেছেন যিনি। কৈলাসবাসী- কৈলাসের নিবাসী তিনি। কবচী- কবচ ধারণ করেছেন যিনি। কঠোর- অত্যন্ত মজবুত দেহ যাঁর। ত্রিপুরান্তক- ত্রিপুরাসুরকে বধ করেছেন যিনি। বৃষাঙ্ক- বৃষ চিহ্নের ধ্বজা রয়েছে যাঁর। বৃষভারূঢ়- বৃষের উপরে সওয়ার যিনি। ভস্মোদ্ধুলিতবিগ্রহ- সারা শরীরে ভস্ম লাগান বলেই এরূপ নাম তার। সামপ্রিয়- সামগানের প্রেমী তিনি। স্বরময়ী- সাতটি স্বরে নিবাস করেন তিনি। ত্রয়ীমূর্তি- বেদরূপী বিগ্রহ করেন যিনি। অনীশ্বর- যিনি স্বয়ং সকলের প্রভু। যিনি সব কিছু জানেন তাকে বলা হয় সর্বজ্ঞ।পরমাত্মা- সব আত্মায় সর্বোচ্চ। সোমসূর্যাগ্নিলোচন- চন্দ্র, সূর্য ও অগ্নিরূপী চোখ তাঁর। হবি- আহূতি রূপী দ্রব্যের মতো তিনি। যজ্ঞময়- যজ্ঞস্বরূপ তিনি। সোম- উমা-সহ রূপ যাঁর।

এছাড়াও রয়েছে পঞ্চবক্ত্র- পঞ্চ মুখ যাঁর। সদাশিব- নিত্য কল্যাণ রূপী তিনি। বিশ্বেশ্বর- সমগ্র বিশ্বের ঈশ্বর তিনি। বীরভদ্র- বীর হওয়া সত্ত্বেও শান্ত স্বরূপ যাঁর। গণনাথ- গণদের স্বামী তিনি। প্রজাপতি- প্রজার পালনকর্তা তিনি। হিরণ্যরেতা- স্বর্ণ তেজ যাঁর। দুর্ধর্ষ- কারও চাপের কাছে নত হন না যিনি‌। গিরীশ- পর্বতের স্বামী তিনি। গিরীশ্বর- কৈলাস পর্বতে শয়ন করেন তিনি। অনঘ- পাপরহিত তিনি। ভুজঙ্গভূষণ- সাপের আভুষণ ধারণ করেন যিনি। ভর্গ- পাপনাশক যিনি। গিরিধন্বা- মেরু পর্বতকে যিনি ধনুক বানিয়েছেন। গিরিপ্রিয়- পর্বত প্রেমী তিনি। কৃত্তিবাসা- গজচর্ম পরিধান করেছেন যিনি। পুরারাতি- পুরদের বিনাশ করেছেন যিনি। ভগবান- সর্বসমর্থ ঐশ্বর্য সম্পন্ন করেন যিনি। প্রমথাধিপ- প্রমথগণের অধিপতি তিনি। মৃত্যুঞ্জয়- মৃত্যুকে জয় করেছেন যিনি। সূক্ষ্মতনু- সূক্ষ্ম শরীর যাঁর। জগদ্ব্যাপী- জগতের ব্যাপ্ত বাস যাঁর। জগদ্গুরু- জগতের গুরু তিনি।ব্যোমকেশ- আকাশের মতো চুল যাঁর। মহাসেনজনক- কার্তিকেয়র পিতা তিনি। চারুবিক্রম- সুন্দর পরাক্রম যাঁর। রুদ্র- ভয়ানক রূপ যার। ভূতপতি- ভূতপ্রেত বা পঞ্চভূতের অধিপতি যিনি। স্থাণু- স্পন্দন বিহিন কূটস্থ রূপ যাঁর। অহির্বুধ্ন্য- কুণ্ডলিনী ধারণ করেছেন যিনি।দিগম্বর- নগ্ন, আকাশরূপী বস্ত্র ধারণকারী যিনি। অষ্টমূর্তি- আটটি রূপ আছে যাঁর। অনেকাত্মা- অনেক রূপ ধারণ করতে পারেন যিনি। সাত্বিক- সত্ব গুণ যাঁর। শুদ্ধবিগ্রহ- শুদ্ধমূর্তি যাঁর। শাশ্বত- নিত্য থাকেন যিনি। খণ্ডপরশু- ভাঙা পরশু ধারণ করেছেন যিনি।

অজ- জন্ম রহিত তিনি। পাশবিমোচন- বন্ধন থেকে মুক্ত করেন যিনি। মৃড- সুখস্বরূপ যাঁর। পশুপতি- পশুদের অধিপতি তিনি। দেব- স্বয়ং প্রকাশরূপ যাঁর। মহাদেব- দেবতাদেরও দেবতা তিনি। অব্যয়- খরচ হওয়া সত্ত্বেও ঘাটতি হয় না যাঁর। হরি- বিষ্ণুস্বরূপ যিনি। পূষদন্তভিৎ- পূষার দন্ত যিনি উপড়ে ফেলেছিলেন। অব্যগ্র- কখনও ব্যথিত হন না যিনি। দক্ষাধ্বরহর- দক্ষের যজ্ঞ নষ্ট করেছিলেন যিনি‌। হর- পাপ ও তাপ হরণ করেন যিনি। ভগনেত্রভিদ্- ভগ দেবতার চোখ নষ্ট করেছিলেন যিনি। অব্যক্ত- ইন্দ্রিয়ের সামনে প্রকট হন না যিনি। সহস্রাক্ষ- হাজারটি চোখ যাঁর। সহস্রপাদ- হাজার পদ বিশিষ্ট যিনি। অপবর্গপ্রদ- কৈবল্য মোক্ষ দান করেন যিনি। অনন্ত- দেশকালবস্তু রূপী পরিছেদ রহিত যিনি। তারক- সবার তারণ করেন যিনি। পরমেশ্বর- সর্বাধিক পরম ঈশ্বর তিনি।




Leave a Reply

Back to top button