পুড়ে যাওয়া মানব দেহ থেকে তৈরি হচ্ছে হিরে, তবে কী ভাবে?
প্রতিদিন শ্মশানে অনেক মৃত দেহ পোড়ানো হয়। মানবদেহে প্রচুর পরিমাণে থাকে কার্বন। এই কার্বন অবশ্য কার্বনেট অবস্থায় থাকে। সেই পুড়ে যাওয়া ছাই সংগ্রহ করে তৈরি করা হচ্ছে হিরে। যার দাম শুনলে আকাশ থেকে পড়বেন।

শুভঙ্কর, কলকাতা: বিজ্ঞানীরা পারেন না এমন কিছুই নেই। এখন শোনাব এক অদ্ভুত কথা। আপনারা কেউ কি কখনো শুনেছেন মানুষের চিতাভস্ম দিয়ে তৈরি হচ্ছে হিরে। কি অবাক হলেন। অবাক হওয়ার কিছুই নেই এটাই সত্যি। হিরে তৈরি হতে সাধারণত দরকার হয় বিশুদ্ধ কার্বন। সাধারণত হিরে কিভাবে তৈরি হয় জানেন? যে হিরে এখন মানুষের কাছে আছে তা এক থেকে তিনশো কোটি বছর আগে পৃথিবীর পৃষ্ঠে চাপা পড়ে তীব্র চাপ ও উচ্চ চাপের কারণে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই চাপ ও তাপের ফলে শক্ত হয়ে তৈরি হয় হিরে। হিরে প্রথমে প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়। তারপর তাকে তুলে এনে মেশিনে ফেলে আকৃতি দেওয়া হয়। এই মেশিনে ফেলার পদ্ধতি শুরু হয়েছিল ১৯৫০ এর দশক থেকে। এবার এই পদ্ধতিতেই একটু চমক আনার জন্যই শ্মশানের ছাই থেকে তৈরি করা হবে হিরে। কিন্তু কিভাবে তৈরি করা হবে সেটাই ভাবছেন তো? তাহলে আসুন জেনে নিন কিভাবে তৈরি হবে সেই হিরে।
আগেই বলেছি, হিরে তৈরি হতে লাগে কার্বন। যা মানুষের শরীরে প্রচুর পরিমাণে আছে। মানুষের শরীরে ১৮.৫ শতাংশ কার্বন রয়েছে। শ্মশানেই প্রতিদিন ২.৫-৮.৫ মিলিগ্রাম কার্বন তৈরি হচ্ছে। তবে হিরে তৈরি করতে গেলে সাধারনত দরকার এক মিলিগ্রাম কার্বন। যা খুব সহজেই মানুষের শরীর থেকে পাওয়া যাচ্ছে। মানুষের দেহ পোড়ানোর পর দাহ করা হাড়ের মধ্যে কার্বন, কার্বনেট আকারে উপস্থিত হয়। একটি লবণে একটি কার্বন এবং তিনটি অক্সিজেন পরমাণু থাকে। প্রথমে একটা গ্যাসের মাধ্যমে কার্বনেটকে আলাদা করা হয়। উচ্চতা তাপমাত্রা এবং কম অক্সিজেনযুক্ত পরিবেশ ব্যবহার করে তৈরি করা হয় বিশুদ্ধ কার্বন। তবে হিরের তৈরি করার এই পদ্ধতিটি বেশ জটিল।
তবে এই হীরে তৈরি করতে বেশ অর্থ প্রয়োজন হবে। পরীক্ষাগারে যে হিরেগুলো তৈরি হয় সেগুলি জেনেরিক কার্বন দিয়ে তৈরি হয়। কিন্তু মানুষের ভস্ম দিয়ে সেই জেনেরিক পদ্ধতিতে হিরা তৈরি করা যাবে না। জেনেরিক পদ্ধতিতেও খরচ ব্যয় সাকুল্য ছিল। কিন্তু তার থেকেও বেশি অর্থ লাগবে মানুষের ভষ্ম দিয়ে তৈরি করতে হিরে তৈরি করতে।