৩১তম বিবাহবার্ষিকীতে স্মৃতিমন্থন খরাজের
অব্রাহ্মণ প্রেমিকাকে মানতে চায়নি বাবা

ব্রাহ্মণ অব্রাহ্মণ নিয়ে বাদ বিবাদ কিছুতেই যেন শেষ হয়েও হতে চাইছে না। এবার সেই ধরণেরই এক গল্প শোনা গেল অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায়ের মুখে। এককালে সেই বৈষম্যতার শিকার হয়েছিলেন অভিনেতা। না। তিনি নয়। তাঁর স্ত্রী। ৩১ বছরে পা দিতে চলেছে খরাজ মুখোপাধ্যায়ের (Kharaj Mukherjee) দাম্পত্য জীবন। তার আগেই এই গল্প সকলের সামনে তুলে ধরেন তিনি।
১৯৯৩ সালে প্রেমিকা প্রতিভা রায় স্বর্ণকারকে বিয়ে করেছিলেন। বীরভূমের ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলে খরাজ। পাত্রী অব্রাহ্মণ। ফলে কেউ কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। খরাজের বাবার প্রতিবাদী উত্তর, “আর কোনও মেয়ে পেলে না বিয়ের করার জন্য…?” ছেলের সঙ্গে কথা বন্ধ করেছিলেন সেই বাবা।

তবে তাঁর কট্টরপন্থী বাবাকে শেষবার জল খাইয়েছিলেন খরাজের অব্রাহ্মণ স্ত্রী। খরাজ বলেন, “বাবার অমতে বিয়ে করেছিলাম। সেই বিয়েতে বাবা আসেননি। আমি ভেবেছিলাম বাবা আর কোনওদিনও আমার মুখ দেখবেন না। কিন্তু আমার বড়দা যা করলেন…”
সস্ত্রীক খরাজকে আপন করে ঘরে তোলার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাঁর বড়দা। প্রথমে মহাদেবের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন খরাজের হবু স্ত্রী প্রতিভার। “হিন্দু ধর্মে এমন রীতি আছে, যেখানে মহাদেবের সঙ্গে বিয়ে হলে সেই মেয়ে গোত্রহীন হয়ে যায়। তাঁকে তখন যে কেউ বিয়ে করতে পারেন। আমার স্ত্রীর ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছিল।” বললেন খরাজ।
তবে বিয়ের পর তাঁর পৈতৃক বাড়িতে ঠাঁই পাননি খরাজ। বেহালার একটি ভাড়াবাড়িতে নতুন সংসার। স্ত্রীর একপ্রকার জোর করাতেই নিজের বাবার কাছে নিয়ে গেলেন তাঁকে। খরাজ বলে ওঠেন, “ও বাবা! সে কী কাণ্ড। এতকিছুর পর এই দৃশ্য দেখব ভাবিনি। তারপর দিন সাতেক যেতেই বড়দা এসে আমাকে আর প্রতিভাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। মজার কথা কী জানেন, আমার অব্রাহ্মণ স্ত্রীর হাতেই শেষ জলটুকু খেয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছিলেন বাবা।”
শেষমেশ সেই “অব্রাহ্মণ” মেয়ের হাতেই জল খেয়ে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন খরাজের বাবা। ৩১ তম বিবাহবার্ষিকীতেই সেই কথা মনে করে উঠলেন অভিনেতা।