International Men’s Day 2021- পুরুষের সব সমস্যার সমাধান হয় এইদিন, আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস

অহেলিকা দও, কলকাতা- “মার্দ কো দার্দ নেহি হোতা’- বচ্চনের মুখের এই ডায়লগ যেন এক ফেনমেন হয়ে উঠল। কিন্তু সত্যিই কি ‘মার্দ কো দার্দ নেহি হোতা’? মাথার উপর পারিবারিক সমস্ত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করে যাচ্ছেন পুরুষরা। কেউ ব্যাবসায়িক চাপ সামলাচ্ছেন কেউ আবার সামলাচ্ছেন নিজেদের চাকরি। সব মিলিয়ে জীবনের চাকাটা খুব একটা মসৃণ পথ দিয়ে চলে না পুরুষদেরও।

১৯ নভেম্বর (19th November)। নো শেভ নভেম্বরের একটি বিশেষ দিন এটি, কারণ এটি আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস (International Men Day). বিশ্বব্যাপী ছুটির দিন। প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর পুরুষদের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, এবং আর্থ-সামাজিক অর্জনকে স্বীকৃতি দিতে উদযাপন করা হয়। ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস ছয়টি স্তম্ভের ভিত্তিতে পুরুষদের দিন হিসাবে উদযাপন করা হয়। জাতি, ইউনিয়ন, সমাজ, সম্প্রদায়, পরিবার, বিবাহ এবং শিশু যত্নে তাদের অন্যতম ভূমিকাই হল এই স্তম্ভ। এর সবচেয়ে বৃহত্তর এবং চূড়ান্ত লক্ষ্য হল মৌলিক মানবিক মূল্যবোধের প্রচার করা এবং একইসাথে পুরুষদের সমস্যাগুলির প্রতি সচেতনতা।

তবে পুরুষ দিবস সমাজের কাছে ততটা স্বীকৃতি পায়নি। অর্ধেক ছেলেরাই এই দিনের কথা জানে না সুতরাং, মেয়েদেরও না জানাটা স্বাভাবিক। তাই সেই অর্থে পুরুষ দিবসে প্রিয় পুরুষকে কিছু উপহার মেয়েরা দেবে, এখনও সেই ভাবটা শুরু হয়নি। যদি এটাও নারী দিবসের মতো শুরু হয়। তাহলে ব্যবসায়িক ছাড়ের যে বিষয়টা নারী দিবস-কেন্দ্রিক হয় তবে সেটা পুরুষ দিবসকে ঘিরেও শুরু হবে। এই সপ্তাহে বেশ কিছু ছেলেদের পার্লারে, ট্যাটু সেন্টারে, জামা কাপড়ের দোকানে ছেলেদের জন্য ছাড়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু তা আবার সংখ্যায় অনেক কম। এছাড়াও কিছু হাসপাতালে ছেলেদের বিভিন্ন টেস্টের উপর প্যাকেজে ডিসকাউন্টও দেওয়া হয়েছে।

 

১৯৯২ সালে ৭ ফেব্রুয়ারি টমাস ওস্টার প্রথম এই দিনটি উদ্বোধন করেন। মাল্টায় ১৯৯১ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি এটি প্রথম পালিত হয়। ১৯৯৯ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে পুনরায় চালু হয় এই দিবস। মাল্টাতেই আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসের দীর্ঘতম উদযাপন হয়। এএমআর কমিটি ২০০৯ সালে এই দিনের তারিখ ১৯ নভেম্বরে স্থানান্তরিত করার পক্ষে ভোট দেয়। ইভেন্টটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং পিতাকে সম্মান জানাতে তার জন্মদিনকে বেছে নেয় জেরোম তেলুকসিং।  এবং এই ১৯ নভেম্বরকেই

বিশ্বকাপ ফুটবলে নিজেদের সাফল্যের দিন হিসাবে উদযাপন করে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ফুটবল টিম। জেরম মনে করত,আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস আসলে কোন একটি নির্দিষ্ট লিঙ্গ (Gender) দিবস নয়, এটি আসলে এমন একটি দিন যেদিনে পুরুষের সব সমস্যাকে সমাধান করা সম্ভব। তবে, আন্তর্জাতিক নারী দিবস যেমন জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত, আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস কিন্তু জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত নয়।

আরও পড়ুন……Farm Laws Repealed- কী ছিল এই তিন কৃষি আইন? কেনই বা বিতর্ক?

পুরুষ-অধিকার নিয়ে লড়াই করার অন্যতম মুখ নন্দিনী ভট্টাচার্য একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাতকারে পুরুষ দিবসের আসল স্বরূপ উওদ্ঘাতন করতে গিয়ে জানিয়েছেন, ‘মেয়েদের জন্য যে বাসে, মেট্রোতে আলাদা সিট নির্বাচিত থাকে। এছাড়াও রিজার্ভ সিট থাকে প্রতিবন্ধীর জন্য, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য, শিশুদের জন্য। মেয়েরা যে বলে পুরুষদের সাথে তাদের সমান অধিকার, তাহলে পুরুষদের জন্য কেন আলাদা সিট থাকবে না? আজ পর্যন্ত কেউ এর প্রতিবাদটুকু জানায়নি। ভারতে মেল চাইল্ড অ্যাবিউস ৫৩ শতাংশ, পুরুষের ধর্ষণ ১৮ শতাংশ। কিন্তু পুরুষের ধর্ষণের কোনও মেডিক্যাল রিপোর্ট হয় না। তাই সেটা নিয়ে কোনও কথাও ওঠে না। ছেলেদের চাকরি করতেই হবে, মেয়েরা শুধু ঘরের কাজ করবে এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন। সবাইকে সবকিছু শিখতে হবে একটা ছেলেকেও ঘরের কাজ করতে হবে, তেমনি একটা মেয়েকেও বাইরের কাজ করতে হবে। বিয়ের সময়ে তারা জানো একে অপরকে বলে, ‘আমারা একে অপরের দায়িত্ব নিলাম।’ সে দিন সত্যি সত্যিই সমস্ত পুরুষ সম্মান অর্জন করবেন আর সেদিন থেকেই হবে আসল পুরুষ দিবস’।




Back to top button