Cyclone Update: আম্ফান থেকে জাওয়াদ, ঘূর্ণিঝড়ের এমন অদ্ভুত নামের পিছনে কী রহস্য জানেন কী

২০২১ এর গোটা বছরে নিম্নচাপ(depression)আর ঘূর্ণিঝড়ের(cyclone) প্রকোপ যেন কাটতেই চাইছে না। মে(May)মাসে ঘূর্ণিঝড় যশ দিয়ে শুরু হয়েছে ২০২১ এর ‘ঝোড়ো’ অভিযান, আর তা শেষ হতে চলেছে ডিসেম্বরে জওয়াদ(Jawad) এর মধ্যে দিয়ে। তবে ঘূর্ণিঝড় যতই এলোমেলো করে দিক সাধারণ মানুষের জীবন, প্রতিবারই এই ঘূর্ণিঝড় এর নামগুলিতে থাকে ভিন্ন চমক।
ক্যাটরিনা, আয়লা, হুদহুদ, আম্ফান এমন নানাবিধ অদ্ভুত এবং অপ্রচলিত নাম সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ঝড়ের সতর্কতার সঙ্গে সঙ্গেই। আবার অনেক সময়ে ঝড়ের মধ্যে জন্ম হওয়া শিশুর নামকরণও হয় ঝড়ের নামেই। তাহলে জেনে নেওয়া যাক ঘূর্ণিঝড়ের এই নামকরণের পিছনে কারা থাকেন এবং কী হিসাবেই বা নামকরণ হয় ঘূর্ণিঝড়ের।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনস্থ বিভিন্ন আঞ্চলিক কমিটি। সমুদ্রের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা এই আঞ্চলিক কমিটি তৈরি করে। যেমন উত্তর ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট সব ঝড়ের নামকরণ করবে World Meteorological Organization (WMO)-এর ৮টি সদস্য রাষ্ট্র— বাংলাদেশ, মায়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যাণ্ড ও ওমান। এদের একত্রে বলা হয় ‘স্কেপে’।আঞ্চলিক কমিটির সদস্য দেশগুলো সম্ভাব্য ঝড়গুলোর জন্য আগেই বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করে রাখে। যখন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় তখন নামগুলি ব্যবহার করা হয়। তবে একই নাম দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা হয় না। স্কেপের প্রস্তাবনা অনুযায়ী প্রতিটি দেশ থেকে ১০টি করে নাম জমা নেওয়া হয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করার জন্য।
আগে ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের ঝড়গুলোর নাম হতো সন্তদের নামে। যেমন সান্তা আনা, স্যান ফেলিপ (১ম), স্যান ফেলিপ (২য়)। তবে এই নামগুলি আকারে বড় হবার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নামের মধ্যে দিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ ব্যহত হতো। এরপর ঝড়ের নামকরণ করা হতো অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশের ওপর ভিত্তি করে।
কিন্তু দেখা গেছে, মানুষের কাছে এসব নাম একটু বেশিই জটিল শোনায়। এ ধরণের নামের চেয়ে সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট নামকরণ লিখিত বা মৌখিক যেকোনো যোগাযোগে অধিকতর সহজ। ফলে এ ধরনের নাম ব্যবহার অনেক বেশি যুক্তিসঙ্গত। যেমন ১৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ দশমিক ২ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে ঝড়টি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে বলার চেয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ধেয়ে আসছে বলা অনেক সহজ এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে দ্রুত সহায়ক।
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে পুরীতে আছড়ে পড়া যে ‘জওয়াদ’ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্টি হয়েছে নিম্নচাপের, সেই জওয়াদ এর নামকরণ করেছে সৌদি আরব। আবার গত বছরের সুপার সাইক্লোন(super cyclone)আমফান এর নামকরণ করেছিল থাইল্যান্ড। জওয়াদ শব্দটি আরবি। এর অর্থ উদার। তবে ঝড় যেখানে মানুষের ক্ষতি করে সেখানে ঝড়ের নাম জওয়াদ বা উদার রাখার পিছনে কারণ সম্ভবত, এই ঝড়টি অতটা ভয়ঙ্কর নয়, ফলে তা তুলনায় কম ক্ষতি করবে মানুষের। প্রাথমিকভাবে এই কারণই অনুমান করা হচ্ছে জওয়াদ নামকরণের পিছনে।