Rupa Bhattacharjee: “দশ বছর বয়সে বাড়িতে শুরু সম্বন্ধ দেখা”, যেন ‛বাড়ির বোঝা’ হয়ে রয়ে গেলেন রূপা ভট্টাচার্য

জয়ীতা সাহা, কলকাতা: সমাজে মেয়ে মানেই তুচ্ছ। মেয়ে মানেই বোঝা। মেয়ে মানেই অন্য বাড়ির দাসী। তথাকথিত বেশ কিছু পরিবার আজও একই ধারণা বয়ে নিয়ে চলেছে। সময় বদলেছে। দেশ এগিয়েছে। মেয়েরা সাবলম্বী হয়েছে, তবুও বদলাইনি সেই সব মানুষের ধারণা। যাঁদের মনে একটাই ধারণা মেয়ে মানেই তাঁকে স্যাক্রিফাইস করতে হবে। হোকনা তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে, তাতে কোনও অসুবিধা নেই। তাঁর ইচ্ছা,খুশি, প্রাণখুলে বাঁচার চাহিদা থাকতে নেই, থাকলেও তা মেরে ফেলতে হয় চুপিসারে। এমনই এক তথাকথিত পরিবারের সম্মুখীন হওয়া থেকে বাদ পড়েননি আজকের সকলের প্রিয় অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য।
ছোটবেলায় পরিবারের একমাত্র মেয়ে মানেই সে হবে খুব আদরের। কিন্তু না, তাঁর ক্ষেত্রে এই সঙ্গাটাই ছিল উল্টো। অভিনেত্রী ছিলেন পরিবারের একমাত্র কন্যা সন্তান। পরিবারে বড় দাদা ছিলেন তাঁর। ছোটবেলায় খাবার হিসেবে তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল দাদার খাওয়ারের উচ্ছিষ্ট। মা বর্তমান থাকা সত্ত্বেও চিত্রটা একটুও বদলাইনি। রিল লাইফে নয় রিয়েল লাইফে ঘটে যাওয়া এসব বেদনাদায়ক কথা নিজে মুখে স্বীকার করেছেন অভিনেত্রী। বেশ অনেকদিন আগে জনপ্রিয় টিভি শো দিদি নাম্বার ওয়ান-এ এসে নিজের জীবনের এমনই সব অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।অভিনেত্রীর বক্তব্য,”আমার যখন ১০ বছর বয়স বাড়ি থেকে তখন আমার সম্বন্ধ দেখা শুরু হয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে ঠিক করে বাড়ি থেকে বোঝাটাকে দূরে সরানো যায়! ছোটবেলা থেকেই আমি খুব কুণ্ঠিত থাকতাম, লজ্জিত থাকতাম। কারণ আমি বুঝতে পারতাম, আমার পরিবারের কাছে আমি একটা বোঝা। আমার ছোটবেলায় খাদ্য হিসেবে বরাদ্দ ছিল দাদা খেয়ে যাওয়ার পর বাকিটা।” অভিনেত্রী আরও বলেন খুব অল্প বয়সে জি বাংলায় সঞ্চালিকার কাজ পান তিনি। মাত্র দেড় হাজার টাকা প্রথম আয় নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। আজও তিনি ভাড়া থাকেন, বাবা মায়ের অনেকগুলি বাড়ি সবটাই দাদার নামে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে জনপ্রিয় অভিনেত্রীর কথায় বাড়িতে জায়গা হয়নি তো কী হয়েছে দ্বিতীয় মা অর্থাৎ সিনেমা তাঁর সবকিছু। ইন্ডাস্ট্রি তাঁর পরিবার। এতটা জনপ্রিয় হওয়ার পরও বাড়িতে যোগাযোগ করলেও মেলেনি কোনও সদত্তর। বদলাইনি তাঁদের ধারণা। তবুও তিনি ভালো আছেন। সিনেমা থেকে সিরিয়ালে অভিনয় করে হাজার হাজার দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছেন তিনি। তাঁদের ভালোবাসা পেয়েছেন। এটাই বা কম কীসের। একসময়ে মেয়ে বলে লজ্জিত হয়ে থাকা মেয়েটি আজ গর্বিত।