Child Artist : বোধির মতোই ছিল পাকা-পাকা কথা! স্মৃতির মণিকোঠায় কেমন আছে ভুতু-পটলরা?

চিরকালীন সাংসারিক অশান্তি ও ত্রিকোণ প্রেমের গল্পে যখন দমবন্ধ লাগে, তখন ধারাবাহিকের খুদে সদস্যরা হয় একরাশ দমকা হাওয়ার মতো। যারা অনায়াসে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে মন খারাপের কালো মেঘ। কখনও কখনও এই শিশুরা হয়ে ওঠে ধারাবাহিকের প্রাণকেন্দ্র। বাংলা ধারাবাহিকে এমনই কিছু খুদে বন্ধুরা রয়েছে যারা দর্শক মনে চিরকালীন ছাপ রেখে গেছে। সময়ের সঙ্গে মলিনতা যাদের স্পর্শ করেনি। এই সকল শিশুশিল্পীর খোলামেলা চিন্তা, অভিনয়, আর পাকা পাকা কথা সিরিয়াল প্রেমীদের প্রবল আমুদে করে তুলেছিল। আজ তেমনই কয়েকজন খুদেরা কতটা বড়ো হল? তারা এখন কী করছে আসুন জেনে নিই- আজকের তালিকায় থাকা শিশুশিল্পীরা হল রাখি, পটল, ভুতু, ছোট্ট কাদম্বিনী আর নতুন বন্ধু বোধিসত্ত্ব।
রাখি:
যার মুখ থেকে পাকা পাকা কথা শোনার জন্য বসে থাকাত সিরিয়াল প্রেমীরা, সে হল রাখি। স্টার জলসার পর্দায় ভাই বোনের সম্পর্ক নিয়ে জনপ্রিয় ধারাবাহিক রাখি বন্ধন তৈরি হয়েছিল। রাখির আসল নাম কৃতিকা চক্রবর্তী। সে সময় দর্শকদের অগাধ ভালোবাসা পেয়েছিল ছোট্ট রাখি। তো অভিনয়ের পাশাপাশি এখন পড়াশোনা জমিয়ে করছে সে। বর্তমানে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে পড়ে রাখি।
পটল :
ধারাবাহিকের নাম ‘পটল কুমার গান ওয়ালা’। প্রথমে ছেলের বেশে হাজির হলেও পরে জানা যায়, ছোট্ট পটল আসলে মেয়ে। মা-হারা গাইয়ে পটলের করুণ-মধুর কাহিনীকে ভালোবেসেছিল মানুষ। দুর্দান্ত অভিনয় করেছিল পটল। আসল নাম হিয়া। ডাক নাম দুষ্টু ।পটল চরিত্রের পর শিশু শিল্পী হিসেবে আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর এক ধারাবাহিকে কাজের সুযোগ আসছে তাঁর। স্টার জলসায় সম্প্রতি ম্যাজিশিয়ানের চরিত্রে ‘ফেলনা’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছে সে। পড়াশোনাতেও খামতি নেই। এখন জিডি বিড়লা স্কুলে ক্লাস সেভেনে পড়ছে হিয়া।
ভুতু-
‘নাম আমার ভুতু’! সে কী ভোলা যায়? বাংলা ধারাবাহিকে উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা রয়েছে ভুতুর নাম। ছোট্ট ভূতের গল্প দেখে মুগ্ধ হয়েছিল দর্শক। মাত্র সাড়ে তিন-চার বছর বয়সে পাতার পর পাতা স্ক্রিপ্ট মুখস্থ থাকত ভুতুর। যেমন ঝরঝরে অভিনয়, তেমন মায়া ভরা মুখ। বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল ভুতু। ভুতুর আসল নাম আর্সিয়া মুখার্জী। গানে নাচে আর অভিনয়ে মাতিয়ে রেখেছিল দর্শককে। তবে শুধু বাংলা নয়, হিন্দিতেও ভুতু চরিত্রে ডাক পড়েছিল তাঁর। মুম্বইতে থেকে সেখানেও নিজের অভিনয় দক্ষতার পরিচয় রেখেছিল বাংলার এই খুদে।
কাদম্বিনী ( ছোট বেলা) :
দুটি বেনি ঝুলিয়ে তার বলা সংলাপ একসময় ছেয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়। ‘মা জাত যায় কেমনে?’ শিশুর মুখের এই সংলাপ যেন সপাটে ভেঙে ছিল সমাজের জাত-পাতের অচলায়তন। কার কথা বলছি? প্রথমা কাদম্বিনীর ছোট্ট বেনীর কথা। নিজের দক্ষতা দিয়ে দর্শকের মনে জায়গা করেছিল সে। নাম মেঘান চক্রবর্তী। একাধিক সিনেমা-সিরিজের পরিচিত মুখ মেঘান।
বোধিসত্ত্ব :
বুদ্ধিতে বাজিমাৎ করতে জি এর পর্দায় আবির্ভাব বোধিসত্ত্বের। নানা রকম কান্ড ঘটিয়ে বড়োদের গোমড়া মুখে অনাবিল হাসি ফুটিয়ে তোলে সে। আসল নাম রায়ান গুহনিয়োগী। দর্শক তাঁকে দেখছেন ধারাবাহিকে বোধির ভূমিকায়। ধারাবাহিক আসার আগে থেকেই এই ছোট্ট অভিনেতাকে ভালোবেসে ফেলেছেন দর্শককুল।সকলের মনে একটাই প্রশ্ন , এত ছোট বয়সে কী করে এত্ত ভালো অভিনয় করেছেন রায়ান?
আসলে শিশুদের মধ্যেই থাকে সম্ভাবনার বীজ। তার পরিচর্যা করলেই একদিন মহীরূহ হয়ে ওঠে। যারা আজ শিশু শিল্পী তারাই যে ভবিষ্যতে তাবড় অভিনেতাদের তাক লাগাবে না। তা কে বলতে পারে?