Kishor kumar Birth Anniversary: জীবন যেন সিনেমার পাতা! চারবার বিয়ে করেও কিশোর কুমার পেলেন না সংসার সুখ, নেপথ্যে কোন কারণ?

প্রত্যুষা সরকার, কলকাতা: বাংলা তথা গোটা ভারতের গানের জাদুকর কিশোর কুমারের আজ জন্মবার্ষিকী ( Kishor kumar Birth Anniversary )। গানের জাদুতে বছরের পর বছর মানুষের মনে অমর হয়ে আছেন তিনি। কিশোর কুমারের গানের ধরন ছিল অন্যরকম। যে কারণে তাঁর গানের স্টাইল আজ পর্যন্ত কেউ কপি করতে পারেনি। তবে শুধু গান নয় গায়ক হওয়ার পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন গীতিকার, সুরকার, অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার। চলুন আজ তাঁর জন্মবার্ষিকীতে ফিরে দেখা কিংবদন্তির জীবনের অজানা কিছু তথ্য।
১৯২৯, ৪ আগস্ট জন্ম হয় কিশোর কুমারের। তাঁর আসল নাম আভাস কুমার গাঙ্গুলী। এই কিংবদন্তি গায়ক তাঁর জীবনে ৩৫০০০টিরও বেশি গান গেয়েছেন। গায়ক হিসাবে কারও নাম করলে আগে মাথায় আসে কিশোর কুমারের ( Kishor kumar Birth Anniversary ) কথা। তবে আশ্চর্যের বিষয় প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষা কোনওদিনই নেননি কিশোর কুমার। ভার্সেটাইল কিংবদন্তি গায়ক কিশোর কুমার। নামের সঙ্গে মানুষটিও যেন একইরকম। গানের সঙ্গে সঙ্গে তিনি যে কতটা মজার মানুষ ছিনেল সেটাও জানেন অনেকে। তবে জানেন কি এত খ্যাতি এত নামের পরেও সুখ মেলেনি সাংসারিক জীবনে।
একবার নয় ৪ বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন কিশোর কুমার। কিন্তু ৪ বার বিয়ের পরও সুখী হতে পারেননি কিশোর কুমার ( Kishor kumar )। ১৯৫০ সালে সত্যজিৎ রায়ের ভাইঝি রুমা গুহ ঠাকুরতার সঙ্গে প্রথম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কিশোর কুমার। রুমা নিজেও ছিলেন একজন অভিনেত্রী তথা গায়িকা। এছাড়া সমাজকর্মী হিসেবেও তাঁর পরিচিতি ছিল।
বিয়ের দুই বছর পর কিশোর কুমার ( Kishor kumar ) এবং রুমার কোলে আসে তাঁদের সন্তান অমিত কুমার। ছেলে হওয়ার পর কিশোর চেয়েছিলেন রুমা বাড়িতে থেকেই যেন ছেলের দেখাশোনা করেন। কিন্তু রুমা নিজের স্টারডমকে ছাড়তে চাননি। সেখান থেকে শুরু হয় তাঁদের সম্পর্কের অবনতি। বিয়ের ৮ বছরের মাথায় নানা কারণে বিবাহবিচ্ছেদ হয় কিশোর ও রুমার।
এরপর ১৯৬০ সালে অভিনেত্রী মধুবালাকে বিয়ে করেন কিশোর ( Kishor kumar )। যদিও সূত্রের খবর, রুমার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আগে থেকেই নাকি মধুবালার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যান কিশোর কুমার। দ্বিতীয় বিয়ের পরও দাম্পত্য সুখের হয়নি কিশোরের। বিয়ের একমাস পরে হঠাৎই গুরুতর অসুস্থতার কারণেই নিজের বাংলোয় ফিরে যান মধুবালা। এরপর ১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে হৃদপিন্ডের সমস্যায় প্রয়াত হন মধুবালা।
এরপর আবার মধুবালার মৃত্যুর বেশ কয়েক বছর পরে ১৯৭৬ সালে আরও এক বলি অভিনেত্রী যোগিতা বালিকে বিয়ে করেন কিশোর কুমার ( Kishor kumar )। এটি ছিল তাঁর তৃতীয় বিয়ে। কিন্তু সেই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি কিশোরের। বিয়ের ২ বছরের মাথাতেই সম্পর্ক ভেঙে যায় তাঁদের। যদিও এর পিছনে কারণ ছিলও মিঠুন চক্রবর্তী। একসঙ্গে ‘খোয়াব’ ছবির শুটিংয়ে মিঠুনের সঙ্গে আলাপ হয় যোগিতার। এবং তখনই মিঠুনের প্রেমে পড়ে যান যোগিতা। আর তারপর কিশোরের থেকে দূরে সরে আসেন যোগিতা। একসময় মিঠুনের জন্য নাকি গান গাইতেও অস্বীকার করেছিলেন কিশোর কুমার।
এতবার সম্পর্ক ভাঙা গড়ার পর শেষে কিশোরের ( Kishor kumar ) জীবনে আসেন লীনা। বিয়ের ১১ মাসের মধ্যে প্রথম স্বামীকে হারিয়েছিলেন লীনা। তারপর কাজের সুবাদেই আলাপ হয় কিশোরের সঙ্গে। ধীরে ধীরে একে অপরের সঙ্গে মন বিনিময়ও হলেও ২১ বছরের বড় পাত্র তার উপর ৩ বার বিয়ের, এত কিছু জানার পর তাঁদের বিয়েতে মত ছিল না লীনার পরিবারের।
তারপর লীনার পরিবারের মত নিয়ে ১৯৮০ সালে যোগিতা বালার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর লীনাকে বিয়ে করেন কিশোর কুমার ( Kishor kumar )। বিয়ের ২ বছর পর জন্ম হয় সুমিত কুমারের। সুমিতের বয়স যখন ৫, ১৯৮৭ সালে ১৩ অক্টোবর মারা যান কিশোর কুমার। জীবনের এই কঠিন পরিস্থিতিতে লীনার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কিশোর কুমারের প্রথম স্ত্রী রুমা এবং তাঁর সন্তান অমিত কুমার। তিনিই ছায়ার মতো পাশে ছিলেন সুমিতের।