Star Jalsha: ‛ইষ্টিকুটুম’ থেকে ‛বধূবরণ’! কূটকাচালি-পরকীয়ার বাইরে বেরিয়ে জলসা কাঁপিয়েছে যে সিরিয়ালগুলি

পায়ে পায়ে জলসার ( Star jalsha ) চোদ্দ বছরের পথ চলা। এর মাঝে বিনোদনের ঝুলি নিয়ে এসেছে একাধিক ধারাবাহিক। কিন্তু মানুষের মনে শিলমোহর এঁকে দিয়ে গেছে এমন ধারাবাহিকের সংখ্যা বেশ কয়েকটি। মানুষের স্মৃতিতে জলছাপ আঁকা এই ধারাবাহিকগুলি জনপ্রিয় হয়েছে কখনও অভিনেতাদের চোখ ধাঁধানো অভিনয়ে কখনও বা ভিন্ন স্বাদের গল্পের জন্য। বর্তমানে জলসায় যখন নতুন পুরানোর দ্বন্দ্বে বাতিল হচ্ছে একাধিক ধারাবাহিক। আবার সঠিক স্লটের অভাবে নাকি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না ধারাবাহিকগুলি। তখন নস্টালজিক সিরিয়াল প্রেমীদের নিয়ে যেতে চাই সেইসমস্ত দিনে যখন একাধিক ধারাবাহিক টপ টু বটম যে কোনও স্লটেই মানুষকে আকর্ষণ করেছে টিভি পর্দার দিকে। জলসার ১৪ বছরের ইতিহাসে স্লটগুলিতে সবথেকে সাফল্য পাওয়া ধারাবাহিক —
ইচ্ছেনদী ( Ichchenodi ):
ইচ্ছেনদীর ( Ichchenodi ) স্রোতে ভেসে গিয়েছিল সিরিয়াল প্রেমীরা। ২০১৫ সালে বিকেলে ৫.৩০ টিভি পর্দায় চোখ রাখলেই দেখা যেত অনুরাগ-মেঘলার মান-অভিমান ভরা রোমান্টিক প্রেমের দৃশ্য। বিক্রম চ্যাটার্জী, সোলাঙ্কি রায়, শ্রীতমা ভট্টাচার্য এরা মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। দুই বোনের গল্পের মধ্যে থেকে উঠে এসছিল ত্রিকোণ প্রেমের ছবি।
বধূবরণ ( Bodhuboron ):
সন্ধ্যা ছ’টায় মা কাকিমারা টিভিতে চোখ রাখলেই দেখতে পেতেন ‘বধূবরণ’ ধারাবাহিক। বেশ কিছু জনপ্রিয় অভিনেতা অভিনেত্রীকে নিয়ে শুরু হয়েছিল ধারাবাহিক। গল্পে যদিও অত্যাধুনিক কিছু ছিল না, কিন্তু শান্ত ধীর স্থির লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে কীভাবে একটি পরিবারকে বেঁধে রাখে সেই নিয়ে সেজে উঠেছিল বধূবরণ ধারাবাহিক। প্রমিতা চক্রবর্তী ছিলেন বধূবরণের বধূ, বিপরীতে ছিলেন গৌরব চ্যাটার্জী। কনক চৌধুরী ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্ররা ছিল ধারাবাহিকে
ইষ্টিকুটুম ( Ishti kutum ):
সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার স্লটে সেরা ধারাবাহিক ছিল ইষ্টিকুটুম ( Ishti kutum ) । গ্রাম্য সাঁওতালি মেয়ের করুণ কাহিনীতে মজে ছিল আমজনতা। বাহামানির গুণগানে ছেয়ে গিয়েছিল সারা বাংলা। বাহার অর্থাৎ রনিতা অভিনয় করেছিলেন , তার বিপরীতে ছিলেন ঋষি কৌশিক।
বৌ কথা কও’ ( Bou kotha Kao ):
‘বৌ কথা কও’- এর মৌরি নিখিলের প্রেম সংসার সুখ দুঃখের কাহিনীকে ভালোবাসতেন বাংলার মানুষ। গ্রামে গিয়ে হঠাৎই মৌরির সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় নিখিলের। বাড়ি এনে গ্রামের মেয়ে মৌরি কীভাবে শহরের সঙ্গে মানিয়ে নেয় সেই গল্প তুলে ধরেন।অভিনেত্রী মানালির যাত্রার শুরু এই ধারাবাহিকের হাত ধরে।
‘এখানে আকাশ নীল’ ( Ekhane Akash Neel ):
সাড়ে সাতটার স্লটে চলা ‘এখানে আকাশ নীল’ ( Ekhane Akash Neel ) ধারাবাহিকটি কালজয়ী ধারাবাহিকের তালিকার অধীনে থাকবে নিঃসন্দেহে। ডাক্তার উজান ও হিয়ার গল্প নিয়ে হয়েছিল ধারাবাহিক। উজান হিয়ার রসায়ন এতটাই জনপ্রিয় হয় যে এর দ্বিতীয় পর্ব আনে জলসা। প্রথম পর্বে অভিনয় করেছিলেন ঋষি কৌশিক, ও অপরাজিতা ঘোষ দাস।
ভালোবাসা.কম ( Bhalobasa. Com ):
এই একই স্লটে আরও একটি ধারাবাহিক মানুষের ভালবাসা পায় ‘ভালবাসা ডট কম’। রাজা ও মধুবনী এই ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র । ওম ও তোরা দুজন তরুণ তরুণীর ভালোবাসার গল্পে জমে ওঠে জলসার সন্ধ্যা।
‘মা’ ( Maa ):
রাত আটটায় বাড়ির প্রত্যেক সদস্যের চোখ ভিজিয়ে দিত এক ধারাবাহিক। এমন কোন মানুষ ছিল না যিনি এই ধারাবাহিকে চোখ রাখেনি। ছোট্ট মেয়ে ঝিলিকের হারিয়ে যাওয়া এবং মায়ের কাছে ফিরে আসার কাঁটা বিছানো পথের যন্ত্রণা দর্শকদের মন ভারাক্রান্ত করত। মায়ের জন্য কান্না থেকেই নাম হয়েছিল ‘মা’ ( Maa )
কিরণমালা ( Kiranmala ) :
কিরণমালা আটটার স্লটে চলা অন্যতম ধারাবাহিক। রূপকথার ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই ধারাবাহিক গ্রাম বাংলায় পেয়েছিল ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
বোঝেনা সে বোঝেনা ( Bojhena se Bojhena ) :
সাড়ে আটটায় ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’ ধারাবাহিক জনমানসে তৈরি করেছিল ব্যপক জনপ্রিয়তা। পাখি অরন্যর গভীর প্রেমের রঙ লেগেছিল দর্শকদের মনে। ইয়াস দাশগুপ্ত ও মধুমিতার জনপ্রিয় জুটি আজও সর্বাধিক জনপ্রিয়তার তালিকায়।
ওগো বধূ সুন্দরী ( Ogo Bodhu Sundori ):
রাত ন’টার ” ওগো বধূ সুন্দরী” সেযুগের অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক। মিঠাইয়ের সঙ্গে রয়েছে অভূতপূর্ব মিল। সেখানেও ছিল পারিবারিক বন্ধনের গল্প। এক বাঁধন ছাড়া মেয়ে ললিতা কীভাবে শ্বশুর বাড়ির পরিবারে এসে মানিয়ে নিল।
জলনুপূর ( Jol nupur ):
‘জলনুপূর’ ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে লাভলি মিত্র ও সৌপ্তিক চক্রবর্তী থাকলেও গুনী তারকাদের গুণে জমে উঠেছিল ধারাবাহিক। ছিলেন অপরাজিতা আঢ্য, পীযূষ ঘোষাল, সাবিত্রী চ্যাটার্জীর মতো অভিনেতা অভিনেত্রীরা।
‘তোমায় আমায় মিলে'( Tomay Amay Mile ):
রাত দশটায় জমে উঠেছিল ‘তোমায় আমায় মিলে'( Tomay Amay Mile ) ধারাবাহিক। রুষা চ্যাটার্জী, রিজু বিশ্বাস ছিলেন মুখ্য চরিত্রে। হোটেলের মালিকের সঙ্গে আধুনিকা স্ত্রীর সম্পর্ক, তার আই পি এস হয়ে ওঠার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছিল এই ধারাবাহিক। দর্শক মনে দাগ কেটেছিল তাদের দাম্পত্যের রসায়ন। তবে সবচেয়ে বেশি দাগ কেটেছিল ‘তোমায় আমায় মিলে’ গানটি যআ আজকের যুগেও সমান প্রাসঙ্গিক।
খোকাবাবু ( khokaBabu ) :
‘খোকাবাবু’ প্রতীক সেন আর তৃণা সাহার দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প নিয়ে তৈরি। মজাদার এই ধারাবাহিকে ছিল হাজার রকম ট্যুইস্ট। সাড়ে দশটায় খোকাবাবু দেখতে উৎসাহী থাকত দর্শক।