Tathagata Mukherjee: অচেনা লাল শাড়ির হাত ছুঁয়ে যাওয়া, দশমীর সিঁদুর খেলা! অতীতেই মন পড়ে আছে তথাগতর

পুজোর এই যে এত উন্মাদনা কেন বলুন তো? মাতৃ প্রতিমা তো সকলের ঘরেই থাকেন। সারাবছর পূজিতা হন দেবী। তবু যখন বিশালাকায় এক মাতৃমূর্তি মন্ডপ আলো করে বসেন। তখন এক লহমায় হাজার বাতি জ্বলে ওঠে। দুঃখ গুলো নিংড়ে নিয়ে নির্মল আনন্দ টাকে বয়ে নিয়ে হাতে গোনা পাঁচটা দিন। তবে এর মাঝেও থেকে যায় একটা হারিয়ে ফেলা বেদনা। কোথাও যেন উল্লাস আর উৎসবের মাঝে পূজোর যে ছাপসা ধূপের গন্ধ, পাড়ার মোড়ে জ্বলা ডিম লাইট, ছোট ছেলে মেয়েদের হাতে ক্যাপ বন্দুক, সদ্য বসা রোল – চাউমিনের দোকান, পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণ, চতুর্থী পঞ্চমীতে পাওয়া ছিটের জামার গন্ধ কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। যারা বহুদিন ধরে সাবেকি পুজো দেখে কাটাচ্ছেন তাদের কাছে ছন্দ কাটছে পুজোর। আর এই দলেই নাম লেখালেন অভিনেতা তথাগত।
অভিনেতার মতে, তিনি পরিবর্তন বা প্রগতির বিরোধী নন কিন্তু প্রতিযোগিতায় আপত্তি রয়েছে তার। এখন থিম পুজোর দাপটে কলকাতার পুজোর আমেজ পুরোটাই পাল্টে গেছে। এখন বিজ্ঞাপন বা দেখনদারির বেশি আধিপত্যের মাঝে পুজো পুজো গন্ধটা সম্পূর্ণ মেকি হয়ে গেছে। ঠাকুর দেখা হয়ে গেছে প্যান্ডেল হকিং, পুজোর বাজার হয়েছে পূজা ‘স্পেশাল অফার এন্ড সপিং’, পাড়ার আড্ডা ঢাকা পড়ছে ‘হ্যাসটাগ পুজো সর্টেড আর সেলফির দাপটে’, এমনকী পূজায় মায়ের হাতের রান্না বা পাড়ার ভোগ ছেড়ে নামী দামী রেস্তোরাঁর ভেজালের কারবারিও একেবারেই পছন্দ নয় তাঁর।
এখনও তথাগতর মন টা শহর ছেড়ে গ্রামেই পড়ে থাকে। যেখানে আজও আবেগকে ছাপিয়ে যায়নি জাঁকজমক।গ্রামের পুজোয় আড্ডা মারা, গল্প, খাওয়া-দাওয়া, ঠাকুর দেখা এইগুলো এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না শহরের পরিমন্ডলে। আসল পুজোকে আজও ধরে রেখেছে গ্রাম। গ্রামের পুজোর কথা বলতেই মনে পরে সহজ সারল্য ভরা জীবন। যে জীবন অনায়াসে পেরিয়ে এসেছেন তথাগত। তখন পাড়ার সুন্দরী মেয়েদের, বন্ধুদের বা বোনদের সঙ্গে গানের লড়াই খেলায় মেতে থাকতেন। দশমীতে অজানা কেউ এসে হঠাৎ করে গালে সিঁদুর লাগিয়ে দিত।, আর অঞ্জলি দেওয়ার ভিড়ের মধ্যে কোন লাল শাড়ির হাতটুকু ছুঁয়ে দেওয়া,এগুলোই অমূল্য স্মৃতি হয়ে রয়েছে তথাগতর কাছে। দাম্পত্য প্রেমের এক সুগভীর বিচ্ছেদ ঘটেছে এই এক বছরে। গত বছর দেবলীনা ছিলেন সঙ্গে। এবার স্মৃতি ঝুলি কাঁধে নিয়েই পুজোর ক’দিন কোন পাহাড়ের কোলে হারিয়ে যাবেন তথাগত।