Lakshmi Puja: লক্ষ্মীদের হাড় জ্বালাতে বাংলা ধারাবাহিকের সিদ্ধহস্ত অলক্ষ্মীরা! আপনাদের মতে সেরা কে?

আলোর বিপরীতে যেমন অন্ধকার। তেমনই লক্ষ্মীর উল্টোদিকে থাকেন অলক্ষ্মীরা। সংসারে অলক্ষ্মীরা না থাকলে কে আর বুঝত লক্ষ্মীর মর্ম। বাংলা ধারাবাহিকে দাপিয়ে রাজত্ব করেন অলক্ষ্মীরা। আর লক্ষ্মীরা সংসারে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় আরও অশান্তি। তাদের জীবন একেবারে হাড় হিম করতে একটা সুযোগ ছাড়েন না। আবার কুলোর বাতাস সহযোগে তাদের বিতাড়িত করেন ধারাবাহিকের লক্ষ্মীমন্তরা। শ্রীময়ী,খড়ি,উর্মিরা তো তাই এত প্রাণপ্রিয় হয়ে ওঠেন দর্শকের। তেমনি অলক্ষ্মীরা হয়ে ওঠেন চোখের বিষ। অভিনয় দিয়ে তারা প্রমাণ করে দেন যুগে-যুগে শুভ অশুভের দ্বন্দ্ব চলবে। আসুন আজ লক্ষ্মীপুজোর পূণ্য লগ্নে যারা লক্ষ্মীদের উপস্থিতিকে এত উজ্জ্বল করে তুললেন সেইসব অলক্ষ্মীদের সঙ্গে একবার সাক্ষাৎ করে নিই:
স্বাগতা মুখোপাধ্যায়: থিয়েটারের মঞ্চ থেকে সিরিয়ালের পর্দা জাঁদরেল শাশুড়িদের তালিকায় এক নম্বর তিনি। খল চরিত্রে আর কূটনৈতিক চাল দিতে যার জুরি মেলা ভার। ‘দুর্গা’ সিরিয়ালের ‘দামিনী’কে আজও ভুলতে পারিনি দর্শক। পটল কুমারকে একেবারে হাড় জ্বালিয়ে ছিলেন তেমনই রানুকে লটারি নিয়ে একেবারেই শান্তিতে থাকতে দেননি। সরাসরি মা লক্ষ্মীর সঙ্গে লড়াইতে নেমেছিলেন। তান্ত্রিক চরিত্র থেকে রাক্ষসী, সব চরিত্রেই যিনি নিজেকে খল প্রমাণ করতে অব্যর্থ। এখনও অধিকাংশ ধারাবাহিকের পরিচিত মুখ অভিনেত্রী স্বাগতা মুখোপাধ্যায়।
মৌমিতা গুপ্ত: অভিনেত্রী মৌমিতা গুপ্ত খল চরিত্রে তিনি একেবারে অনন্যা। চোখের চাহনি আর বাঁকা কথার ধরণ নায়িকাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করতে যিনি একাই একশো। ‘বউ কথা কও’, ‘ভানুমতীর খেল’ তাঁর সেরা কয়েকটি কাজের তালিকায়। ছেলের সংসারে আগুন লাগাতেও যিনি দুবার ভাবেন না তিনি মৌমিতা গুপ্ত। যদিও সম্প্রতি নিজেকে লক্ষ্মীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি ‘জগদ্ধাত্রী’ ধারাবাহিকে বেশ ইতিবাচক চরিত্রে রয়েছেন তিনি।
রীতা দত্ত চক্রবর্তী: সারাজীবন ধরে শুভ- অশুভ দুই চরিত্রে সমান তালে অভিনয় করে গেছেন। এক ধারাবাহিকে হয়তো ভালো মানুষের চরিত্র করতে করতে কখন যে খল বুদ্ধি ভর করে তাকে তা বোঝা ভারী মুশকিল। ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে যেমন ছিলেন একেবারে মাটির মানুষ আবার এখন তুবড়ির জীবনকে ছাড়খাড় করে দিতে তিনি একবারে নাছোড়বান্দা। ‘উড়ন তুবড়ি’র জাঁদরেল শাশুড়ি হয়ে এক দিকে পারিবারিক ব্যবসা, অসুস্থ স্বামী, অন্য দিকে ছেলে অর্জুনকে হাতছাড়া না করার প্রবল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে যতই ভালো চরিত্রে অভিনয় করুন না কেন, দর্শক তাকে খল চরিত্রেই দেখতে চান বারংবার।
চান্দ্রেয়ী ঘোষ: অলক্ষ্মী, ডাইনি,মনসা সমস্ত রকম খল চরিত্রে একেবারে সিদ্ধহস্ত। খলচরিত্রই এখনও পর্যন্ত একনাগাড়ে করে চলেছেন অভিনেত্রী চান্দ্রেয়ী। এক ডাকে সকলেই তাকে চেনে। পোশাকেও বৈচিত্র্য এনে ‘সু এবং কু’ এর পার্থক্য নির্ধারণ করেন তিনি। বিশেষত রানি কটকটি কে তো আজও ভোলেনি দর্শক। মনসা চরিত্রেও পেয়েছেন একছত্র প্রশংসা। অট্টহাসি আর হাত নাড়িয়ে বাঁকা কথার মায়া যাদু তিনি ভালোই পারেন। বর্তমানে তিনি ভন্ড ‘শৈল মা’ চরিত্রে একেবারে দেবী অংশ গৌরির সঙ্গে নেমেছেন লড়াইতে। তবে বাস্তবে তাকে দেখলে মন মজতে বাধ্য দর্শকের।অলক্ষ্মীও যে এত সুন্দর হয়, তা অভিনেত্রী যেন প্রমাণ করে ছেড়েছেন।
ঊষসী চক্রবর্তী: এককথায় তিনি ঊষসী নন, সারা বাংলা তাকে একডাকে চেনে ‘জুন আন্টি’। ধারাবাহিক শেষের পরেও দর্শক জুন আন্টিকে ভুলতে পারছে না মোটেই। এমনকী কাউকে খল প্রমাণ করতে তাকে ‘জুন আন্টি’ বলে মজা করাও হচ্ছে। একটি চরিত্রে এতোটাই ছাপ ফেলেছেন অভিনেত্রী। সংসারের আসল অলক্ষ্মী বলতে যা বোঝায়, সেটা বোধ হয় জুন আন্টি দেখিয়েছিলেন চোখে আঙুল দিয়ে। অন্যের স্বামীকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজের স্বামী করতে এতটুকু পিছ পা হননি তিনি। তাঁকে নিয়ে মিমে ছেয়ে গিয়েছিল সে সময়। বাস্তবের ঊষসী কিন্তু একেবারে উল্টো, উচ্চ শিক্ষিতা,সুন্দরী, একজন সুন্দর মনের অধিকারী।
সুদীপ্তা বন্দ্যোপাধ্যায়: সুন্দরী তন্বী অথচ অবলীলায় করেন দাপুটে খল চরিত্র গুলি। রাণী মণিমল্লিকাকে দেখে এক নজরে মনেই হয় না খলনায়িকা তিনি। তবে ‘সাত ভাই চম্পা’ সিরিয়ালে এই রূপেই সুদীপ্তা নজর কেড়েছেন সকলের। এখনও দর্শকের মনে বাজে সেই উচ্চকিত হাসির শব্দ।
রুকমা রায়: এক অনবদ্য ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছেন রুকমা। তিনি একদিকে নায়িকা অপর দিকে খল নায়িকা। ‘বাঘ বন্দী’ খেলা ও ‘প্রতিদান’ এ ডাইনির চরিত্রে নজর কেড়ে ছিলেন অভিনেত্রী রুকমা। প্রশংসা পেয়েছেন আদর্শ মেয়ে বা বউমার চরিত্রেও। বর্তমানে অবশ্য ‘লালকুঠি’ ধারাবাহিকের অনামিকাকে সকলে অত্যন্ত স্নেহ করেন। এক পরিনত অভিনেত্রী বলে মনে করেন সকলে।
মিশমি দাস: অভিনয় শুরু করেছিলেন লক্ষ্মীমন্ত হিসেবে। রাজযোটকের ব্যাপক সাফল্য।তারপর প্রেমের ফাঁদে থেকে খানিক অনিশ্চয়তা।তাঁর সাময়িক বিরতির কথা গুঞ্জন তুলেছিল প্রতি গৃহস্থ ঘরেই। তবে এবারে কোমড় বেঁধে খল চরিত্রে ঊর্মির আনন্দের সংসারে আগুন লাগাতে ফিরে এসেছিলেন তিনি। সাত্যকির সঙ্গে সংসার করাতে উর্মিকে অতিষ্ঠ করতে, কানে কু মন্ত্রনা দিতে একেবারে ওস্তাদ।