Godard-Mrinal Sen: সিনেমা ব্যাকারণকে নতুন কাঠামো দিয়েছেন যাঁরা, এক ফ্রেমে মৃণাল-গোদার, ভাইরাল ছবি

কলকাতা: সমাজ ও সামাজিক ধারা ছিল তাঁদের ছবির পরিচয়। চিরকাল এনারা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গিয়েছেন বর্তমানের পরিস্থিতিকে। বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে একেবারে ভিন্ন চলচ্চিত্রের (Cinema) ধারাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এই দুই পরিচালক (Director)। ভৌগলিক অবস্থানে তাঁদের কর্মস্থান দুর থেকে বহুদূরে হলেও কর্ম একেবারে একে অপরের সাথে সম্মিলিত। একদিকে বাংলার তথা ভারতের নতুন ধারার সিনেমার রূপকার মৃণাল সেন (Mrinal Sen) আর অন্যদিকে ফ্রান্সের (france) নিউ এজ ছবির জনক জঁ লুক গদার (Jean-Luc-Godard)।
দু’জনেই প্রয়াত। একদিকে গদার বেছে নিয়েছেন ‘অ্যাসিস্টেড সুইসাইড’ (Assisted Suicide) আর ওদিকে মৃণাল বার্ধক্যজনিত রোগে প্রয়াত হয়েছেন বছর খানেক আগে। তবু বহু বছর আগে এই দুই মহারথীর সাক্ষাৎ হয়েছিল কোনও এক বিখ্যাত অনুষ্ঠানে। আর জঁ লুক গোদার ও মৃণাল সেনকে (Jean-Luc-Godard and Mrinal Sen) এক ফ্রেমে বন্দি করেছিল কোনও এক চিত্রগ্রাহক। কাল এই বিশ্ববরেণ্য পরিচালকের মৃত্যুর পর একটি ছবি শেয়ার করেছেন মৃণাল-পুত্র কুণাল সেন (Kunal Sen)।
পরিচালক হিসেবে মৃণাল এবং গদার দুজনেরই কর্মজীবনের প্রথম অধ্যায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত। একদিকে মৃণাল সেন ‘পদাতিক’, ‘কলকাতা ৭১’য়ের মতো ছবি পরিচালনা করে উস্কে দিয়েছিলেন আলোচনার মেঘ। তেমনই, ১৯৬০ সালে গোদারের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি ‘ব্রেথলেস’ জন্ম দিয়েছিল নতুন এক সিনেমার ভাষা। এরপর ‘ম্যাস্কুলিন ফেমিনিন’, ‘দ্য লিটল সোলজার’, মেড ইন ইউ এস এ’-এর মতো একের পর এক কালজয়ী ছবি। সিনেমার নিজস্ব ভাষা তৈরিতে বিশ্বসেরা পরিচালকদের অন্যতম জঁ-লুক গোদার। অনেক পরিচালকের কাছেই তিনি ছিলেন অনুপ্রেরণা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দুই মহারথী গদার ও মৃণালের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, সে সত্তরের দশকের গোড়ার কথা। কলকাতায় একটি রেট্রোস্পেক্টিভ চলাকালীন কুণাল প্রথমবার গোদারের ছবি দেখেন। অল্পবয়সী কুণালের সে সময় গদারের ছবি বোঝা বেশ কষ্ট সাধ্যই ছিল। কিন্তু এখনও তাঁর মনে আছে তিনি একেবারে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। ‘বাবার সঙ্গে তাঁর এই ছবিটি আমার কাছে রয়েছে’। আর তাঁর শেয়ার করা এই ছবি দেখে একেবারে নস্টালজিক হয়ে পড়েছেন সিনেমাপ্রেমীরা।
গদার নাকি বেছে নিয়েছেন নিষ্কৃতি মৃত্যু। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থাকে এমনই জানিয়েছেন গদারের আইনজীবী। এদিকে বিশ্ববাসীর প্রশ্ন যে, অ্যাসিটেড সুইসাইড ওরফে নিষ্কৃতি মৃত্যু কী? ইংল্যান্ডের ন্যাশনা হেলথ সার্ভিস এ সম্বন্ধে জানাচ্ছে, শারীরিক ভাবে সংকটজনক কোনও ব্যক্তিকে কষ্ট থেকে নিজেকে নিষ্কৃতি বা মুক্তি দেওয়াই হল নিষ্কৃতি মৃত্যু। অবশ্য এক্ষেত্রে রোগী কাছের মানুষের সহায়তা নিয়েই এই কাজ করেন। তবে ফরাসি পত্রিকা ‘লিবারেশন’এর একটি প্রতিবেদনে গদারের নিকটাত্মীয়ের কথা, “উনি অসুস্থ ছিলেন না। বরং ক্লান্ত ছিলেন। তাই নিজেই নিজের জীবন শেষ করেছেন। এটি তাঁর একান্ত নিজস্ব সিদ্ধান্ত।”