Byomkesh Hotyamancha: নকশাল আন্দোলনে দেশ জুড়ে বিপ্লবের ডাক! রঙ্গমঞ্চে খুন সত্য কি খুঁজে বের করবে ব্যোমকেশ?

জয়িতা চৌধুরি,কলকাতাঃ যবনিকা পতনের আগে মঞ্চে খুন! রক্ত মাখা নিথর মৃতদেহ। সেই সঙ্গে টান-টান উত্তেজনা। প্রায় চার বছর পর ব্যোমকেশকে পর্দায় নিয়ে ফিরলেন পরিচালক অরিন্দম শীল ( Arindam Sil )। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের ‘বিশুপাল বধ’-এর অসমাপ্ত কাহিনি অবলম্বনে তৈরি এই গল্পের সম্পূর্ণতা দিয়েছেন ছবির পরিচালক ও পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। অজানা এই গল্পের শেষ দেখতে তাই দর্শকের কৌতূহলও ছিল দেখার মতো।

১৯৭১-এর নকশাল আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তৈরি এই ছবিতে প্রাধান্য তৎকালীন সময়ের থিয়েটার জগৎ। গল্পের ধাঁচ চেম্বার ড্রামা হওয়ার সুবাদে সত্তরের দশকের সময়কাল তুলে ধরা সহজ হয়েছে। তবে দীর্ঘ সংলাপগুলিতে দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হলেও, দক্ষ অভিনেতাদের অভিনয় শৈলীতে তা যেন অনেকটা সহজ হয়ে গেছে। সত্তরের দশকে বাংলা থিয়েটারে তখন সবে সবে ক্যাবারে নৃত্যশিল্পীর আগমন ঘটছে। তাই শিল্পীরা শিল্প ভুলে সহজ পথ আঁকড়ে ধরতে চাইছেন যেনতেন প্রকারে।

b hotyamanv=cha q1

ছবির শুরু হয় সাদা-কালো দৃশ্যে। শুরুতেই দেখা যায় হত্যা কাণ্ড। আপন শ্যালিকাকে বিশ্বনাথ পালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে কালীচরণ। তারপর মালতীকে খুনের অপরাধে কালীচরণের ১৪ বছর কারাদণ্ড হয়। এটা দর্শক শুরুতেই জেনে যায়। কাট টু ১৯৭০। প্রতিবেশী প্রতুলবাবু আসেন ব্যোমকেশ- সত্যবতীর কেয়াতলার বাড়িতে। গান্ধর্ব থিয়েটারে চলছে ‘কীচক বধ’ পালা, আর তাই সবাই সন্তানসম্ভবা সত্যবতীকে নিয়ে সবাই যান থিয়েটার দেখতে। আর সেখানেই নাটক চলাকালীন মঞ্চেই মৃত্যু হয়ে এক অভিনেতার। যথারীতি দর্শক আসনে থাকা ব্যোমকেশ নেমে পরে সত্যের অন্বেষণে।

সত্যের অন্বেষণ করতে গিয়ে ব্যোমকেশ ও অজিতের ( সুহোত্র ) সামনে আসে থিয়েটারের স্ক্রিপ্টের থেকেও বেশি নাটকীয় ঘটনাসমূহ। যাতে রয়েছে প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা, সম্পর্কে তঞ্চকতার আখ‌্যান, অর্থ, যশ, নারীর লোভ থেকে শুরু করে আরও কত কি! তবে চিত্রনাট্য প্রচণ্ড স্লথ। তবে আবির-সোহিনীর ব্যোমকেশ- সত্যবতী জুটি মিক্সড ডবলস জুটির মতোই ভাল দেখিয়েছে। অঞ্জন দত্তের আবির- উষশীর থেকেও বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে অরিন্দম শীলের আবির-সোহিনীর জুটি। যদিও অঞ্জন দত্ত বাংলা ছবিতে মূলধারার ব্যোমকেশ সিরিজের পথিকৃৎ,ততসত্ত্বেও ছবির পরিচালক বাঁধাধরা গত থেকে বেড়িয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছেন বিভিন্ন চরিত্রগুলি নিয়ে। ইতিপূর্বে, অজিতের চরিত্রে পরিচিত মুখ শাশ্বত চ্যাটার্জি ও রাহুল ব্যানার্জির বদলে আনা হয়েছে সুহোত্র মুখোপাধ‌্যায়কে। তবে অজিত চরিত্রে বেশ মানিয়েছে অভিনেতাকে।

এছাড়াও ভৃত্য পুঁটিরামকে বদলে দিয়ে এসেছেন নতুন অভিনেতা। সুলোচনার মতো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে পাওলি দাম এক কথায় অনবদ্য। তৎকালীন দাপুটে অভিনেত্রীর রাগ, হতাশা, প্রেম সবটুকু তুলে এনেছেন পাওলি তাঁর ছলছল চোখে। তবে ছবির শেষ ভাগ গোরুরগাড়ি মতো এগোলেও বলা বাহুল্য, পরিচালক ক্লাইম‌্যাক্স পর্যন্ত দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন।




Back to top button