Sandhya Roy: জীবন সন্ধ্যায় নিঃসঙ্গ সন্ধ্যা রায়! ভেঙেছিল সংসার, নেপথ্যে কি সেই তৃতীয় ব্যাক্তি?

জীবন নদীতে বয়ে গেছে অনেক জল। ধীরে ধীরে রঙিন পর্দা,স্বামী,সংসার ছেড়ে এসে উপস্থিত হয়েছেন জীবন সায়াহ্নে। নিঃসঙ্গ একা জীবনে কাটছে জীবনের শেষ কতগুলো দিন। একসময় ছিলেন বাংলার স্বর্ণযুগের নায়িকা। সেই যুগ নেই। মানুষের ঢলে পড়েছেন অস্তাচলে। আগেই হারিয়েছিলেন সম্পর্ক। এবার হারালেন স্বামীকেও। কে সেই জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী? সন্ধ্যা রায়।
জন্ম থেকেই যার ভাগ্যে লেখা হয়েছিল নিঃসঙ্গতা। ১৯৪১ সালে নবদ্বীপে জন্ম গ্রহন করেন। তারপরই বাবা মায়ের সঙ্গে চলে যান ঢাকার যশোরে। পিতৃবিয়োগ যখন মাত্র ৭ বছর বয়স তাঁর। মাতৃবিয়োগ যখন মাত্র ১১ বছর। এরপরই মামার বাড়িতে অনাহারে অর্ধাহারে কাটতে থাকে। অনাথ ভাগ্নীকে নিয়ে তাঁর মামা আশ্রয় নেন পাইক পাড়ার এক বস্তিতে। অর্থাভাবে সন্ধ্যা রায়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। বস্তির মেয়েদের সঙ্গে শ্যুটিং দেখতে গিয়ে অভাবনীয় ভাবে নজরে পড়েন পশুপতিনাথ চট্টোপাধ্যায়ের চোখে। সেই অভিনয় জীবনে পদার্পণ। যদিও সেদিন ভীড়ের মাঝে একটি ছোট চরিত্র পেয়েছিলেন। বাকিটা স্বর্ণযুগের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে উল্লিখিত।
১৯৫৭ সালে রাজেন তরফদারের অন্তরীক্ষ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন।এরপর একে একে সত্যজিৎ রায়,তপন সিনহা, তরুন মজুমদারের মতো তামাম পরিচালকের হাতে রূপবদল হয় সন্ধ্যার। একাধিক ছবিতে নিজের অভিনয় প্রতিভার উজ্জ্বল সাক্ষর রাখেন তিনি। বাংলা হিন্দি মিলিয়ে প্রায় দু’শো ছবিতে অভিনয় করেন। তবু কেন এত একাকীত্ব অসহায়তা গ্রাস করেছিল সন্ধ্যা রায়কে?
আসলে অভিনয় জীবন যেমন উজাড় করে দিয়েছে তাকে। তেমনই ছিনিয়ে নিয়েছে বন্ধু থেকে কাছের মানুষকেও। ১৯৬৭ তে তরুণ মজুমদারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রায় এক দশক সংসার করেন তারা। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে সম্পর্কে আসে তৃতীয় ব্যক্তি। ‘সজনী গো সজনী’ ছবিতে তরুণ মজুমদারের পরিচয় হয় মহাশ্বেতা দেবীর। সম্পর্ক প্রেমে পরিণত হয়। গুঞ্জন কানে আসে সন্ধ্যা রায়েরও। সরে আসেন নিজেই। আরো কাজে নিয়োগ করে ফেলেন নিজেকে। পাঁচ বছর সাংসদের ভূমিকা পালন করে অবশেষে নিভৃত আবাসনে অন্তরালে হারিয়ে গেলেন। ২০২২ এ স্বামী তরুণ মজুমদার শেষ বিদায় নিলেন। আবার আঁধারে ডুবে গেলেন স্বর্ণ যুগের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী।