Uma dasgupta: পারিশ্রমিক ছাড়াই করেছিলেন অভিনয়! কেমন আছে ‛পথের পাঁচালির’ দুষ্টু-মিষ্টি দুর্গা?

সত্যজিৎ রায়ের একটি কালজয়ী ছবি ‘পথের পাঁচালী’ ( pather panchali ) । ১৯৫৫ সালে বানানো এই ছবিটি দর্শকের মনে গভীর ছাপ রেখে গিয়েছে। বাঙালির আবেগ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই ছবিটির সঙ্গে। তাই তো আজও এই ছবিটি দেখলে আবেগ আপ্লুত হয়ে বাঙালির চোখে আসে জল। রায়ের অনবদ্য সৃষ্টি হল অপু এবং দুর্গা। এই দুটি চরিত্রকে এত ভাল করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে তা বাক্যে প্রকাশ করা অসম্ভব। বিশেষ করে দুর্গার চরিত্র দর্শকদের মনে গভীরভাবে দাগ কেটেছে।
সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ ছবিতে ‘দুর্গা’ ( durga ) একটি অনবদ্য চরিত্র। ছবিতে আমরা তাঁর চরিত্রের এক অসাধারণ প্রতিফলন দেখতে পাই। গ্রামের অন্যান্য মেয়েদের মত ছিল না দুর্গা। গ্রামবাসীদের নজরে এক দস্যি মেয়ে ছিল দুর্গা যে তাঁর প্রতিবেশীদের গাছ থেকে ফল, ফুল চুরি করে বেড়াত। আসলে যেন প্রকৃতির মেয়ে ছিল দুর্গা। গাছে ওঠা, প্রকৃতির সংস্পর্শে নিজের অধিক সময় অতিবাহিত করা ছিল তাঁর রোজকার কাজ।
নিজের একমাত্র ভাই অপুর জীবনে বিশেষ অবদান রেখেছিল দুর্গা। অপুর ছোটবেলা থেকেই ছিল সাহিত্যিক মনোভাবপন্ন। অপু যখন পাঁচ বছর বয়স হয়, তখন থেকে সে তাঁর দিদি দুর্গার দুঃসাহসিক কার্যকলাপের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে। দিদির সাথেই অতিরিক্ত সময় অতিবাহিত হত তাঁর। দিদি দুর্গার মত অপুও প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতি ধীরে ধীরে আসক্ত হতে থাকে। দিদির জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো, গাছের ফুল-ফল পেড়ে খাওয়া, সাঁওতাল নাচ এসবই পছন্দ করতে শুরু করেছিল অপু। তবে দুর্গার অস্বাভাবিক মৃত্যু অপুর মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল।
সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ ছবিতে দুর্গার চরিত্রকে অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন উমা দাশগুপ্ত। এই ছবিটি যখন তৈরি হয়েছিল, তখন আর্থিক মন্দা চলছিল। তাই ছবির অনেক অভিনেতা কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই কাজ করেছিলেন। উমা দাশগুপ্ত তাঁদের মধ্যে একজন। এই ছবিতে তাঁর অবদান ভোলার মত নয়। ২০১৫ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন উমা দাশগুপ্ত।