No entry to Death- ৭০ বছরে এই শহরে কেউ মারা যায়নি, কারণ জানলে অবাক হবেন আপনিও
পৃথিবীর সবচেয়ে আদিম, নিষ্ঠুর অথচ অনিবার্য সত্য কী? উত্তর নিশ্চিতভাবেই সেই একমাত্র অপ্রিয় শব্দ, মৃত্যু। রবি ঠাকুর যতই বলুন “নাচে জন্ম নাচে মৃত্যু পাছে পাছে”, আসলে আমরা কেউই জ্ঞানত বা স্বেচ্ছায় মৃত্যুর সঙ্গে পরিচিত হতে চাইনা। তাইতো মৃত্যুকে এড়ানোর হাজার রকম কৌশল প্রতিনিয়ত খুঁজতে থাকি আমরা।
কিন্তু যদি সত্যিই এমন হয়? যদি আইন করেই মৃত্যুর প্রবেশ নিষিদ্ধ(No entry to Death) করা যায়? বিষয়টা শুনতে শিবঠাকুরের আপন দেশের একুশে আইনের মতো হলেও ঘটনা কিন্তু মোটেও মিথ্যে নয়। এই পৃথিবীর বুকেই এমন শহর আছে যেখানে টানা সত্তর বছর একজন মানুষও মারা যাননি। শুনে চমক লাগা অস্বাভাবিক নয়, মনে হতেই পারে যে তবে হয়তো আদৌ কোন মানুষ বসবাসই করেননা এখানে। কিন্তু সে ধারণাকেও সম্পূর্ণ ভুল ঘোষণা করে জানাতেই হচ্ছে যে এখানে আমার বা আপনার মতো সাধারণ মানুষ বসবাস করেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই শহরটা ঠিক কোথায় যেখানে মৃত্যুর পা রাখতে মানা? উত্তর হল নরওয়ে(Norway)। এমনিতে নরওয়েকে নিশীথ সূর্যের দেশ বলে এ তো সকলেরই জানা। এপ্রিল থেকে অগাস্ট মাস পর্যন্ত এই দেশে সবসময়ই সূর্য থাকে আকাশে। তবে মেরুপ্রদেশের একেবারে কাছাকাছি হওয়ায় উষ্ণতার পারদ বছরের বেশিরভাগ সময়েই নিচের দিকেই থাকে নরওয়েতে। তার ফলে মৃত শরীরের পচন এবং কবর দেওয়ার পরেও দেহ মাটির সঙ্গে মিশে যাবার প্রক্রিয়া সহজসাধ্য হয় না অতিরিক্ত ঠান্ডায়। বরং অবিকৃত থাকে দেহ।
ঠিক সেই কারণেই নরওয়ের লং ইয়ারবেন(Longyearbyen) শহরের প্রশাসনের তরফ থেকে শহরের মধ্যে মৃত্যুবরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। যদি কোন কারণে কেউ অসুস্থ হয় তবে অবিলম্বে তাকে অন্য শহরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। অন্য শহরে মারা গেলে সেখানেই তাকে দাহ করতে হয় এমনটাই নিয়ম শহরের প্রশাসনের তরফে।
লং ইয়ারবেন শহরে শেষ মৃত ব্যক্তি মারা গিয়েছিলেন ১৯১৭ সালে। তিনি ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভুগছিলেন মৃত্যুর আগে। অথচ মৃত্যুর পর আজও অবিকৃত রয়েছে তার দেহ। শহরের অস্বাভাবিক শৈত্যই এর প্রধান কারণ। এইভাবে প্রবল ঠান্ডায় মৃতদেহ অবিকৃত থাকলে সহজেই মৃত মানুষের শরীর থেকে নানারকম জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে গোটা শহরে। তাই অতিমারির হাত থেকে শহরকে বাঁচাতেই মৃত্যুর পথ রোধ করেছেন লং ইয়ারবেনের প্রশাসন।