ফিরছে মধ্যযুগীয় অন্ধকার, আফগান মহিলাদের জন্য কী কী ফতোয়া জারি করল তালিবানেরা
গত ১৫ই অগাস্ট, কাবুল তথা সম্পূর্ণ আফগানিস্তান দ্বিতীয় বারের জন্যে দখল নেওয়ার পরেই , প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহীদ জানিয়েছিলেন যে সময় এর সাথে সাথে তালিবানেরাও নাকি পাল্টেছে, নারীদের স্বাধীনতা এবং মৌলিক মানবাধিকারের কথা মাথায় রেখেই , শরিয়ত অনুযায়ী গঠন হবে নতুন আইন। এরপর দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই তালিবান দেখতে শুরু করে দিয়েছে নিজেদের হাঙ্গরের দাঁত।
প্রাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থা শরীয়াতের নিয়ম অনুযায়ী নাকি হারাম। এই কারণ দেখিয়েই প্রথমেই ফতোয়া জারি করে বন্ধ করা হয়েছে সব কো-এড স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। এরপরই গত ২৪শে অগাস্ট দ্বিতীয় দফার জারি করে সমস্ত সরকারি মহিলা কর্মচারীদের গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দেয় তালিবানেরা। আগামী নির্দেশিকা অবধি এই ফতোয়ার উলঙ্ঘন করলেই মিলবে কঠিনতম শাস্তি তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইদিকে ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলেই দেখা যাবে মহিলাদের প্রতি তালিবানদের বর্বর আচরণের সাক্ষী থেকে গোটা বিশ্ব। ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সাল অবধি প্রথম দফার তালিবান শাসন থাকাকালীন আফগানিস্তানের মহিলাদের দুর্দশার কথা কারুরই অজানা নয়, আর এই ফতোয়া সেই লম্বা লিস্টের নবতম সংযোজন।
২০০১ সালে মার্কিন সেনার হস্তক্ষেপে শেষ হয় তালিবান রাজ। তারপর আবার এক এক করে নিজেদের কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে থাকেন মহিলারা, এইভাবে কার্যত ধীরে ধীরে মুক্তি লাভ করে আফগানিস্তানের নারীসমাজ। দ্বিতীয় দফায় আফগানিস্তান দখল করার পরে, তালিবান মুখপাত্র জানান মহিলাদের স্বাধীনতা এবং কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে, কিন্তু ঠিক কুড়ি দিনের মধ্যেই তারা দেখিয়ে দিয়ে নিজেদের আসল রূপ। কর্মক্ষেত্রে ফেরত যাওয়া নিয়ে এখন যে অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে আফগানিস্তানে, তাতে একটা ব্যাপারটা পরিষ্কার যে তালিবানেরা এখনও নিজেদের সেই মধ্যযুগীও মানসিকতা এবং কট্টরপন্থী মনোভাবের বাইরে এসে সমাজব্যবস্থা চালাতে সক্ষম নয়।