Woman Lifestyle: ছেলেদের ডান দিকে তো মেয়েদের বাঁ দিকে! সামান্য পোশাকের বোতাম নিয়ে কেন এই বিভেদ?

শার্টের জনপ্রিয়তা এখন এতটাই যে পোশাক হিসাবে এটিকে নারী কিংবা পুরুষ সকলেই ধারণ করে থাকেন। অতীতে পুরুষদের মধ্যেই প্রথমে এই শার্ট পরার চলন বাড়ে। যুগের অগ্রগতির হাত ধরে আজ কেই বা নারী কেই বা পুরুষ, সকলেই আজ মানুষ। লিঙ্গের ভেদাভেদ করে আজ আর পোশাক বাছাই নয়। মন যাহা চায়, তাহাই যেন ইহ দেহে ধারণ করা যায়।
তবে নারী ও পুরুষ দু’জনেই শার্ট পরলেও এই দুই শার্টের মধ্যে রয়েছে একটি বড় পার্থক্য। পুরুষের শার্টের বোতাম থাকে ডানদিকে এবং নারীদের শার্টের বোতাম থাকে বাম দিকে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল কেন এই পার্থক্য ? শুধুমাত্রই কি ফ্যাশন নাকি নেপথ্যে রয়েছে কোনও অন্য রহস্য। তবে পুরুষ ও মহিলাদের শার্টের বোতাম আলাদা আলাদা দিকে হওয়া নিয়ে নানা জনেই নানা মত পোষণ করে থাকেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান সমাজকে আমরা পুরুষতান্ত্রিক বললেও বহু ঐতিহাসিকের মতে অতীত নাকি আমাদের এই সমাজ ছিল নারীবাদী। কিন্তু যখন থেকে সেই নারীবাদী সমাজ ধীরে ধীরে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পরিণত হতে শুরু করে তখন থেকেই নাকি এই জামার বোতামের জায়গায় পরিবর্তন দেখা যায়। আগেকার দিনে পুরুষরা ডান হাতে তরোয়াল ধরত এবং মহিলারা বাম হাতে বাচ্চা সামলাতো।
এমতাবস্থায়, যদি কখনও পুরুষদের শার্টের বোতাম খোলা বা লাগানোর প্রয়োজন হতো তখন তারা বাম হাত ব্যবহার করতেন। তাই তার সুবিধার জন্য যখন বাম হাত ব্যবহার করা হয় হিসাব মতো শার্টের ডানদিকে বোতাম থাকাই সুবিধাজনক। অন্যদিকে, নারীরা তাদের সন্তানকে বাম দিকে ধরে রাখতেন। শিশুকে খাওয়ানোর জন্য তাদের শার্টের বোতাম খুলতে ডান হাত ব্যবহার করতে হতো। তাই তাদের সুবিধার্থে মহিলাদের শার্টের বাম পাশে বোতাম তৈরি করা হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, এই বোতাম-বিতর্কে আবার যুক্ত আছে নেপোলিয়নের নামও। তিনি নাকি এমন আদেশ দিয়েছিলেন যে, নারীরা তাদের শার্টের বোতাম বাম দিকে রাখবে। প্রচলিত মত অনুসারে, নেপোলিয়ন সবসময় তাঁর জামায় একটি হাত রাখতেন। অনেক নারী তার এই পোশাকি সজ্জাকে অনুকরণ করতে শুরু করেন। যা তাঁর মোটেই পছন্দ ছিল না। ফ্রান্সের মহিলাদের এই আচরণকে ফুটতে না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই নারীদের শার্টে আরও বোতাম লাগানোর জন্য একটি আইন জারি করেন তিনি। যদিও এর কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই।
প্রসঙ্গত, আবার এও বলা হয় যে অনেক আগে নারীরা ঘোড়ায় চড়ার সময় উভয় পা একই পাশে ঝুলিয়ে বসতেন। এমতাবস্থায় বাম দিকে বোতাম রাখা হলে, বাতাস তার শার্টের ভিতরে যেত এবং বিপরীত দিকে এগোতে সহায়তা করত। এছাড়াও কিছু বিশেষজ্ঞরা মানেন শুধুমাত্র নারী ও পুরুষের পোশাক আলাদা করার জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে।