Jagadish Chandra Bose – সযত্নে বসিয়ে ছিলেন জগদীশ চন্দ্র বসু, আজ মৃত্যুর পথযাত্রী জোড়া বকুল গাছ
উলুবেড়িয়ার (Uluberia) হুগলি নদীর (Hooghly River) তীরে ফুলেশ্বর কালসাপা সেচ বাংলোয় জগদীশচন্দ্র বসুর (Jagadish Chandra Basu) নিজের হাতে বসানো দুটি বকুল গাছ (Bakul Tree) রয়েছে। যদিও তিনি কবে বসিয়েছিলেন এই গাছ দুটি, তার তথ্য সেচ দফতরেরও অজানা, তবু স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন প্রকৃতিপ্রেমিক বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু এই বকুল গাছের চারা পুঁতেছিলেন। ১৯৭১ সালে সেচ দফতরের (Irrigation Department) পক্ষ থেকে এই জোড়া বকুলগাছের পাশে একটি ফলক লাগানো হয়। আজ মঙ্গলবার ৩০ শে নভেম্বর জগদীশচন্দ্র বসুর ১৬৩ তম জন্মদিন । চলতি সপ্তাহের সোমবার দেখা গেল ফুলেশ্বরের সেচ বাংলোতে (Phuleshwar Irrigation Bunglow) জোড়া বকুলগাছের গোড়ায় বসেছে জুয়া খেলার আসর। ফলকের পাশে গড়াগড়ি খাচ্ছে মদের বোতল। গাছের পাশেই রয়েছে নোংরা ফেলার জন্য ডাস্টবিনও।
বাংলোতে মাঝে মধ্যেই পর্যটকরা এসে ভীড় করে, অশ্লীল কাজকর্মও চলে বাংলোর ভিতরে। এমনকি সন্ধ্যার পর থেকেই দুষ্কৃতী ও নেশাখোর মানুষদের আড্ডার আখড়া হয়ে উঠেছে এই স্থান। এই গাছের নীচেই শীতকালে বনভোজনের (Picnic) আয়োজন করে স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই। একবার এই বনভোজনের সময়েই বহু প্রাচীন দুর্মূল্য এই বৃক্ষের নীচে আগুন ধরিয়ে রান্না করার সময় একটি প্রাচীন গাছে আগুন লেগে যায়। পরে দমকলের সাহায্য নিয়ে তা নেভানো হয়। শীতের মরশুমে এই ফুলেশ্বরের এই বাংলোতে হাজার মানুষ পিকনিক করতে আসেন। তাঁদের কাছে মূল আকর্ষণের জায়গা জগদীশচন্দ্র বসুর স্মৃতি বিজড়িত এই জোড়া বকুলগাছ। কিন্তু সেই বকুলগাছ ধীরে ধীরে নিঃশেষের মুখে।
শোনা যায়, জগদীশচন্দ্র বসু উলুবেড়িয়ার গঙ্গা তীরবর্তী এই কালসাপা সেচ বাংলোয় বেশ কিছুদিন গবেষণা করেছিলেন। সেই সময় এই বাংলোতে থাকাকালীন এই বকুল গাছের জুড়া পুঁতেছিলেন তিনি। তাই বিজ্ঞানপ্রেমী বাঙালীর কাছে এই স্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্বও ভীষণ। এখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেচ দফতরের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বিশেষ গ্রাহ্য করা হয় না, যার কারনেই এই ঐতিহাসিক বকুল গাছের কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপ দেখতে পাওয়া যায় না।
হাওড়া জেলার বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রের (Tourists Spot) মধ্যে ফুলেশ্বর সেচ বাংলো অন্যতম। বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসে এই স্থানে ঘুরতে বা পিকনিক করতে। নভেম্বরের শুরুর দিক থেকেই বেশ কিছু মানুষ এই স্থানে ঘুরতে আসতেই শুরু করেছেন। তবে এই স্থানের ঐতিহাসিক মাহাত্ম্য এখন তলানিতে, প্রশাসনিক নজরদারির আবেদন পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দা উভয়ের পক্ষ থেকেই। তবে কবে সেই আবেদনের প্রত্যুত্তর মিলবে বা আদৌ মিলবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কায় এলাকাবাসী।