ফুটবলই ধ্যান-জ্ঞান, এই গ্রামে ফুটবলেই মেতে আট থেকে আশি! উপার্জনও খেলাতেই
কথায় আছে ‘সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল’। এই ফুটবল নিয়ে বাঙালিদের মাতামাতির শেষ নেই। গোটা বাংলাই কমবেশি ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। আই লীগ থেকে শুরু করে পাড়ার খেলার মাঠ সর্বত্রই ফুটবল নিয়ে আলোচনা শেষ হবার নাম নেয় না। অনেক এমন ফুটবলপ্রেমী রয়েছেন যারা সকাল থেকে রাত ফুটবল সম্পর্কে আলোচনাই পছন্দ করেন। তবে জানেন কি এমন এক গ্রাম রয়েছে যেখানে ফুটবল নিয়ে পাগল সক্কলে!
হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন! আট থেকে আশি এই গ্রামের প্রায় সকলেরই ধ্যান জ্ঞান এবং ধারণা শুধুই ফুটবল। এর কারণ ফুটবলই হল এই গ্রামের মানুষের কাছে চাকরি পাওয়ার একটি সহজ উপায়। এই গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যই সরকারি চাকরি করেন। আর তাদের সকলেরই চাকরি জোটে ফুটবল খেলার দৌলতেই। তাই এই গ্রামে পড়াশোনা থেকে ফুটবলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
শুনতে অবাক লাগলেও এমনই ছবি ধরা পড়ে রাজস্থানের উদয়পুরের জাওয়ার মাইনস (Zawar Mines) গ্রামে। রাজস্থানের উদয়পুরের এই গ্রামটি ফুটবলের গ্রাম বা ‘Football Village’ নামেই বেশি পরিচিত। বিগত ৪৩ বছর ধরে এখানে একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট হয় জাঁক-জমক করে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ফুটবল ছাড়া এই গ্রামে অন্য কোন খেলা হয়ই না।
এখানে ফুটবলের আসর বসলে মহিলা-শিশুসহ গোটা গ্রামের মানুষ খেলা দেখতে ভিড় জমান। ফুটবলে গ্রামের বেঁচে থাকা এবং অন্ন সংস্থানের একমাত্র উপায়। জাওয়ার এর এই গ্রামে মাত্র ২০০ টির মত পরিবার রয়েছে। তবে ৩০টিরও বেশি গ্রামের মানুষ ফুটবল ম্যাচ দেখতে ভিড় জমায়।
স্টেডিয়ামটি সম্পূর্ণ ভরে যাওয়ার পরেও, এর কাছাকাছি পাহাড়টিতেও দর্শকরা খেলা দেখতে ভিড় জমিয়ে রাখে। গ্রামের বাসিন্দা ৮০ বছর বয়সী কানুবাই বলেন, ‘পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশি মহিলা এবং শিশুরা স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যান। ফুটবলই এই গ্রামে বেঁচে থাকার একমাত্র রসদ’। করোনা মহামারির কারণে ফুটবল টুর্নামেন্টে ভাটা পড়লেও রাজস্থানের উদয়পুরের এই গ্রামটির বাসিন্দাদের ফুটবল-প্রীতি এখনও আগের মতোই অটুট রয়েছে।