Prakash Bhagat: সচীন সৌরভদের মত ভারতীয় দলে ক্রিকেট খেলে আজ চায়ের দোকান চালান প্রকাশ

মন্টি শীল, কলকাতা : কথায় আছে, ভাগ্যের পরিহাসের কাছে পরাস্ত পৃথিবীর তাবড় তাবড় নাম। আর কিছুটা এমনই ঘটনা ঘটল অসমের এই ক্রিকেটারের সঙ্গে। বাইশ গজের এই খেলোয়াড় তাঁর কেরিয়ারের সূচনা করেছিলেন রাজকীয়ভাবে। তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সুযোগ হয়নি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ( Sourav Ganguly ) সচিন তেন্ডুলকর ( Sachin Tendulkar ) খেলার। দুর্ভাগ্যবশত বর্তমানে সে এখন একটি চা এর দোকানের মালিক। আর অসমের এই প্রাক্তন ক্রিকেটারের নাম হল প্রকাশ ভগৎ ( Prakash Bhagat )। একটি সময় এই ক্রিকেটারের অধিকারে ছিল অসামান্য প্রতিভা। নিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে হ্যাটট্রিকও।
তাঁর অসামান্য প্রতিভা দেখার পর ভারতীয় ক্রিকেট দলে ( Indian Cricket Team ) একজন নেটবোলার হিসেবে ডাক পেয়েছিলেন ক্রিকেটার প্রকাশ ভগৎ ( Prakash Bhagat )। একটি সময় তাঁর স্বপ্ন ছিল যে সেও ভারতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাবেন। কিন্তু ভাগ্যের বিড়ম্বনায় বাইশগজ ছেড়ে এখন চা বিক্রেতা অসমের ক্রিকেটার প্রকাশ ভগৎ ( Prakash Bhagat )। শোনা যায়, এই প্রতিভাবান ক্রিকেটার একজন বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে বাইশগজে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। এমনকী অসমের অনুর্ধ্ব ১৭ দলের হয়ে বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে বিহারের বিরুদ্ধে হ্যাট্রিক সহ মোট সাতটি উইকেট নিজের নামে নামাঙ্কিত করেছিলেন।
খেলোয়াড়ের এই প্রতিভা দেখার পর ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হওয়া ভারতের সিরিজ খেলার সময় এনসিএ-তে ডাক পান অসমের বাঁ-হাতি স্পিনার প্রকাশ ভগৎ। জানা গিয়েছে, এরপর বিশ কিছুদিন ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে অনুশীলন করেছিলেন প্রকাশ। এমনকী নেটে অনুশীলনের সময় তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সচিন তেন্ডুলকরের বিপরীতে বল করেছিলেন তিনি। তাঁর প্রতিভা দেখার পর রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছিলেন ভারতীয় দল। যার পর ধীরে ধীরে উন্নতির পথে অগ্রসর হচ্ছিলেন প্রকাশ। সুযোগ পেয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে সময় কাটানোর।
এরপর দীর্ঘ সময় বল হাতে বাইশগজে নিজের কেরামতি দেখিয়েছেন প্রকাশ। কিন্তু আসল বিপত্তি এখনও হয়তো বাকি ছিল। সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় প্রকাশ ভগতের বাবার। যার পর সংসারের পুরো দ্বায়িত্ব এসে পড়ে প্রকাশের কাঁধে। সেই সময় কার্যত দিশেহারা হয়ে গিয়ে শিলচরে দাদার চা-এর দোকানে গিয়ে বসে যান তিনি। একজন ক্রিকেটার থেকে হয়ে উঠলেন চা-ডালপুরি বিক্রেতা। কিন্তু সেই সময়ের সিদ্ধান্ত তাকে আজও কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। এক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ বলেছেন, ‘যারা একটি সময় তাঁর সঙ্গে রাজ্য স্তরে খেলত, তাঁরা সকলেই কোথাও না কোথাও প্রতিষ্ঠিত। শুধুমাত্র তিনিই এখনও পর্যন্ত জীবন যুদ্ধে জর্জরিত।’ কিন্তু এই মন্তব্য সামনে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে, যেখান প্রায় সকলেই খেলার দরুন সরকারী চাকরি প্রাপ্ত করেছেন। সেখানে কেন প্রকাশের সঙ্গে দ্বিচারিতা। তবে খেলোয়াড়ের এই জীবন যুদ্ধের কাহিনী সামনে আসার পর চোখে জল এনেছে সকল ক্রিকেট প্রেমিদের।