Haunted Place- চারদিকে শুধু গা ছমছমে পরিবেশ, ভারতের যে ৫ টি ভুতুড়ে স্থানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ

একুশ শতকের গোড়ায় দাঁড়িয়েও ভূত আর ভগবান নিয়ে মানুষের কৌতুহল, তর্ক-বিতর্ক, চর্চার কোনও সীমানা নেই। লেখককের লেখালেখি হোক বা টলি-বলি-হলি এর পরিচালকদের সিনেমা বানানো সর্বত্রই ভূতেদের অবাধ বিচরণ। বরং ভূতেদের জন্য আবার সাধারণ মানুষের বেশ কিছু কিছু জায়গায় যাওয়া নিষিদ্ধ, এমনকি সেই নিষেধাজ্ঞা (Restrictions) আবার সরকারী শিলমোহরপ্রাপ্তও (Official Seal)। ভারতবর্ষের বিখ্যাত বেশ কয়েকটি ভুতুড়ে স্থান(Haunted Place) আছে, যেখানে সরকারিভাবে সাধারণ মানুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ, কারণ সেই সমস্ত স্থানে গিয়ে মৃত্যু ঘটেছে বহু মানুষের।
রাজস্থানের ভানগড় ফোর্ট (Bhangarh Fort)
ভারতবর্ষের বিখ্যাত ভুতুড়ে স্থানগুলির মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম নাম হল রাজস্থানের এই ভানগড় ফোর্ট। ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’ কর্তৃপক্ষ থেকে সূর্যাস্তের পর এই দুর্গের প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একদিকে গা ছমছমে নিস্তব্ধতা, আরেকদিকে প্রকৃতির নিরব সৌন্দর্যের সাথে সাথে ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে রাজস্থানের এই ‘ভুতুড়ে কেল্লা’। রাজস্থানের এই ভানগড় দুর্গে পর্যটকদের প্রবেশ অনুমতি থাকলেও তার সময়সীমা কেবল বিকেল পাঁচটা পর্যন্তই। সন্ধ্যে ছয়টার পর ‘অভিশপ্ত’ তকমাপ্রাপ্ত দুর্গে কোন মানুষের থাকা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
সুরাটের ডুমাস বীচ (Dumas Beach)
সুরাটের ডুমাস বীচ নিয়ে লোকমুখে নানান রকম কথা প্রচলিত রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, মৃত মানুষের সৎকারের পর তাদের ছাই এখানে পুঁতে ফেলা হয় বলে রাতের বেলা আজও এখান থেকে নানারকম চিৎকারের আওয়াজ শোনা যায়। এই সকল ভৌতিক ঘটনা জন্যই ‘সুরাটের ডুমাস বীচ’ কে ‘ভৌতিক স্থান’ তকমা দিয়ে ভারত সরকার নিষিদ্ধ স্থান বলে ঘোষণা করেছেন।
দিল্লীর আগ্রাসন কি বাউলি (Agrasan ki Bauli)
শোনা যায়, দিল্লির ‘আগ্রাসেন কি বাউলি’ দুর্গের কূপের ভিতরের জল মানুষকে সম্মোহিত করে এবং আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করে। কথিত আছে যে কূপের কালো জল ছিল, যা রহস্যজনকভাবে মানুষকে হত্যা করত। বেশকিছু পর্যটকদের মুখে এও শোনা গেছে এই দুর্গের ভেতর দিয়ে হেঁটে গেলে মনে হয় কেউ যেন প্রতিনিয়ত তাকে অনুসরণ করে চলছে। স্থানীয় লোকমুখে শোনা যায় এই দুর্গের কুপের ভেতরে নাকি বহু মানুষকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল তাদের আত্মার উপস্থিতিতেই এই ধরনের ভৌতিক ঘটনাগুলো ঘটে থাকে।
মুম্বাইয়ের ডি’সুজা চাল (D’Souza Shed)
মুম্বাইয়ের সবচেয়ে ভৌতিক স্থান হিসেবে গণ্য করা হয় এই ডি’সুজা চালকে। এই স্থানের ইতিহাস হিসেবে জানা যায়, এই চালের ওপরে থাকা একটি পাতকুয়োর মধ্যে থেকে জল তুলতে গিয়ে এখানকার স্থানীয় একজন মহিলা কুয়োর মধ্যে পড়ে যান এবং তার অতৃপ্ত আত্মার কারণেই স্থানীয় বাসিন্দারাও এই কুয়োর আশেপাশে যান না।
কোটার ব্রিরাজ ভবন (Briraz Palace)
রাজস্থানের কোটা শহরে অবস্থিত এই ভবনে সাধারণ মানুষের প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। কথিত আছে, ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহের সময় মৃত মেজর বার্টন ও তাঁর ছেলেদের আত্মা এখনো এই প্রাসাদের ভেতরে ঘুরে বেড়ায়। এমনকি এই প্রাসাদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরাও বহুবার ভৌতিক কার্যকলাপের সাক্ষী হয়েছেন।
আরও পড়ুন- একবার গেলে আর ফেরার পথ নেই, দেশের এই ১০টি জায়গা থেকে কেউ ফিরে আসেনি
বাস্তব জগতে ভূত আছে কি নেই সেই বিতর্ক চিরকাল বিদ্যমান তবে এই সমস্ত ভুতুড়ে স্থান ও স্থানগুলির ইতিহাস নিঃসন্দেহে যেকোনো মানুষকেই শিহরিত করে তুলবে। তবে উল্লেখ্য স্থান গুলির মধ্যে অনেক স্থানই বর্তমানে ‘শুটিং স্পট’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ‘টুরিস্ট পয়েন্ট’ হওয়ার কারণে নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা মেনেই পর্যটকদের যাতায়াত লক্ষ্য করা যায়।