Acharya Jagadish Chandra Bose – বাংলার প্রথম কল্পবিজ্ঞান লেখক, রইল জগদীশ চন্দ্র বসুর সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য
ভারতের আধুনিক বিজ্ঞান (Modern Science) চেতনার অন্যতম প্রাণপুরুষ বললেই সর্বপ্রথম যে নামটা মাথায় আসে সেটি আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু (Jagadish Chandra Bose)। উদ্ভিদের প্রাণ অথবা রেডিও (Radio) বা বেতার তরঙ্গের (Radiowaves) আবিষ্কার ভারত সহ সারা বিশ্বের বিজ্ঞান চর্চায় এনেছিল নতুন দিগন্ত। কলকাতায় বসু বিজ্ঞান মন্দির (Basu Vigyan Mandir) প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ছোটদের জন্যও সহজ ভাষায় বিজ্ঞান চর্চার একাধিক বই লিখেছিলেন জগদীশ চন্দ্র। নভেম্বর মাসেই ৩০শে জন্ম এবং ২৩শে মৃত্যু হয় এই মহান বিজ্ঞানীর (Scientist)। জন্মমাসে এই মহান বিজ্ঞানীর বিষয়ে একাধিক অজানা তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
১. ছোট থেকে বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহী হলেও তিনি ইংল্যান্ড পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (Indian civil service) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য। কিন্তু তার বাবার ইচ্ছা ছিল তাকে একজন স্কলার (scholar) বানানোর। সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই পরবর্তীকালে গবেষণায় মনোনিবেশ করেন জগদীশ চন্দ্র।
২. কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অফ আর্টস (B.A) ডিগ্রী গ্রহণ করার পর তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি (B.Sc) ডিগ্রী গ্রহণ করেন। এরপর লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ডিএসসি (D.Sc) ডিগ্রীও লাভ করেন জগদীশ চন্দ্র।
৩. 1896 সালে জগদীশ চন্দ্র বসু “নিরুদ্দেশের কাহিনী” রচনা করেন। এটিই ছিল বাংলা সাহিত্যে প্রথম কল্পবিজ্ঞানের (science fiction) গল্প। অর্থাৎ সেদিক থেকে দেখতে গেলে জগদীশ চন্দ্রই বাংলার প্রথম কল্পবিজ্ঞান লেখক। এছাড়া ছোটদের বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহী করতে সহজ ভাষায় অনেকগুলি বই লিখেছিলেন জগদীশ চন্দ্র।
৪. গোটা বিশ্বে জগদীশ চন্দ্র বসুই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি উদ্ভিদ কলায় পারমাণবিক তরঙ্গের কার্যকলাপ নিয়ে গবেষণা করেন। ভারতের সর্বকালের সেরা সাত বাঙালি ব্যক্তিত্বের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
৫. বোসই প্রথম ব্যক্তি যিনি রেডিও তরঙ্গ সনাক্ত করতে একটি অর্ধ-পরিবাহী সংযোগ ব্যবহার করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন পারমাণবিক তরঙ্গের উপাদানও আবিষ্কার করেছিলেন। এই উপাদানের ব্যবহার তিনি কোলকাতার রয়্যাল সোসাইটিতে (Calcutta Royal Soceity) উপস্থিত দর্শকের সামনে প্রমাণ করে দেখিয়েছিলেন।
৬. উদ্ভিদের বাড়বৃদ্ধি লক্ষ্য পরিমাপ করার জন্য তিনি ক্রেসকোগ্রাফ নামে একটি যন্ত্রের আবিষ্কার করেন। উদ্ভিদের কোষের কার্যকলাপ নিয়ে অসংখ্য জার্নাল এবং গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন জগদীশ চন্দ্র বসু।
৭. তিনি একপ্রকার স্বয়ংক্রিয় রেকর্ডার আবিষ্কার করেছিলেন যার মধ্যে দিয়ে উদ্ভিদের প্রতি মুহূর্তের নড়াচড়া অনুভব করা যায়। উদ্ভিদের স্নায়ুতন্ত্রও তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন।
৮. কোলকাতার রয়্যাল সোসাইটিতে তিনি হাতে কলমে উদ্ভিদের প্রাণের অস্তিত্ব প্রমাণ করে দেখিয়েছিলেন। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র থেকে এই গবেষণার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল।
৯. গাছের শিকড়ে ব্রোমাইড মিশিয়ে তিনি উদ্ভিদের স্বাভাবিক চলনে পরিবর্তন আনেন এবং বৃদ্ধির গতি রোধ করেন। এইভাবে তিনি উদ্ভিদের প্রাণের অস্তিত্ব প্রমাণ করেন।
১০. ইংরেজ বিজ্ঞানী ম্যাকারোনি তার ইথার তরঙ্গ আবিষ্কারের পেটেন্ট চুরি করে নিজের নামে প্রচার করেন। জগদীশ চন্দ্রের মৃত্যুর অনেক পরে এ সত্য জানাজানি হয়। সম্প্রতি ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড ৫০ ইউকে পাউন্ডের মুদ্রায় এই মহান বিজ্ঞানীর ছবি মুদ্রিত করেছে।