এক বাক্স ম‍্যাঙ্গো বাইট, বিগ বাবুলের স্টিকার আর টিকটিকি লজেন্সে নস্টালজিক নব্বইয়ের রঙিন ক‍্যানভাস

বড়বেলায় সমস্ত কিছু ধূসর হয়ে এলেও আমাদের প্রত‍্যেকেরই ছোটবেলাটা বড্ড রঙিন। আর সেইসব রঙিন ছোটবেলার একটা লম্বা চ‍্যাপ্টার জুড়ে থাকে রঙচঙে সব খাবার দাবার। রঙিন আইসক্রিম, কোল্ডড্রিঙ্কস থেকে লজেন্স কি নেই সেখানে। বড়রা যতই মানা করতেন এইসব খাবার খেতে ততই যেন আকর্ষণ আর লোভ কয়েকগুণ বেড়ে যেতো।

তবে ঠান্ডা লাগার দোহাই দিয়ে আইসক্রিম বা রঙিন পেপসি খাওয়া আটকানো গেলেও দোকানে গিয়ে লজেন্স খাবার বায়নাকে ঠেকানোর সাধ‍্য ছিল না কোন দাদা মামা কাকার পক্ষেই। আর নব্বইয়ের দশকে রঙিন লজেন্সেরও ছিল অফুরন্ত সম্ভার। তবে আকর্ষণের জন‍্য শুধু রঙিন চকচকে মোড়ক বা দারুণ স্বাদই যথেষ্ট ছিল না। খুদে ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে খেলনা গাড়ি, স্টিকার এই ধরনের নানারকম জিনিসপত্র ফ্রিতে দিয়ে কচিকাঁচাদের মন জয় করতো এই লজেন্সগুলি।

 

নব্বই দশকের প্রিয় লজেন্সের মধ‍্যে প্রথমেই আসে ম‍্যাঙ্গো বাইটের নাম। হলুদ সবুজ মোড়কে এই লজেন্সের দাম ছিল মাত্র পঞ্চাশ পয়সা। আর সেই সঙ্গে আসল আমের স্বাদ সহজেই মন জয় করতো খুদেদের। পাড়ায় স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলনের পর দুটো মেরী বিস্কুট আর দুটো করে ম‍্যাঙ্গো বাইট লজেন্স ছিল নব্বই দশকের অন‍্যতম নস্টালজিয়া। এমনকি বাইরে থেকে বেড়াতে এলেও আত্মীয়রা এক বাক্স ম‍্যাঙ্গো বাইট আনতেন বাড়ির সবচেয়ে ছোট্ট সদস‍্যটির জন‍্য। সেই উপহার পেয়ে খুদের একেবারে সাত রাজার ধন মানিক পাবার মতো আনন্দ হতো।

 

ম‍্যাঙ্গো বাইটের পরেই জনপ্রিয়তায় এগিয়ে ছিল টিকটিকি লজেন্স বা মৌরি লজেন্স। মৌরীর ওপর রঙবেরঙের আস্তরণ দেওয়া ছোট্ট ছোট্ট এই লজেন্সগুলি ভীষণ প্রিয় ছিল নব্বইয়ের টিনের সুটকেস হাতে স্কুল যাওয়া খুদেদের। এ লজেন্স খাওয়ার পদ্ধতিতেও ছিল মজা। একসঙ্গে অনেকগুলো মুখে ঢেলে চুষতে হতো অনেক্ষন ধরে। কিন্তু যদি কামড় দিয়ে দেওয়া হয় ভুল করে তাহলেই সর্বনাশ। দাঁতে মৌরির সঙ্গে আটকে যাবে লজেন্সের রঙিন অংশ। যতক্ষন না গলবে তাকে ছাড়ানোর উপায় নেই। টিকটিকি লজেন্স বা মৌরি লজেন্সের সঙ্গে ফ্রিতে ছোট গাড়ি বা সুন্দর কৌটো দেওয়া হতো অনেক সময়ে।

লজেন্সের মধ‍্যে চুইংগাম বড় থেকে ছোট সবার মনপসন্দ। আর ছোটবেলা যদি নব্বই দশকে কেটে থাকে তাহলে বিগ বাবুলকে এত সহজে ভুলে যাবার কথা নয়। অনেক্ষন ধরে চিবিয়ে তারপর বাবল ফোলানোর মধ‍্যে আলাদাই কায়দা ছিল ছোটদের মধ‍্যে। যে যত বড় বাবল ফোলাতে পারবে বন্ধুদের চোখে সেই হিরো। পাশাপাশি বিগ বাবুলের সঙ্গে স্টিকারও পাওয়া যেতো বিনামূল্যে। ফলে সেটাও আকর্ষণের অন‍্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল ছোটদের কাছে।




Back to top button