Murshidabad Fauti Mosque: রাত হলেই যেন ছড়িয়ে পড়ে জ্যোতি! কে আজও বসে মুর্শিদাবাদের এই পরিত্যাক্ত মসজিদে?

রাখী পোদ্দার, কলকাতা : বাংলার এক অন্যতম ঐতিহাসিক শহর হল মুর্শিদাবাদ ( Murshidaabad)। এক সময় বাংলার রাজধানী ছিল এই শহর। গঙ্গার তীরে অবস্থিত এই প্রাচীন শহরটি ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য এক আদর্শনীয় স্থান। ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থাপত্যের সঙ্গে সঙ্গে কতই না ইতিহাসের রহস্য ঘুমিয়ে রয়েছে এই স্থানে। হাজারদুয়ারী থেকে কাতরা মসজিদ, নিজামত মাকবরা থেকে কাঠগোলা প্যালেস কতই না নজর কাড়া স্থাপত্য শিল্প রয়েছে এখানে। তবে আপনি কী জানেন স্থানীয়দের মতে এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য শিল্পগুলির মধ্যে একটিতে রয়েছে অশরীরী শক্তির ছায়া। ভুতুড়ে স্থান সম্পর্কে তো আমরা অনেক শুনেছি। আর বড়োদের থেকে এটাও শুনেছি আমরা তেনাদের হাত থেকে আমাদের একমাত্র রক্ষা করতে পারেন ভগবান কিংবা ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আল্লাহ। তবে যদি সেই আল্লাহর পবিত্র স্থানই থাকে অপবিত্র শক্তির বাস? তখন কী করবেন আপনি? ঐতিহাসিক এই শহর মুর্শিদাবাদের ( Murshidaabad) বুকেও রয়েছে এমন এক মসজিদ ( Fauti Mosque) যেখানে চার বেলা নামাজ পড়া দূর যেতেই গলা শুকিয়ে ওঠে মানুষের।

Murshidaabad Fauti Mosque
Murshidaabad Fauti Mosque

প্রায় ৩০০ বছরের পুরানো এই মসজিদ। এই মসজিদের নাম ফুটি মসজিদ ( Fauti Mosque)। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১৩৫ ফুট ও উচ্চতা যথাক্রমে ৪০ ফুট। মসজিদের চারকোণায় রয়েছে চারটি মিনার। ঐতিহাসিকবিদদের মতে, ১৭৪০ সালে মুর্শিদকুলি খাঁর দৌহিত্র সরফরাজ খাঁ এই নির্মাণ কার্য শুরু করেন। নবাব পদে উন্নীত হওয়ার পর ৫ হাজার কর্মীকে নিয়ে শুরু করেন এই নির্মাণ কার্য। লোক মুখে প্রচলিত সারা দিনরাত চলত এর কাজ। যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এর কাজ শেষ করা সম্ভব হয়। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছে ছিল খানিকটা আলাদা। হঠাৎ একদিন এক অজ্ঞাত কারণে সমস্ত শ্রমিকরা সেখানে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। জানা যায়, কাজ শুরু হওয়ার প্রথমদিন থেকেই ৫ হাজার শ্রমিকদের বাদ দিয়েও একজন অতিরিক্ত শ্রমিক এই মসজিদ তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু তাঁকে ওই শ্রমিকদের মধ্যে কেউ চেনে না। এই ভুতুড়ে ঘটনায় শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। আর তার পরই এই নির্মাণ কার্য অসমাপ্ত রেখেই শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দেয়। নবাব হাজার চেষ্টা করা সত্ত্বেও সেই নির্মাণ কার্য পুনরায় চালু করা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

Murshidaabad Fauti mosque
Murshidaabad Fauti mosque

স্থানীয়দের মতে, মসজিদ অসম্পূর্ণ বা তার মাঝে গ্যাপ থাকায় একে ফুটো মসজিদ বলা হয়ে থাকত। পরে কালক্রমে এই মসজিদের নাম হয় ফুটি মসজিদ ( Fauti Mosque)। স্থানীয়দের মতে, যেহেতু এই স্থানে কোনও সময় কোনও পবিত্র কোরান পড়ে হয়নি কিংবা এখানে যেহেতু কখনও আজান করা হয়নি তাই এই স্থানে রয়েছে অপবিত্র শক্তির বাস। আর সেই সময় থেকে আজও এটি রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। স্থানটির চারিপাশ ভরেছে আগাছা আর গাছপালায়। জরাজীর্ণ অবস্থায় আজও দাঁড়িয়ে আছে বাংলার এই প্রাচীন শহর মুর্শিদাবাদের ( Murshidaabad) বুকে।




Back to top button