Island of Death Dolls: গোটা এলাকা জুড়ে শুধু মাথা-হাত-পা কাটা পুতুল! ছবি দেখলে গা শিউরে উঠবে আপনারও

রাখী পোদ্দার, কলকাতা : চারিদিকে জল মাঝখানে স্থল। এমন কথা শুনতেই আমাদের প্রথমে মাথায় চলে আসে চারিদিক জলে ঘেরা একটি নির্জন দ্বীপের কথা, কী তাইতো? চারিদিক সবুজে ঘেরা সেই দ্বীপে ঠিক কি দেখতে পাবেন বলে মনে হয় আপনার? নিশ্চয়ই কোনও হিংস্র পশু, বিভিন্ন ধরনের পাখি আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই দেখতে পাবেন। তবে যদি এরকম একটি নির্জন দ্বীপে ( Island of Death Dolls) গিয়ে আপনি দেখেন চারিদিকে রয়েছে শুধুই পুতুল আর তাহলে ব্যাপারটা দেখে আপনার কীরকম লাগবে?

বন জঙ্গলে ঘেরা এই দ্বীপের ভয়ংকর দৃশ্য দেখে শিউরে উঠবেন আপনিও। এই দ্বীপের প্রতিটা গাছ থেকেই ঝুলে রয়েছে ভয়ংকর দেখতে একাধিক পুতুল। কোনও পুতুল মুণ্ডহীন, আবার কারও হাত-পা কাটা, কারও আবার সারা শরীর যেন কেউ ছিঁড়ে নিয়েছে। এই দ্বীপে যতদূর চোখ যাবে আপনার তত দূরেই এই দৃশ্যই চোখে পড়বে। ছোট-বড় এমন নানা চেহারার পুতুল ঝুলতে দেখতে পাবেন আপনি এই দ্বীপে।

Island of Death Dolls
Island of Death Dolls

কিন্তু এখন প্রশ্ন হল একটি নির্জন দ্বীপে এমন ভয়ংকর দেখতে সব পুতুল আসলই বা কোথা থেকে? কেই বা এরকম ভাবে পুতুল ঝুলিয়ে রেখেছে এই নির্জন দ্বীপে? তবে এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে বেশ কয়েক বছর আগে। মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি থেকে ১৭ মাইল দক্ষিণে জোকিমিলকো জেলা। সেখানেই রয়েছে এই বিস্ময়কর ‘পুতুল দ্বীপ’ ( Island of Death Dolls)। স্থানীয়দের ভাষায় দ্বীপটির নাম ইলসা ডে লাস মিউনিকাস। যার বাংলা অর্থ হল পুতুলের দ্বীপ। ঘটনাটি ৯০ থেকে ৯৫ বছর আগের। শোনা যায়, পরিবার ত্যাগ করে এই নির্জন জনমানবহীন দ্বীপে বাস করতে আসেন মেক্সিকোর ডন জুলিয়ান সান্তানা বরেরা নামে এক ব্যক্তি। আর এই ব্যক্তির জীবনের সঙ্গেই লুকিয়ে রয়েছে এই রহস্যময়ী পুতুল দ্বীপের সম্পর্ক।

Island of Death Dolls
Island of Death Dolls

শোনা যায়, এই দ্বীপে বাস করার সময় ঝোপ-জঙ্গলে ঢাকা একটি নালা থেকে একটি মৃত বাচ্চা মেয়ের দেহ উদ্ধার করেন তিনি। তাঁর দাবি, পাশের একটি হ্রদে মেয়েটি ডুবে গিয়েছিল। তারপর তাঁর শরীর ভেসে আসে এই নালায়। জুলিয়ানের কথায়, সেই নালাতেই কিছুদিন পর একটি পুতুল ভাসতে দেখেন তিনি। আর এরপর থেকেই বিভিন্ন ধরনের সব অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটতে শুরু হয় জুলিয়ানের সঙ্গে। নির্জন দ্বীপে সে সারাদিনই শুনতে পেত একটি বাচ্চা মেয়ের ফিসফিস করে কথা বলার শব্দ। তাঁর কানে ভেসে আসত বাচ্চা মেয়েটির ছুটে বেড়ানো আর খেলার শব্দ। অবশেষে এই সমস্ত অদ্ভুতুড়ে ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে বাচ্চা মেয়েটির আত্মাকে শান্ত করার জন্য নালা থেকে তুলে এনে পুতুলটিকে পাশেই একটা গাছে ঝুলিয়ে দেন।

Island of Death Dolls
Island of Death Dolls

এইভাবেই জীবনের বাকি ৫০টি বছর এই নির্জন দ্বীপে কাটান জুলিয়ান। আর বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিত্যক্ত পুতুল কুড়িয়ে নিয়ে ঝুলিয়ে দিতেন এই দ্বীপের গাছে। এইভাবে করতে করতে দ্বীপের প্রায় সব গাছই ভরে যায় পরিত্যক্ত পুতুলে। ২০০১ সাল নাগাদ রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুও হয় ডন জুলিয়ানের। যে নালায় একসময় বাচ্চা মেয়েটির মৃতদেহ দেখার দাবি করেছিলেন জুলিয়ান, ঠিক সেখানেই ডুবে মারা যান তিনি। আর তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে এই পুতুল দ্বীপের ( Island of Death Dolls) রহস্যও চাপা পড়ে যায় চিরতরে।

Island of Death Dolls
Island of Death Dolls

যদিও জুলিয়ানের পরিবারের দাবি, মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন জুলিয়ান যার জেরি পরিবারকে ছেড়ে এমন একটি নির্জন পরিতক্ত দ্বীপে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে রহস্যে ঘেরা মেক্সিকোর এই দ্বীপ পর্যটকদের জন্য এক বিশেষ ভ্রমণের জায়গা। প্রতিবছরই বহু মানুষ এই দ্বীপে ঘুরতে আসে এবং সেই মেয়েটির এবং জুলিয়ানের আত্মার শান্তি কামনার জন্য তাঁরাও পুতুল এনে ঝুলিয়ে রেখে যান এই দ্বীপের গাছে। এছাড়া এই দ্বীপে একটি জাদুঘর রয়েছে। যাতে দ্বীপ সংক্রান্ত প্রকাশিত সমস্ত খবরের কাগজের ক্লিপিং যত্ন করে রাখা। জুলিয়ানের সেই প্রথম পুতুলটিও সংগ্রহ করে রাখা রয়েছে এখানে।




Back to top button