জুটেছে মিথ্যা অভিযোগ, জড়িয়েছেন পকসো আইনের জালেও! অদ্ভূত জেল যন্ত্রণার কথা শোনাচ্ছেন এই দলিত প্রৌঢ়
জুটেছে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। জড়িয়েছেন পকসো আইনের জালেও। এমনকী এই অভিযোগেই হাজতবাসও করতে হয় দিল্লি ৫৫ বছরের এক দলিত প্রৌঢ়কে। অবশেষে পেয়েছেন মুক্তি। যদিও তাঁর অভিযোগ দলিত হওয়ার অভিযোগেই জেলের অন্ধকারে পচে মরতে হয়েছে তাকে। এমনকী তার সম্প্রদায়ের কারণেই মূলত তাঁর বিরুদ্ধে তোলা হয়েছিল মিথ্যা অভিযোগ। যদিও সামাজিক সুরক্ষার কারণেই বর্তমানে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি।
সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে চার নবালিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে পকসো আইনের ভিত্তিতে রুজু হয় মামলা। জল গড়ায় আদালতে। গত ৬ বছর ধরে দিল্লির তিহার জেলে সুবিচারের আশায় দিন কাটিয়েছেন এই মানুষটি। গত ১৮ অগাস্ট, দিল্লী সেশন কোর্টে ৬ বছরের কেসের সমাপ্তি ঘটে। অবশেষে সমস্ত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতেই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে আদালত। বিচারপতির রায় শুনে শেষমেশ কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই দলিত প্রৌঢ়।আবেগতাড়িত হয়ে তিনি জানান” আমি ভাবতেও পারিনি আর কোনোদিন নিজের বাড়ির লোকেদের সাথে দেখা করতে পারবো। ভাবতেই পারিনি আবারও নিজের জীবনের ছন্দে ফিরতে পারব।”
পুলিশি রেকর্ড বলছে ২০১৫ সালের ১৮ অগাস্ট ৪ জন নাবালিকাকে যৌননির্যাতনের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে দিল্লী পুলিশ। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে দলিত হওয়ার ‘অপরাধেই’ এমন শাস্তি পেতে হয়েছে ওনাকে। ভুগতে হয়েছে ওনার পরিবারকেও। যদিও ৬ বছর পর মুক্তি পেলেও এখনও স্বাভাবিক জীবনযাপনে এখনও ফিরতে পারেননি তিনি। ৬ বছর ধরে, এক অসম্ভব মানসিক চাপের মধ্যে থাকার দরুন, সাধারণ মানুষের জীবন বোঝা এখন তার কাছে দুর্বিষহ ব্যাপার।
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে একপ্রকার ভেঙে পড়েই তিনি জানান, ” রাস্তায় বেরোতে ইচ্ছা করে না, এই পাঁচ বছরে পৃথিবী অনেকটা পাল্টে গেছে। মানুষজন মাস্ক পরে ঘোরাফেরা করে এখন। গাড়িরর ধরনের আওয়াজে বুক তা ধড়ফড় করে উঠে মাঝে মাঝে , কিছু খেতে ইচ্ছা করেনা আজকাল আর।” নিজের সাথে হওয়া অবিচার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান ” আমি দলিত বলে আমার এবং আমার পরিবারের সাথে এই অনাচার হয়েছে। পাড়ার কেউই চায়না আমরা এখানে থাকি। জীবনের এই ৫টা গুরুত্বপূর্ণ বছর আর কোনোভাবেই ফিরে আসবে না আমাদের জীবনে। এর দায় কেন নেবে? তবে যারা আমাদের বিরুদ্ধে এই ঘৃণ্য চক্রান্ত করেছে তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি।”