দার্জিলিংয়ের পাশেই রয়েছে এক অচেনা স্বর্গের ঠিকানা! ছবি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবেই
উৎসবের(Festival) মরসুমে কবজি ডুবিয়ে খাওয়া হোক বা দুদিনের ছুটি পেলেই কলেজ হোক বা রোজকার অফিস, সবকিছুকে বাই বাই করে বেরিয়ে পড়তে বাঙালীর জুড়ি মেলা ভার। প্রায় দেড় বছরের বেশি সময়ের করোনাকালের বন্দি দশা কাটিয়ে ফের যেন বাঙালির মন ‘দীপুদাতেই’ মজেছে। হ্যাঁ ছাপোষা বাঙালীর নিরাপদ গন্তব্য দিঘা-পুরী দার্জিলিংয়ের(Digha-Puri) কথাই হচ্ছে। এদিকে সম্প্রতি উত্তরাখণ্ড-হিমাচলের(UttaraKhand-Himachalpradesh) পাশাপাশি আমাদের ঘরের উত্তরবঙ্গও(North Bengal) ভয়াবহ প্রাকৃতি দুর্যোগের মুখে পড়েছিল। আটকে পড়েছিলেন বহু পর্যটক। এবার সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ক্রোনিক্যালের(Bengali Chronicle) টিম পৌঁছে যায় সূদূর উত্তরবঙ্গে। বাংলার শৈল্যরাণী দার্জিলিংয়ের(Darjeeling) আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা একাঝিক নাম না জানা গ্রাম থেকে শুরু করে পাহাড় ঘেরা জনপদে পৌঁছে যায় ক্রোনিক্যালের বুম।
দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে চা বাগানের চাদর ঘেরা এই গ্রাম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা প্রায় ৬ হাজার ফুট। ব্রিটিশ আমলে এখানে গড়ে ওঠে ৪৯.৯৩ হেক্টর জমি বিস্তৃত চা-বাগান৷ যার সুখ্যাতি আজও দিগন্ত বিস্তৃত। সেসময় ইংল্যান্ডের রাজমহলে রাঙ্গারুনের চায়ের কদর ছিল বেশ৷ ১৭৭৬ সালে তৎকালীন বাংলার রাজ্যপাল লর্ড অ্যাডেন অ্যাসল-এর হাতে খ্যাতি পায় চা-বাগান৷
বর্তমানে দার্জিলিং-মকাইবাড়ির চায়ের বেশি রমরমা হলেও এখনও এই ঘুম ঘুম চা-বাগানের চায়ের সমস্ত উৎপাদন পাড়ি দেয় বিদেশেও। চলুন আমরা কথা বলি এই গ্রামেরই কিছু মানুষদের সঙ্গে। তাদের কথা জেনে নেওয়া যাক তাদের মুখ থেকে। চলতি পথেই আমরা পেয়ে গিয়েছিলাম এই গ্রামের বিখ্যাত কালিঙ্গ হোম-স্টে-র মালিক কুন্দন রাইকে। তাঁর দাবি দার্জিলিং সহ একাধিক জায়গার পর্যটন ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি হলেও এখনও দার্জিলিংয়ের কাছে প্রদীপের নীচের জমাটি অন্ধকারের মতোই হয়ে রয়েছে। কেন্দ্র হোক বা রাজ্য সমস্ত প্রশাসনকেই রাঙ্গারুনের উন্নতির জন্য পাশে দাঁড়ানোরও অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে রঙ্গারুনের বিভিন্ন বাড়িতেই রয়েছে হোমস্টে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের নয়, বিদেশ থেকেও পর্যটকরা এই হোমস্টেতে এসে থেকে যান। চা ফ্যাক্টরির এই চিমনি থেকে ধোঁয়া ওড়ে না। এক নিঃসঙ্গ ফ্যাক্টরি! এই বাগানের গা বেয়েই উপরের রাস্তায় ছোট ছোট সিঁড়ি উঠে গিয়েছে। পাথর কেটে বানানো এই সিঁড়ি। আরও একটু নিচে নেমে গেলেই দেখা হয়ে যাবে নদীর সঙ্গে। রুংদাং নদী, দার্জিলিংয়ের পাহাড়ের মধ্যেই হারিয়ে গিয়েছে কোথাও। তবে এই রাস্তায় গাড়ি যায় না। তাই হেঁটেই নিচে নামতে হবে আপনাকে। কখনও কখনও কুয়াশায় ঝাপসা হতে পারে পথ। তবে সেই আবছা পথ ধরে হেঁটে গেলেই রুংদাং নদীর কাছে পৌঁছে। এই নদী বা পাহাড়ি ঝোরার জল কাচের মতো ঝকঝকে। আসলে রঙ্গারুনের নামও হয়েছে এই নদীর নাম ধরেই। লেপচা ভাষায়, রাঙ্গেরুন শব্দের অর্থ বড় নদীর বাঁক। এই পাহাড় ঘেরা নদীর বাঁকে হারিয়ে যেতে হলে অবশ্যই দুদিনের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন পাহাড় ঘেরা অচেনা উপত্যকায়।