Tarakeshwar: কানে বাজে ঘন্টার শব্দ! কাঁধে বাঁক নিয়ে মহাকালের ডাকে তারকেশ্বর চললেন ভক্তরা

শ্রাবণ মাস মানেই বাঁক কাঁধে নিয়ে চলল শিব ( Shiv ) ভক্তরা। গন্তব্য তাঁদের তারকেশ্বর। কারণ, বাংলা শৈব তীর্থস্থানগুলির মধ্যে বিখ্যাত এই তারকেশ্বরের মন্দির ( Tarakeshwar Temple )। সারাবছরই এই মন্দিরে লেগে থাকে ভক্তদের ভিড়। আর শ্রাবণ-ফাগুন-চৈত্র মাসেই এই ভিড় যেন পৌঁছে যায় মহাকালের মন্দিরে ( Mahakal Temple )। শ্রাবণ ( Sawan ) মাসের প্রতি সোমবার শিবের মাথায় জল ঢালতে আসেন অসংখ্য ভক্ত।
জানা যায়, শিবের তারকেশ্বর রূপে নামের মধ্যে দিয়েই এই তারকেশ্বর মন্দিরের নামকরণ। এখানকার মন্দিরটি আটচালা। মন্দির সামনে নাটমন্দির। উত্তরে রয়েছে একটি পুকুর। যাকে দুধপুকুর বলা হয়ে থাকে। ভক্তদের বিশ্বাস, এই পুকুরে স্নান করলে নাকি পূর্ণ হয় ভক্তদের মনস্কামনা। সেই কারণেই প্রতিবছর এখানে অজস্র পূর্ণ্যার্থী আসেন স্নানের মাধ্যমে নিজেদের মনের কামনা পূরণ করতে।
শোনা যায়, তারকেশ্বরের এই মন্দির নাকি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের এক বাসিন্দা। নাম তাঁর বিষ্ণু দাস। উত্তরপ্রদেশ থেকে হুগলিতে এসে তাঁরা বসবাস শুরু করেন। এরপর তাঁর ভাই একদিন সকালে জঙ্গলে গিয়ে দেখেন একটি কালো পাথড়ের উপর গরু দুধ দিচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে রীতিমতো হতবাক হয়ে পড়ে সে। গোটা ঘটনা নিজের দাদা বিষ্ণু দাসকে বাড়ি গিয়ে জানায় সে।
এরপরই নাকি স্বপ্নাদেশ পান বিষ্ণু দাস। এরপর তিনি ওই পাথরটিকে শিবলিঙ্গ রূপে কল্পনা করে পুজো করতে শুরু করেন। তার পরই এই খবর হু হু করে লোকমুখে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ফলত ভক্তদের ভিড় বাড়তে শুরু করে সেখানে। অবশ্য, তারকেশ্বরের মন্দির নিয়ে আরও ভিন্ন অনেক কাহিনীই রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, বিষ্ণু দাস নয় এই শিব লিঙ্গের প্রথম খোঁজ পান মুকুন্দ ঘোষ। তাঁর গরু নাকি জঙ্গলে গিয়ে দুধ দিত। নেপথ্যে লুকিয়ে থাকা কারণ খুঁজে বের করতে গিয়েই শিব লিঙ্গের হদিশ পান তিনি। পাশাপাশি কথিত আছে ১৭২৯ সালে স্বপ্নাদেশ পেয়ে জঙ্গল কেটে মন্দিরটি তৈরি করান রাজা ভারামল্ল।
আবার অনেকে বলেন, এই আটচালার মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন শিয়াখালার গোবর্ধন রক্ষিত। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা তারকেশ্বর মন্দিরে ভিড় জমান। আর, তার ফলেই পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় তীর্থ স্থান হয়ে উঠেছে তারকেশ্বর ধাম।