কে যেন দাঁড়িয়ে! রাত বাড়লেই উত্তরবঙ্গের এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে ধরে কোন এক ছায়ামূর্তি

রাখী পোদ্দার, কলকাতা : ভারতে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে প্রায়শই ঘটে যায় কিছু অলৌকিক ঘটনা। যা সাধারণ মানুষের পক্ষে ব্যাখ্যা করা মুশকিল। এর মধ্যে কিছু ঘটনা মিথ্যে কিংবা রটানো হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিন্তু ঘটনাগুলো হয় ১০০ ভাগ সত্যি। ভারতে অবস্থিত এমন বহু স্থানের নাম আমরা জানি। যেগুলোকে ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু অলৌকিক কাহিনী। যা হাড়হিম করে তোলে সাধারণ মানুষের। যেমন ধরুন রাজস্থানের ভানগড় ফোর্ট, বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের রেলওয়ে স্টেশন বেগুনকোদর, সিমলার টানেল নম্বর ৩৩ ইত্যাদি। এসব নাম তো আমরা বহুবার শুনেছি। তবে এসব এখন পুরোনো। এবার অপ্রাকৃতিক শক্তির সন্ধান পাওয়া গেল উত্তরবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়ে ( North Bengal University)। সম্প্রতি এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল শিলিগুড়ি ( Siliguri) বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে যা রাতের ঘুম ওড়াচ্ছে সেখানকার ছাত্র-ছাত্রীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শালবাগানে নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছে সাদা পোশাক পরিহিত এক ভূত। শুধুমাত্র লোকমুখে প্রচলিত কাহিনী নয় এক্কেবারে ছবি সহ প্রমাণ রয়েছে এই বিষয়ের সপক্ষে। যেই ছবি ভাইরাল হওয়া মাত্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের ( North Bengal University) নিরাপত্তা কর্মীদের রাতের ঘুম রীতিমতো উবে যাওয়ার দশা৷ এমনকী এলাকা লাগোয়া বিভিন্ন ঘর থেকে রাতে শোনা যায় নানা রকম অদ্ভুত সব শব্দ৷ যেই শব্দ নাকি রীতিমতো রক্ত জল করে দেবে আপনারও। এমনকি এই বিষয় সেখানকার মানুষদের মনে এমন ভয়ের আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যার প্রভাবে সেই শালবাগান সংলগ্ন রাস্তাও সন্ধ্যে হতে না হতেই হয়ে যায় একেবারে জনমানবহীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপিকারাও যেন সন্ধ্যে নামতে না নামতেই এড়িয়ে চলেন এই রাস্তা।

কৌতূহলবশত সন্ধ্যে নামলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ( North Bengal University) ক্যাম্পাসে ভিড় জমাতে শুরু করে বহিরাগতরা। তাঁরাও নাকি নিজ চোখে দেখতে চায় এই অপ্রাকৃতিক শক্তিকে। পরিস্থিতি এমনই গুরুতর হয়ে উঠেছে যে, ভিড় ঠেকাতে ওই এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যা ২ থেকে বাড়িয়ে ৭ করতে হয়েছে৷ খবর দিতে হয়েছে মাটিগাড়া থানাকেও৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের দাবি , ফেসবুকে আপলোড করা ছবিটি ভুয়ো৷ ‘ঘোস্ট ইন ফোটো ’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে ওই ছবি তৈরি করা হয়েছে৷ তাঁরা নিজেরাও ওই অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে শালবাগানে গিয়ে একই ধরনের ছবি তৈরি করেছেন৷ নিরাপত্তা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সুদাস লামা বলেছেন , “কে বা কারা ফেসবুকে ভূতের ছবি আপলোড করেছে , জানা যায়নি৷ কী উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে , সেটাও স্পষ্ট নয়৷ কিন্তু নিরাপত্তা কর্মীদের নাকাল হতে হচ্ছে।” এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার লক্ষীকান্ত পাঁধী বলেন, ‘‘এ ধরনের প্রচার দুর্ভাগ্যজনক। আমরা সতর্ক রয়েছি। কেউ কোনও উদ্দেশ্যে নিয়েই এ সব করছে বলেই মনে হচ্ছে। যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ তবে এতো কিছুর পরও একটা প্রশ্ন মনে থেকেই যায় যে, কোনটা সত্যি? বিশ্ববিদ্যালয় আধিকারিকেরা যা বলছেন সেটা নাকি ছবিতে যেটা দেখা যাচ্ছে সেটা? যদিও তার উত্তর এখনও অধরা।