ক্লাস সিক্সে ডাহা ফেল! নাম না জানা কুলির ছেলেই এখন ভারতের ৩০০ কোটির ‘ব্রেকফাস্ট কিং’
জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ে প্রত্যেকের জীবনেই থাকে নিত্যনতুন মোড়। আর সেই মোড় বদলেই কেউ পৌঁছে যায় সাফল্যের চূড়ায় তো কাউকে গ্রাস করে ব্যর্থতার গ্লানি। কিন্তু জীবন যুদ্ধের এই পার্থিব সত্যকে জয় করেই যারা এগোতে পারে তারাই দিনের শেষে হয়ে ওঠেন বাস্তবের নায়ক। কেরলের মোস্তফা পিসির কাহিনী এমনই এক হার না মানা জীবনযুদ্ধের গল্প। গল্প ভারতের ব্রেকফাস্ট কিংয়ের। গল্প এক স্বপ্ন জয়ের কারিগরের।
মোস্তাফার বাবা ছিলেন কফি বাগানের কুলি। কাজ করে তিনি যা বেতন পেতেন তাতে সংসার চলত না। অভাব-অনটন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। এমনকী এমনবও দিন গিয়েছে যখন গোটা পরিবারেই থেকে অনাহারে। আর সেই কারণেই বাড়তি উপার্জনের উদ্দেশ্যে স্কুল থেকে ফেরার পথে বাবার সঙ্গে কুলির কাজ করতেন মুস্তাফা। বাবার সাথে মাঠে কাজ করেছেন এক সময়। এদিকে অত্যধিক পরিশ্রমের জেরে পড়াশোনায় খামতি দেওয়ায় অকৃতকার্য হন ক্লাস সিক্সের পরীক্ষায়। যদিও সেই ব্যর্থতা থেকেই শুরু হার না মানা লড়াইয়ের গল্প। এমনকী পড়াশোনায় এতটাই মনোনিবেশ করেন যে মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলে প্রথম স্থানও অধিকার করেন তিনি।
পরবর্তীতে পড়াশোনার দিক দিয়েও ওঠেন সাফল্যের চূড়ায়। পরবর্তীতে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করার পর এনআইটিতে পড়ার সুযোগও পান তিনি।চাকরি পান একটি বহু জাতিক সংস্থা। জুটেছে বিদেশে চাকরির সুযোগও। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন ইউরোপ ও মধ্য প্রাচ্যের একাধিক বহুজাতিক সংস্থাতেও। কিন্তু মন পড়েছিল দেশেই। পরবর্তীতে তারপরই মাথায় আসে ব্যবসার কথা। ২০০৫ সালে পাঁচশো বর্গফুট একটি ঘর ভাড়া নিয়ে শুরু প্রথম পথ চলা শুরু। তৈরি হয় আইডি ফ্রেশ ফুড।
প্রাতঃরাশ এবং জলখাবার— ইডলি-ধোসা প্রস্তুত করে এই আইডি ফ্রেশ ফুড। শুরুর দিকে এলাকায় দিনে ৫০ প্যাকেট মতো খাবার বিক্রি হত। বর্তমানে গোটা ভারতে কয়েক হাজার প্যাকেট ইডলি-ধোসা বিক্রি করে এই সংস্থা। করে। ১০ বছরের মধ্যে ১০০ কোটির আয় করে এই সংস্থা। শেষ অর্থ বছরে আইডি ফ্রেশ ফুডের হাত ধরে আয় হয়েছে ২৯৪ কোটি টাকা। বর্তমান আয় পার করেছে ৩০০ কোটি টাকা। আর মুস্তাফাই হয়ে উঠেছেন ভারতের প্রথম ব্রেকফাস্ট কিং।