Maldaha: ফার্স্টগার্ল অনুপস্থিত টেস্ট পরীক্ষায়, কারণ হিসাবে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

ইতিমধ্যেই কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় সরকার মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে ২১ বছর বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ মেয়েরা ২১ বছর হলে তবেই তাঁর পরিবার বিয়ে দিতে পারবেন। ধার্য বয়স থেকে কম হলে আইনত অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। কিন্তু বিগত দুই বছর লকডাউনের ফলে বন্ধ হয়েছে স্কুল। বেড়েছে স্কুলছুট সহ নাবালিকা মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও। কারণ হিসাবে উঠে এসেছে বিভিন্ন পারিবারিক সমস্যা, আর্থিক সংকটের ফলে অনেকেই নিজস্ব পরিবারের ১৮বছর বয়সি মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন আগে ভাগেই। এরূপ অবস্থায় উধাহরনস্বরূপ উঠে এসেছেমালদহ স্কুলে হওয়া এক অদ্ভুত ঘটনার।
মালদহ স্কুলে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষা। সেই টেস্ট পরীক্ষার প্রথম দিনই দেখা যায় ফার্স্ট গার্ল অনুপস্থিত। শিক্ষক শিক্ষিকাদের এত আকাঙ্ক্ষা , এত ভালোবাসা , এত স্বপ্ন যে মেয়েটি ঘিরে, যে এবারও ফার্স্ট হবে এই আশায় আছে প্রত্যেকে, সেই ছাত্রীই পরীক্ষা দিতে আসেনি। এরূপ ঘটনায় সন্দেহ হয় অনেকের। ছাত্রীর গরহাজির কারণ জানতে শিক্ষকরা পৌঁছে যায় ছাত্রীর বাড়িতে। অবশেষে অনুপস্থিতির কারণ জানতে পারেন তারা।
উলেক্ষ্য ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে শিক্ষকরা জানতে পারেন দু বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় কিছু মাস আগেই তাঁর পরিবার আর্থিক সংকটের কারণে বিয়ে দিয়ে দেন। কারণ মেয়েটির বাবার ক্যাটেরারের ব্যবসা। বিগত লকডাউনের জন্য কোনো অনুষ্ঠান না থাকায় সেই ব্যবসাও বন্ধ হয়েগেছে। তাঁদের পরিবারে চার মেয়ে ও দুই ছেলে। প্রথম মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে অনেকদিন তাই দ্বিতীয় মেয়েরও বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন পরিবার। এবং বিয়েটা দিয়েছিলেন মালদহ স্কুলে পাঠরত ছাত্রীরই সহপাঠীর সাথে। এই ঘটনা শোনার পর শিক্ষক , শিক্ষিকা, সহ-শিক্ষক প্রত্যেকেই ছাত্রীর পরিবারকে বোঝায় স্কুলের প্রয়োজনীয়তা ও তাঁদের মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য পড়াশুনা কতটা দরকারি সেই বিষয়ে। এবং পরে ছাত্রটির পরিবারকেও সেই একই কথা বোঝান শিক্ষকরা। দুই পরিবারের সদস্য সবাই কথাগুলোর গুরুত্ব বোঝেন এবং ছাত্র – ছাত্রী উভয়কেই স্কুলে পাঠানোর জন্য রাজি হন।
পাশাপাশি মালদহ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা তাঁদের জন্য আলাদা করে টেস্ট পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। মেধাবী ছাত্রীটি আবার পরীক্ষায় বসতে পেরে প্রচন্ড উৎফুল্ল প্রকাশ করছে বলে জানায়। এবং এটাও জানায় শ্বশুরবাড়ির উৎসাহ পেলে সে নিজের পড়াশুনা কে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে আগামী দিনে।