Gum Ghar lane: শহরতলীর বুকে ‛গুমঘর লেন’, প্রথম নয়! ২৩০ বছর আগেও কলকাতার বুকে ছিল কোয়ারেন্টাইন রুম

সাল ২০২০। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল
করোনা নামের অজানা ভাইরাস। কয়েক মাসের মধ্যেই এই ভাইরাস গ্রাস করেছিল গোটা বিশ্বকে। দিনের পর দিন বাড়ছিল আক্রান্তের সংখ্যা। অপরদিকে, ভাইরাসের প্রতিরোধক না থাকায় লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছিল, গুম হয়ে যাচ্ছিল পৃথিবীর বুক থেকে। পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে মানুষ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে শুরু করল। যদিও কলকাতা শহরে এই ঘটনা নতুন নয়। তিলোত্তমার মানুষ পূর্বে বহুবার এরূপ পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।
ইতিহাসের বহু ঘটনার সাক্ষী এই তিলোত্তমা নগরী। আজও শহরের প্রতিটি গলিতে গলিতে মেলে ইতিহাসের ছাপ। শহর কলকাতার বুকে এরকমই একটি রাস্তা হল গুমঘর লেন, যেটিকে ঘিরে রয়েছে বহু অজানা কাহিনী, ব্রিটিশদের বর্বরতা, একাধিক সাধারণ মানুষের মৃত্যু। চাঁদনি চকে সাবির রেস্তোরাঁর উল্টোদিকের গলিতে যেতে যেন আজও মানুষ ভয় পায়, পাছে যদি ছোঁয়াচে রোগ তাদের গ্রাস করে। তবে কী ছিল এই গা ছমছমে গুমঘর লেনের ( gum ghar lane ) অজানা সত্য? আসুন জেনে নিই।
অষ্টাদশ শতক, কলকাতায় চলছিল ব্রিটিশদের রাজত্ব। আর ব্রিটিশদের মতই হঠাৎ এসে হাজির হয়েছিল বহু অজানা রোগ, আকার নিয়েছিল মহামারীর। তখনকার সময়ে শহরে সাদা চামড়ার মানুষদের জন্য ডাক্তার নার্স থাকলেও কালো চামড়ার নেটিভদের ভরসা ছিল কবিরাজ, ওঝা, তাবিজ-কবচ প্রভৃতি। বাঘে আর হরিণে যেমন এক ঘাটে জল খায় না, তেমনই সাদা চামড়ার মানুষ এবং কালো চামড়ার নেটিভরা যে এক টেবিলে বসে খাবে না সেটাই স্বাভাবিক। আর ঠিক এই কারণেই নেটিভদের জন্য ছিল না কোনও হাসপাতাল।
ফলে চিকিৎসার অভাবে দিনের পর দিন প্রাণ হারাতে থাকে লক্ষ লক্ষ মানুষ। তবে সকলে যদি এভাবে প্রাণ হারায়, তবে ব্রিটিশরা রাজত্ব চালাবে কাদের উপর? এই ভেবে ঠিক করা হল শহরবাসীর জন্য বানানো হবে নেটিভ হাসপাতাল। তবে হাসপাতাল বানানোর মত সাস্থ্যকর পরিবেশের ছিল বেজায় অভাব। প্রথমে কলুটোলায় চলত অসুস্থদের চিকিৎসা। এরপর চার বছর সেখানে চিকিৎসা চলার পর হাসপাতাল উঠে আসে ধর্মতলায়। সেখানেই একটি বাড়িতে চলত হাসপাতালের কাজকর্ম। আর শোনা যায়, সেই বাড়ির উল্টো দিকেই ছিল একটি গলি। আক্রান্ত যেসব রোগীরা ওই বাড়িতে চিকিৎসার জন্য আসত, তাদের সকলকে ওই গলির একটি ঘরে ফেলে রাখা হত। প্রায় ৭৮ বছর ধরে সেখানে এভাবে চিকিৎসা চলত।
সেই থেকেই গলির নাম গুমঘর লেন। নামের সাথে কিন্তু ঘটনার বেশ মিল রয়েছে। কেননা ওই স্থান থেকে যে বিনা চিকিৎসায় কত মানুষ গুম হয়ে গিয়েছে তা আজও অজানা।