Diabetes: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, বজায় রাখতে হবে কয়েকটা অভ্যাস
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি জরিপ অনুযায়ী, ডায়াবেটিস এখন একটি মহামারীতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে প্রায় বিশ্বে ৭০ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ। এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ আর ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ। আগামী কয়েক বছরে প্রায় প্রতিটি ঘরে এই রোগের প্রকোপ দেখা যাবে বলে চিকিৎসকদের বক্তব্য। আর ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যাতে প্রথমেই সতর্ক থাকতে হবে তা না হলে জীবনহানির ঝুঁকিও রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিরোধই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রেণের একমাত্র হাতিয়ার। তবে ওষুধ খেয়েই নয়, অসুখটিতে সঠিক খাদ্যাভাস এবং শরীরচর্চা করা অত্যন্ত জরুরি। আবার বাংলাদেশে ডায়াবেটিস সমিতির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনটিকে ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস হিসাবে পালন করছে এই খাতের স্বাস্থ্য কর্মীর।
বাংলাদেশের ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ড. এ কে আজাদ খান বলছেন, ”ডায়াবেটিস প্রধানত টাইপ-ওয়ান ও টাইপ-টু, এই দুইভাবে আমরা ভাগ করি। আমাদের দেশে ৯৫ শতাংশ রোগী টাইপ-টু ধরনের।” ”টাইপ-ওয়ান হচ্ছে যাদের শরীরে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি হয় না। তাদের ইনসুলিন বা পুরোপুরি ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয়। সেজন্য সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে টাইপ-টু ধরনের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে রাখলে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস ঠেকিয়ে রাখা বা বিলম্বিত করা সম্ভব।” এজন্য তিনি বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।তাহলে আসুন ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১০টি এক্সারসাইজের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ড. খান জানিয়েছেনছেন, নগর জীবনে আমাদের শারীরিক পরিশ্রম এবং হাঁটার প্রবণতা অনেক কমে গেছে। বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডের মধ্যে একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাঁটা ডায়াবেটিক রোগীদের নিয়মিত শরীরচর্চা করা জরুরি। সেক্ষেত্রে তাঁদের ক্যালোরি যাতে বার্ন হয় এমন শরীরচর্চা করতে হবে। সপ্তাহে পাঁচ দিন অন্তত ৩০ মিনিট করে হাঁটলেই তা অ্যারোবিক ফিটনেসের জন্য যথেষ্ট এবং এটি ডায়াবেটিস কমাতেও সাহায্য করে। ওয়েটলিফটিং পেশি গঠনে সাহায্য করে এবং ওয়েটলিফটিং করলে বেশি ক্যালোরি বার্ন হয়। স্ট্রেনথ ট্রেনিংও ব্লাড সুপারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। শুধুমাত্র ডায়াবেটিস নয়, আরও অনেক রোগের কারণ হতে পারে ধূমপান ও মদ পানের অভ্যাস। চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগ ঠেকাতে যেসব খারাপ অভ্যাস সবার আগে বাদ দিতে হবে, তার মধ্যে রয়েছে ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস। কারণ এগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুন…corona daily cases: ফের করোনা বাড়াচ্ছে দুশ্চিন্তা, আশার আলো অ্যাক্টিভ কেসের হার
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ড. আজাদ খান বলছেন, স্থূলতা বা অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়ার কারণেও ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। সাধারণ মিষ্টিজাতীয় খাবার, ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, ভারী খাবার স্থূলতার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরের ওজনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে কোনভাবেই অতিরিক্ত ওজন বা মুটিয়ে যাওয়া না হয়। বিশেষজ্ঞরা একারণে মিষ্টি, ফাস্টফুড, পোলাও, বিরিয়ানি, রেড মিটের মতো ভারী খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
সাইক্লিং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষ আর্থারাইটিসে ভোগেন। যদিও অনেকেই জানেন না যে সাইক্লিং খুব ভালো ক্যালোরি বার্ন করতে পারে। তাই ডায়াবেটিকদের আর্থারাইটিস থাকলেও সাইক্লিং করে ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। জয়েন্টে ব্যথা থাকলে সাঁটার কাটাও খুব ভালো এক্সারসাইজ। সাঁটার কাটলে হার্ট এবং ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। পাশাপাশি সাঁতার কাটলে শরীরের এক্সারসাইজ হয়।
সাধারণ ক্যালিসথেনিক্সের মধ্যে রয়েছে পুল আপ, পুস আপ, লাঞ্চেস এবং অ্যাবডোমিনাল ক্রাঞ্চেস ইত্যাদি। এই ধরনের এক্সারসাইজ নিয়মিত করলে অনেকটাই ক্যালোরি বার্ন হয়। তাই ডায়াবেটিকদের ওয়ার্ক আউট রুটিনে এই ধরনের পেশির এক্সারসাইজ রাখা উচিত।
পাইলট কোর স্ট্রেনথে বাড়াতে সাহায্য করে। পাইলেট ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। নিয়মিত যোগাসন করলে ঘুম ভালো হয়। মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতির জন্যও যোগাসন খুব ভালো কাজ করে। একই সঙ্গে ব্লাড সুগার এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও যোগাসন খুবই সাহায্য করে। সেই সঙ্গে বছরে অন্তত একবার লিপিড প্রোফাইল ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও পরীক্ষা করে দেখতে হবে।