Hindu Marriage – শীত মানেই বিয়ের ধুম! তবে পৌষমাসে বিবাহ হিন্দুমতে অশুভ, রইল নিয়মের পিছনের সত্যি

ডিসেম্বর মানেই বিয়ের মরসুম। তবে বিবাহের ক্ষেত্রে কেবল ইংরাজী মাস দেখলেই হয় না, খেয়াল রাখতে হয় বাংলা বর্ষপঞ্জী সম্পর্কেও। বিবাহ মানেই দুটি মানুষের সাথে সাথে দুটি পরিবারেরও মেলবন্ধন । বিশ্বের সব বিবাহের মধ্যে হিন্দুদের বিবাহের মতন রীতি-নিয়ম অন্য কোনো ধর্মের বিবাহতে দেখা যায় না। হিন্দু রীতিনীতি অনুসারে, বিয়ে মূলত ৮ রকমের হয়ে থাকে। যথা – দৈব বিবাহ, ব্রাহ্ম বিবাহ, আর্য বিবাহ, পৈশাচিক বিবাহ, রাক্ষস বিবাহ, প্রজাপত্য বিবাহ, গান্ধর্ব বিবাহ, এবং আসুরিক বিবাহ। এই আটটি বিবাহের মধ্যে ব্রাহ্ম, আর্য, দৈব, প্রজাপত্য বিয়েতে নানা রকমের মন্ত্র পাঠ করা হয়ে থাকে।
হিন্দু ধর্মমতে, সব থেকে বেশি প্রজাপত্য বিয়েরই প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। এই বিয়েতে বর-কনের পরিবারের গুরুজনেরাই বিয়ের আয়োজন করে থাকেন৷ বংশ বা গোত্র বা প্রথা অনুযায়ী বিভিন্ন বাড়িতে বিবাহের আচার আচরণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ্যণীয়। তবে সমস্ত হিন্দুদের মধ্যেই কেবল বিবাহ বলেই না, এই সংক্রান্ত যে কোনো শুভ কাজই পৌষ মাসে করা হয় না।
পুরাণ মত ও বেনীমাধব শীলের ফুলপঞ্জিকা অনুযায়ী, পৌষমাসে বিবাহ হলে কনে অনাচারী এবং কনের বৈধব্যযোগ থাকে বলে মনে করা হয়৷ আগেকার দিনে বেশিরভাগ মানুষের জীবিকা কৃষিকাজ হওয়ার ফলে দেখা যেত ঐ মাসে সব মানুষই কম-বেশি ব্যস্ত থাকত। ফলে এই মাসে বিয়ের ব্যবস্থা করার মতো সময় পেতেন না অনেক মানুষই৷ চাষিদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে পৌষ মাসে ধান ও নানা ধরনের ফসল উঠত৷ এই ধান কাটা এবং তা ঝাড়াই বাছাই করে সারা বছরের জন্য সঞ্চয় করে রাখার কাজে ব্যস্ত থাকতেন তাঁরা। কেবল চাষি বলেই, ধান সঞ্চয়, বিক্রয় ইত্যাদিতে ব্যস্ত থাকতেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষেরাও। তাই সমাজের অধিপতি শ্রেণী এই মাসে বিবাহ প্রায় নিষিদ্ধ করেছিলেন এবং সেই প্রথাই বহুকাল ধরে চলে আসছে।
আরও পড়ুনঃ প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে জাতীয় পুরস্কার লাভ, গ্রামের দর্জি আজ ফ্যাশন ডিজাইনার
পুরাণ শাস্ত্র মতে, পৌষ ছাড়া চৈত্র মাসে হিন্দুদের বিবাহ অশুভ বলে মানা হয়। পঞ্জিকা অনুযায়ী, চৈত্র মাসে বিয়ে হলে কন্যা মদনোন্মক্তা হয়। তাই বলা হয় হিন্দু বাঙালী বিয়ের ক্ষেত্রে চৈত্র ও পৌষ মাস বাদে বাকি ১০ মাসই শুভ। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এও শোনা যায়, মেয়ের জন্মমাসেও বিবাহ না দেওয়াই শুভ। কারণ পুরাণ কাব্য অনুযায়ী, জনমদুখিনী সীতারও বিবাহ হয়েছিল তার জন্মমাসেই, তাই সেই অনুযায়ী কনেও সীতার মতনই ‘জনমদুখিনী’ হতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২০ শে ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পৌষমাস।