Jalpaiguri Suicide case : বোর্ডের অঙ্ক মিললেও জীবনের অঙ্ক মিলল না সোমনাথের, ‘মা আই কুইট’ লিখে আত্মঘাতী কিশোর

ক্রমেই বাড়ছে সুইসাইড রেট। ভারতে সুইসাইডের প্রবণতা বাড়ার সাথেই বাড়ছে মানসিক অবসাদ। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিদিন ভারতে ৪১৮ জন আত্মহত্যা করে( Jalpaiguri suicide case )। যা খুবই মর্মান্তিক এবং বেদনাদায়ক।এরকমই ঘটনা ঘটলো আবারও। শিলিগুড়িতে আবারও আত্মঘাতী এক পড়ুয়া।
ঘরের অবস্থা অগোছালো। বিছানার উপরে ছড়িয়ে পরে রয়েছে বই, খাতা। দেওয়ালে একটি সাদা বোর্ড হেলান দেওয়া। বোর্ডের নিচেই রাখা একটা পেঁচানো হেড ফোন। বোর্ডে একটি অঙ্ক সঠিক পদ্ধতিতে কষা। উত্তর সঠিক। কিন্তু তার নিচেই কিছু শব্দ লেখা যা দেখলে মাথায় বজ্রাঘাত খেলে যাবে। বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা ‘মা আই কুইট’ সাথে নিচে আঁকা একটা স্মাইলি ইমোজি। তার সঙ্গে সময়ও লেখা দুপুর আড়াইটে। সাথে ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া এক নিথর দেহ।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল সোমনাথ সাহা। শিলিগুড়ির জ্যোতিনগরের বাসিন্দা। শিলিগুড়ি বয়েজ স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র ছিল সে। তার আপন জনেরা জানায় সোমনাথ ছিল অঙ্ক পাগল। পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবরা জানায় সব সময় অঙ্ক এবং পড়াশোনা নিয়েই মশগুল থাকতো সে। সোমনাথের অনেক স্বপ্ন ও ইচ্ছা ছিল। সে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়ে অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে এগনোর স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু অভিশপ্ত মঙ্গলবারের দুপুর পর তার জীবন সহ তার পরিবারের জীবন বদলে যায় একটি পদক্ষেপে।
সোমনাথের বাবা সুবীর সাহা জানিয়েছেন, সোমনাথ মঙ্গলবার সকাল থেকে আর পাঁচটা দিনের মতো খুব স্বাভাবিক ভাবেই ছিল। কোনও রকম অস্বাভাবিক আচরণ ধরা পড়েনি সোমনাথের মধ্যে। দুপুরে বাবা-মার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করে নিজের ঘরে চলে যায় সে। পড়াশোনা করছিল নিজের মতন। বিকেলের দিকে সোমনাথের ঠাকুরমা নিজের নাতির ঘরে ঢুকতেই দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে সোমনাথ। এরপর ঠাকুরমার চিৎকার চোঁচামেচিতে সোমনাথের বাবা-মা ছুটে আসেন। কিন্তু তত ক্ষণে সব কিছুই শেষ। একটা প্রাণ শেষ।
আত্মহত্যা করার আগে সাদা বোর্ডে একটা অঙ্কও কষে গিয়েছিল সোমনাথ। তার ঘরে বিছানার উপর রাখা সাদা রঙের বোর্ডের নিচে সেই অঙ্কের নীচেই নিজের মাকে উদ্দেশ করে লেখা— ‘মা আই কুইট।’ একটা স্মাইলি দেওয়া সাথে উল্লেখ করা সময়। খুব বড় সন্দেহ বাসা বাঁধছে এখানেই। কারণ যে ছেলেটা সকলের সঙ্গে দুপুরে খাওয়াদাওয়া করল, কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েনি আচরণে হঠাৎ এমন চরম অন্ধকারের পথ বেছে নিল কেন সোমনাথ? প্রশ্নও উঠে আসছে বহু এই দুর্ঘটনা শুনে।
সোমনাথের বন্ধুরা জানিয়েছেন, অঙ্ক সোমনাথের খুব প্রিয় বিষয় ছিল। কোনও অঙ্কের সমাধান করতে না পারলে বেশ বিরক্ত প্রকাশ করত। কিন্তু সম্প্রতি তার সমস্ত প্রাইভেট টিউটর ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা সে বলেছিল। তা হলে কি কোনও রকম মানসিক অবসাদ থেকে তার এই মর্মান্তিক পদক্ষেপ? এখনও ধোঁয়াশা। বোর্ডে কষা অঙ্কের সমাধান সঠিক মিললেও জীবনের অঙ্ক টা ভুলই থেকে গেল। এর আসল কারণ খুঁজতে নেমেছে সোমনাথের পরিবার সহ পুলিশ।
আরও পড়ুন : Chief Minister Mamata Banerjee : আর্জেন্ট মিটিং! সকলকে ডাক মমতার, বৈঠকে মূখ্যমন্ত্রী